তিনটি প্রেমময় কবিতা

তিনটি প্রেমময় কবিতা

জয়ন্ত মল্লিক

অরণ্যের রোদন

আমার সমস্ত কথারা মরে গেলে-

বাক্ জমিনে একটা গাছ পুঁতে দিও।

কন্ঠ ফুঁড়ে শাখা-প্রশাখা মেলে দেবে আকাশের আহবানে,,

তোমাদের শাণিত করাতের পোঁচে-

বিক্ষত হবে তার দেহকান্ড,

করাতের দাঁত গড়িয়ে সাদা রক্তের স্খলন;

দা’য়ের অনবরত কোপে খন্ডিত হবে তার সমুদয় “অরণ্য রোদন।”

বাঁচার আকুলতায় সে যখন প্রতিবাদী হবে-

সেই প্রতিবাদের ভাষায়-

আমার মৃত কথারা পূর্ণজন্ম পাবে।

 

নীল পাখি

রোজই স্বপ্নে একটা নীল পাখি-

ডেকে যায় মোহনীয় ঠোটের আবেদনময়ী সুরে;

পিপাসিত মনো দেওয়ালের কার্নিশ ধরে।

 

তাকে অনুসরন করি,

ধরতে যাই।পারিনা।

সে উড়ে যায় সহজাত স্বভাবে

আমি ছুটি…

আবার উড়ে যায়,

আবার ছুটি উর্দ্ধশ্বাসে…

 

ক্লান্তিকর সে ছুট চলে সমগ্র স্বপ্ন জুড়ে।

ভোর আসে নতুন ব্যস্ততায়-

অবসাদ মেখে ঘরে ফেরে দেহ।

 

নীল পাখি ফিরে যায় বিজয়ের উল্লাসে।

আর

চেনা দেওয়ালের হ্যাঙ্গারে ঝুলে থাকে একটা পরাজিত জামা…

 

পাঁজর

এ বুকের পাঁজর–

তোমরা ভেবেছ কংক্রিটের চেয়েও পোক্ত।

বুকের পাঁজর বেয়ে তাই প্রতিদিন

তোমরা তরতরিয়ে উঠে যাও উপরে

আকাশের ঠিক কাছে।

তোমাদের পদস্পর্শে ধন্য হই আমরা।

চুর্ণ করে পাঁজর ক্ষতবিক্ষত করে আমাদের;

তোমরা বিলাসে মেতে থাকো।

আমরা মাটিতে দাড়িয়ে থাকি তখনো।

বুকের পাঁজর বেয়ে রক্ত ঝরে

ভিজে যায় পায়ের তলার মাটি।

শুষ্ক বসুন্ধরা শুষে নেয় রক্ত,মিলিয়ে যায় দাগ।

তবু তোমাদের ফ্লোরে লেগে থাকে দাগ।

তোমরা সবই জানো।

জেনে বুঝেই রঙীন কার্পেটে ঢেকে দিয়ে দাগ

তোমরা মেতো ওঠো এমন নিষিদ্ধ উল্লাসে!

তবে কতদিন আর ঢেকে রাখবে।

একদিন পৃথিবীর কাছে উন্মুক্ত হবে

তোমাদের উত্তাল পদধ্বনি আর ভাঙা পাঁজরের আর্তনাদ।

সেদিন ঝড় উঠবে,রঙীন কার্পেট ছিড়ে যাবে তান্ডবে।

যবনিকা আনবে তোমাদের ঔদ্ধত্য পদধ্বনির।।

 

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
ইচ্ছেগুলো

ইচ্ছেগুলো

আদ্যনাথ ঘোষ ফাগুনকে ডেকেছি বলেই আশি^ন প্রান্তরে এসে উঁকি মারে নিজের দাওয়ায় খেলা আর ভেলার আশায়। আমার উঠোন তলায় জুঁই ফুটেছিল ঠিক, মনে কি পড়ে? ...
"২০ বছর পরে আবার দেখা"

“২০ বছর পরে আবার দেখা”

ফাল্গুনী খান সদ্য কিশোর থেকে যৌবনে পা দিলাম হাজারো রঙে এই পৃথিবী দেখা শুরু করলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা জমে উঠলো চায়ের টঙ্কে দেরি করে ঘরে ...
একটি কলম চাই  | মনিরুজ্জামান অনিক | সাপ্তাহিক স্রোত -১১

একটি কলম চাই | মনিরুজ্জামান অনিক | সাপ্তাহিক স্রোত -১১

| মনিরুজ্জামান অনিক   সেই কলমটা খুঁজতে খুজঁতে আমি ক্লান্ত। ঝিম মেরে বসে আছি জং ধরা জানালার পাশে, কতোকাল যে বসে আছি ঠিক ঠাওর করতে ...
অপেক্ষা

অপেক্ষা

আমিরুল ইসলাম সা’দ সবে মাত্র অ্যালার্ম ঘড়ির টিক টিক আওয়াজে ঘুম ভেঙেছে। কুঁড়েমি ছেড়ে বেলকনিতে এসে দাঁড়াতেই; সকালের মৃদমন্দ হাওয়া- আমার দেহ ও মন দুটোই ...
বেলাশেষে

বেলাশেষে

গৌতম সরকার উল্টোদিকের রিকশাটা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সওয়ারীর চমকে ওঠা দৃষ্টিটা চোখ এড়ালোনা পৃথ্বীশবাবুর। প্রতিবর্তী ক্রিয়ায় একটু ঝুঁকে পিছন ফিরে দেখলেন রিকশাটা দাঁড়িয়ে গেছে। ...
"আমার দেহখান নিও না শ্মশান" কার জন্য লেখা?

“আমার দেহখান নিও না শ্মশান” কার জন্য লেখা?

আশিক মাহমুদ রিয়াদ “এক দুঃস্বপ্নে ফুঁটেছে ভোর বিলীন হয়েছে নির্ঝর নক্ষত্র নিরবে! যে নক্ষত্রকে খুঁজে পাবে না কেউ গানের প্রতিটা ছন্দে!” “Odd Signeture” ব্যান্ডের ভোকালিস্ট/গিটারিস্ট ...