রাহাত আহম্মেদ
বিকেল বেলা ছাদে বসে পাখিদের ঘরে ফিরা দেখতে বড্ড বেশি ভালো লাগে।
ভালো লাগে কিচিরমিচির শব্দ
আরো বেশি ভালো লাগে তাদের সারিবদ্ধভাবে ঘরে ফিরা।
যখন আমি আনমনে বসে উপন্যাস লিখতেছিলাম,
তখন কিছু একটা নাড়া দিচ্ছিলো আমার মনে,
খুব দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করছিলো
আমাদের ছাদের পাশে আবার একটি
বড় আম গাছে আছে।
গাছটির প্রথম ডালটিতে বসে ছিলো একটি পাখি।
আমি আমার মতো করে লিখতেছিলাম
আর কিছুক্ষন পর পর পাখিটির লক্ষ্য করছিলাম।
দেখছিলাম আসলে পাখিটির কান্ড কারখানা।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো,
পাখিটি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে।
আমিও দুষ্টমির ছলে পাখিটির দিকে একটি ছোট্ট পাথর ছুড়ে মারলাম।
অবাক কান্ড পাখিটি ভয় পেয়ে উড়ে না গিয়ে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে সেই যে তাকিয়ে আছে সে তাকিয়েই আছে।
হয়তো আর বাকি দশটা পাখির মতো এই পাখিটি ছিলো না,
হয়তো পাখিটির কোনো উদ্দেশ্য ছিলো।
কিন্তু কি সেটা?
আপনারা কি কেও কিছু বুঝতে পেরেছেন?
আসলে কিছুক্ষন পর কি হতে যাচ্ছে?
তারপর কি হলো?
তারপর?
আমি আবার লেখায় মনোযোগি দিলাম
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম হয়তো
আমার কাণ্ডকারখানা তার ভালো লাগতেছিলো, তাই সে তার জায়গা থেকে এক চুল পরিমান নড়ে নি।
কিন্তু কথাটা কি এটা নাকি উদ্দেশ্য টা অন্য কিছু।
তাহলে উদ্দেশ্য টা কি?
আমি আবার লেখায় মনযোগ দিলাম। কেন যানি আমার কলম চলছিলো না।
হাত ঘুরাচ্ছি কিন্তু কলমের মাধ্যমে আমার ভাষা টা কিছুতেই প্রকাশ পাচ্ছিলো না।
এভাবে চলতে থাকলো কিছুক্ষন।
তার কিছুক্ষন পর হঠাৎ করেই আমার ডায়রির পৃষ্টায় কিছু একটা পড়লো তার
অনুভব টা পেলাম।
কিন্তু কি ছিলো সেটা?
আমি নিজেও বুঝতে পারলাম না।
এতোক্ষনে বুঝতে পারলাম সেটা ছোট্ট একটা কাগজ ছিলো।
হয়তো কিছুটা চিরকুট এর মতো
কিছুটা খালি পৃষ্টার মতোন,
আবার কিছুটা নোংরা কাগজের মতোন
সেটা কি ছিলো আমার জানার আগ্রহটা আরো বেরেই চলছিলো।
সেই ছোট্ট কাগজটি হাতে তুলে নিলাম
কিন্তু ভাববার বিষয় হলো কাগজটা আসলো কোথায় থেকে
জানার জন্য আমি ব্যাকুল হয়ে পড়লাম।
এতোটুকু বুঝতে পেরেছিলাম।
কাগজটা উপর থেকে পড়েছে।
আমার উপর তো একটা নীল আকাশ ছাড়া কিছুই ছিলো না।
তাহলে দিলো কে?
ব্যাপার টা আরো ভালো করে বুঝার জন্য
উপরের দিকে তাকালাম একটি পাখি আমার মাথার ঠিক উপর দিয়ে তার পাখনা গুলো মেলতে মেলত্র সেই দূর আকাশের নীলিমায় হাড়িয়ে গেলো।
সেটা ছিলো একদম মূহুর্তের মধ্যে।
আমি আম গাছটার ডালের দিকে খেয়াল করলাম, লক্ষ্য করলাম এখানের পাখিটি নেই হঠাৎ করেই উধাও ।
বুঝতে আর দেরি হলো না এটা সেই পাখি ছিলো
যার সাথে এতোক্ষন আমি দুষ্টমি করছিলাম।
তাহলে কি পাখিটির? মুখ্য উদ্দেশ্য এটাই ছিলো?
যদি পাখিরা মানুষের মনের ভাষা বুঝতো তার সাথে কিছুক্ষন সময় পার করতাম।
তারপর আপনি সেই কাগজটি খুলে দেখলেন?
শুনবেন কি লিখা ছিলো তাতে?
হ্যা অবশ্যই কেন না? বলুন শুনি কি ছিলো তাতে।
তাহলে শুনুন।
আমি কাগজটি হাতে নিয়ে একটি একট পার্ট করে খুললাম। কাগজটা খুব বুদ্ধিমান কেও পাঠিয়েছে হয়তো।
-তা আপনি বুঝলেন কিভাবে?
-কাগজটি এমন ভাবে প্যাঁচানো ছিলো যা আমার মূল জায়গায় যেতে ১ মিনিট লেগেছিলো।
-আচ্ছা তারপর বলুন কি হলো?
প্রিয়,
কেমন আছেন? জানি খুব ভালো আছেন।
হয়তো ভালো নাও থাকতে পারেন। তবে ভালো থাকার চেষ্টা আপনি করেন। আপনি শুধু নিজের ভালো থাকা নয় অন্যর ভালোথাকা টাকেও গ্রাহ্যতা দেন। খুব ভালো লাগে এটা আমার।
ভালো থাকবেন।
ইতি অজানা কোনো এক প্রেয়সী
-শুধু এতোটুকুই?
-হ্যা আর কিছু লিখা ছিলো না।তবে আমি চিঠিটার রহস্য খুজার অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পাইনি।
-তো এর পরে আর কোনো চিঠি বা চিরকুট আসেনি?
– আপনার কি মনে হয়?
-আমার মনে হচ্ছে কি জানেন?
-কি বলুন না দেখি আপনার কেমন বোধ মনে হচ্ছে।
-হয়তো মেয়েটি আপনাকে খোজার চেষ্টা করছিলো। বা আবারো কোনো চিঠি পাঠিয়েছে । কিন্তু আপনি পরের চিঠিগুলা পাননি।
-একদম ঠিক ধরছেন। এর পরে আমি আর কোনো চিঠি পাইনি।
তবে কি আর কোনো চিঠি আসবে না আমার ঠিকানায়? নাকি ডাকঘরের পোস্টম্যান আমার ঠিকানা ভুলে গেছে?
এখানের মধ্যে কোনটা সঠিক।
তবে না হয় আজকে এখানে শেষ হোক।অন্য কোনো ঠিকানায় নিয়ে আসবো আমার পরের গল্পটি।