অণুগল্প – বোহেমিয়ান

অণুগল্প - বোহেমিয়ান

তারেকুর রহমান

বাহিরে একটু তাকিয়ে দেখ একটা ল্যাম্পপোস্ট ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। অথচ পৃথিবী ঘুমিয়ে, চারদিকে নিস্তব্ধতা। কিন্তু ঐ ল্যাম্পপোস্টটার দাঁড়িয়ে থাকায় একটুও ক্লান্তি নেই। আমি ও জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছি। রাত আমার খুব ভাল লাগে। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে আমি তখন আকাশের তারা গুনি। আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটাকে দেখে খুব হিংসা হয়। মনে হয় এই তারাটিই তুমি। হিংসা কেন হয় জানো? তোমার চাঁদমুখ খানি শুধু আমিই দেখেছি। অথচ এখন এই রাতে জেগে থাকা সবাই দেখবে।আকাশের পানে তাকিয়ে থেকে তোমাকে দেখে পুলকিত হবে অনেকেই। তা কিভাবে আমি মেনে নেব?
অনেক ভাল আছো তাই না?
প্লিজ একটু জানালার পাশে এসে দাঁড়াওনা। হান্সাহেনা ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসছে। এই মোহনিয় ঘ্রাণ তোমাতে মিশে একাকার হয়ে যাবে। তোমার ফুলের বাগান থেকে একটা লাল গোলাপ নিয়ে মাথায় গুঁজে দিও। লাল গোলাপ তোমার খুব প্রিয়। পৃথিবীতে যা কিছু প্রিয় তার কদর করতে ভুলোনা। না হয় একদিন সেও হারিয়ে যাবে। যেমনি ভাবে তুমি হারিয়ে গেছো আমার জীবন থেকে।
এতদিন পর কেন তোমায় মনে পড়লো জানিনা। একলা আমিতো সে বহুকাল ধরেই দাঁড়িয়ে আছি। ভাবছো তোমায় অনেক মিস করি। আসলে তা নয়।এখন আর কাউকে মিস করিনা। কেন করবো বলো? তুমিতো ঐ রাতের তারায় মিশে আছো,হান্সাহেনার সৌরভে তোমায় খুঁজে পাই। এসব দেখতে দেখতে রাত কাটিয়ে দিই। হয়তও রাত কেটে ভোর হবে কিন্তু ভোর হলেতো আর তারা দেখতে পারবোনা।
এই বোহেমিয়ান জীবনকে ভালোবেসে ফেলেছি। তোমাকে যখন হারিয়ে ফেলি তখন নিজেকে নিজেই চিনতে পারছিলাম না। প্রিয় হারানোর বেদনা এত কঠিন তা বুঝা মুশকিল ছিলো।
সেই চেনা পরিবেশ কেমন যেন অচেনা লাগলো। গলির মোড়ের চা দোকানটা দেখলে বুকের ভেতর হাহাকার করে উঠতো। এখানে বসে তুমি আর আমি চা খেয়েছি,জীবনের গল্পের অদ্ভুত এক মোহে জড়িয়ে পড়েছি।
পার্কের চেয়ার গুলো আমাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে। অথচ আমাদের সম্পর্কে কত আগেই ভাটা পড়ে গেছে। মনে আছে আমার হাত ধরে বলেছিলে মৃত্যু ছাড়া কোনদিন এ হাত ছেড়ে যাবেনা? যন্ত্রণাটুকু আমাকে দিয়ে তুমি সুখের তরী বেয়ে যাচ্ছো। আমরা বসে বসে কত শত স্বপ্ন দেখতাম। আমার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে তুমি দিব্যি স্বপ্ন দেখছো। কি অদ্ভুত এক সমীকরণে দাঁড়িয়ে আছি। এক দিকে বিচ্ছেদের জ্বালা আর অন্যদিকে সুখের সাগরে কেউ হাবুডুবু খাচ্ছে। এটাই কি সুখ? সত্যিই কি সুখী হতে পেরেছো? প্রশ্ন রেখে গেলাম।
অনেক ভাল থেকো। তারা হয়েই থেকো আমার মনের আকাশে। কল্পনায় এসে ঘোর ভেঙ্গে দিও।

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
মেয়েদের হিজাব/বোরকা পরা সুন্দর প্রোফাইল পিক ২০২৪

মেয়েদের হিজাব/বোরকা পরা সুন্দর প্রোফাইল পিক ২০২৪

প্রায়শই অনেকে নিজের ছবি ফেসবুকে আপলোড দিতে দ্বিধা বোধ করেন। বিশেষ করা যারা মুসলিম নারী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে নিজের মুখমন্ডলের ছবি প্রকাশ না করেও কিন্তু ...
জেগে ওঠা

জেগে ওঠা

নন্দিতা দাস  চৌধুরী জীবন তো আর কিছু নয় জীবন্ত  উৎসব, চেতনার  বীজ অঙ্কুরিত হয়ে বৃক্ষ ডালপালা ছড়ানো আঁকা বাঁকা পথ, পথটাতো শুধু পথ নয় লক্ষ্যে ...
কবিতা- খোয়াই  I সাপ্তাহিক স্রোত-১০

কবিতা- খোয়াই  I সাপ্তাহিক স্রোত-১০

 I ইন্দ্রাণী পাল তোমারো কি নেই কোনো গোপন গভীর ক্ষত প্রতীক্ষার রাত্রি হয়নি কি স্থির ব্যথার  আড়ালেতে ? চরাচর তবু ঘিরেছে জ্যোৎস্নায়; রাঙা ধানক্ষেত তোমার ...
আশার বাতিঘর দেশরত্ন | কবিতা | মেহেদী হাসান

আশার বাতিঘর দেশরত্ন | কবিতা | মেহেদী হাসান

 I মেহেদী হাসান   কিশোরী বয়স, কতোরকম স্বপ্ন ডানা মেলে চোখের আকাশে। একটা ঈদ; নতুন শাড়ি, চুড়ি রঙিন ফিতা। সাবলীল সহজ কিছু চাওয়া-পাওয়া। সব চাওয়াতে ...
প্রাক্তন

প্রাক্তন

প্রেমের কবিতা – তাসফীর ইসলাম (ইমরান)   বসন্তের এক পড়ন্ত বিকেলে ঘোর লাগা এক বাস্তব প্রতিক্ষণে আজ থেকে বেশ কয়েক বছর পর যখন হবে- আমাদের ...
মৃধা আলাউদ্দিনের বই : সামনের শীতে মানুষ রৌদ্র হবে

মৃধা আলাউদ্দিনের বই : সামনের শীতে মানুষ রৌদ্র হবে

আল হাফিজ হাজার বছরের বাংলা কবিতার ক্রমবিকাশময় ইতিহাসের দিকে তাকালে বেশ কটি বাঁক বদলের চিত্র খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায়। নদীর গতিধারার মতোই যা সতত ...