শাহান আলম
১.
এই মোহময় দিনে—
নীরবে তাকিয়ে দেখি; তোমার ঘুমন্ত মুখ।
দেখি বিরহমেদুর বুকে সমুদ্রসফেনসহ ঢেউ ওঠে!
দেখি ঢেউ ওঠে—তোমার কোমল ওষ্ঠে; যেন আসমানে শাদা মেঘেদের বিশাল তোরঙ্গ!
আমার স্রেফ মন্তব্যহীন দেখতে মন চায়—;
এই মোহময় দিনে— তোমার চুলের বিভূষণ; অদ্যকার অন্ধকার রাজনীতির মতন— কেবলই অনবদ্যময় হয়ে উড়তেছে!
এই মেরুন কালার বিকেলের কুয়াশাবৃত আভা; কেবলই তোমার দিকে মোহানুভব করায়।
অচেনার মতন হাঁটতে থাকি তোমাদের চার্মাত্রিক শিকড়হীন দুনিয়ায়।
এই মোহময় দিনে—যে দিকে তাকাই দেখি;
মুসাফিরবেশি আমারে বিদায় সম্ভাষণ জানাইতে;
তোমাদের চার্মাত্রিকে মৃত্যুর মিছিল ওঠে!
২.
বহুদিন স্বপ্নে দেখি—সোনালি ডানার রাজহাঁস
অজান্তেই উড়ে যায় আমার ঘুমের অগোচরে
যেইভাবে কৃষকেরা ফসলের মাঝে করে বাস
সরব ধানের হাওয়া উড়ে আসে নীরব কবরে!
বহুদূর হাওড়ের প্রসারিত শূণ্যতার দিকে—
আজকাল কেউ আর তাকায় না অজানার ভয়
নরম ফিঙের পাল অদূরে গেলেই যেন ফিঁকে
আমার স্বপ্নের হাঁস লোকালয়ে ভিজে মোহময়!
বহুদিন স্বপ্নে দেখি— মৃত্যু প্রেমের চেয়ে সুন্দর
অথবা দাফন যেনো পৃথিবীর ঠিক বিপরীত
মনে হয় যেনো প্রেম চন্দ্রদেশের ভেজা হাঙর
আমি দেখি প্রিয় হাঁস বুকে নিয়ে ঘুরে হিমশীত
মানুষ চোখের ঘুম সঁপে দেয় তার প্রিয় ফুলে
স্বর্ণাহাঁস উড়ে যায় আমার বিরহ সব ভুলে!
৩.
খরগোশের মতো চঞ্চল বিকেলে—
পা’য়ে মাড়িয়ে যাচ্ছি সঞ্চারিত সবুজাভ তুচ্ছ ঘাস।
তারপর বৃষ্টি!
লেকের নীরব জলে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে;
আর পানিতে অজস্র ঢেউয়ের সার্কেল—ক্রমেই বড় হতে হতে তোমার মতোই মিলিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ বজ্রপাতে লেবুর পাতা দুলতে থাকে—; ঘুমন্ত কাক জাগে।
তোমার হারিয়ে যাওয়া দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে…….!
৪.
দেহ থেকে খসে পড়ে অজস্র মোহময় উত্তাপ
তোমার সরস ঠোঁট— ঘ্রাণহীন গ্লিসারিন যেন
আঠালো মাটির মতো এ হৃদয়ে জমে আছে পাপ
ছায়ার আঁধারগুলো রোদ মেখে ভিজতেছে কেন?
উড়ো চুলে ঢেকে গেছে— বিভূষিত ময়ূরের শোভা
মেঘলা দিনের মতো; আধো আলো–আধো কালো পথ
দিয়েছি হৃদয় আমি—; চেয়েছিলে তুমি লাল জবা
জীবনের রাতগুলো ফুটে আছে—যেন বা শরৎ!
প্রেমিকা জলের মতো—প্রেমিক কিনারাহীন নদী
হামেশা থাকে না জল, মিশে যায় কূলহীন স্রোতে
হয়তো থাকতে পারে—; প্রেমিক পুকুর হয় যদি
বিরহমেদুর বাজে গোলাকার অন্ধকার নথে।
আমাদের ভোরগুলো ফুটতেছে শাদা প্রেমাকাশে
তুমি যদি রোদ হও—বসে র’বো আমি ভেজা ঘাসে!
সিলেট, বাংলাদেশ ।