আশিক মাহমুদ রিয়াদ
(গত পর্বের পর থেকে)
গল্পটির প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অফিসে ঢোকার সাথে সাথে বসের রুমে ডাক পড়ে তার। নাহিদা ম্যাম, ভীষণ কাটখোট্টা একজন মানুষ হলেও তার রূপের গাঙের বাণের জলে মুগ্ধতায় তার দিকে কিছুক্ষণ পর পর তাকিয়ে থাকে শাহিন।
‘আপনার গত মাসের রিপোর্টটা ভালো ছিলো, ওয়েল অ্যানালাইসিস। বাট ইউ হ্যাভ টু নো, হাউ ইউ ইপ্রেস ইওর ক্লাইন্ট’, মিষ্টি কন্ঠে ইংরেজীর সাথে সাথে ঠোটের নাচনির নগ্ন নৃত্য তার হৃদয়ে সমুদ্র সাফেন ঢেউয়ের বাণ আনে। নাহিদা ম্যাম অস্মভব কামুক একজন মহিলা, তার স্বামী কি তাকে পুরোপুরি সুখ দিতে পারে? ম্যাম কি সুখি? ম্যাডামের চোখের দিকে চোখ ফেলে শাহিন বলে, ওকে ম্যাম। আই হ্যাভ ইওর ইন্সপিরিশেন আই থিংক আই গ্রো আপ ফাস্ট।’
নাহিদা ম্যাডাম ক্ষাণিক হেসে বলে, ওয়েল। ইউ হ্যাভ টু গো নাও। ভালো মতন কাজ করুন। বেস্ট অফ লাক। শেষ বার নাহিদা ম্যাডামের রুম থেকে বেরোনার আগেতার শরীরের দিকে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেয় শাহিন। নিজের চেয়ারে গিয়ে বসতেই নিজের উথিত পৌরষত্বের প্রতিক যেন বিক্ষোভের আন্দোলনে জাগ্রত হয়ে ওঠে। এ বয়সে এসব কমন ব্যাপার ! অদ্ভুত অকারণে উড়িয়ে দেয়া যায়।
শুক্রবার একটু দেড়িতেই ঘুম ভাঙে শাহিনের। দেড়িতে ঘুম ভাঙার কারণে, ক্ষাণিকটা আফসোস হয় তার। সকালের কাজের মহিলাও আজ আসেনি। অবশ্য এবারের কাজের মহিলাটার ফিগারও বেশ। একবার একজনকে প্রস্তাব দিয়ে ক্ষাণিক বিড়ম্বনায় পড়েছিলো শাহিন। ‘আমার দুটো ছোট ছোট ছেলে মেয়ে আছে, এইসব আমার দ্বারা হইত না ভাইয়া। আফনে বিয়া করেন ভাইয়া। আপনার যৌবনের তাড়না উঠছে।’ এরপর থেকে আর সেই মহিলা আসেনি। বাড়ি ওয়ালার দিকে দেখা হলেই শাহিনের দিকে সে কেমন কৌতুহলী হয়ে তাকাতো, যেন শাহিনকে যতটা ভালোভেবে ঘর ভাড়া দিয়েছিলো ঠিক যেন আশাহুত হলো। শাহিনকে সে এলাকা ছাড়তে হয়েছিলো মাসখানেক বাদেই। একদিন সন্ধ্যে বেলায়, “একটি রিকশা তার সামনে এসে দাঁড়ায়, আমার বউরে কু প্রস্তাব দেস খানকির পুত? এক্কেবারে জায়গায় বেরেক কইরা দিমু।’ রিকশাওয়ালার কথায় ক্ষাণিক আহত হয়ে চারপাশে তাকিয়ে বিব্রত অবস্থায় হাটা শুরু করে। এর মাস খানেক যেতে না যেতেই শাহিনের পৌরষত্ব নাড়া দিয়ে ওঠে!
শুক্রবার সারাদিন মেয়েটিকে ব্যালকনিতে না দেখতে পেয়ে আশাহত হয়ে, সিগারেট ধরিয়ে ফুরফুর করে ধোয়া ছাড়ে শাহিন৷ অদ্ভুত এক সম্মোহন কাজ করে তার শরীরে, ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে চোখ আটকে যায় বিথির প্রফাইল এর দিকে। বিয়ের পরে মেয়েদের শরীরে অদ্ভুত এক পরিবর্তন আসে। ডিভোর্সের পরে বিথির চেহারায় যেন ঠিক সেরকম পরিবর্তন এসেছে। বিথি শাহিনের অফিস কলিগ। দীর্ঘদিন তারা পাশাপাশি ডেস্কে কাজ করেছে। বিয়েরপর বিথি অসম্ভব রকমের নির্যাতন হতো, অফিসে এসে সারাদিন গোমরা মুখে বসে থাকতো। শাহিনের সাথে অবশ্য বিথির খুব ভালো সম্পর্ক হয়েছিলো, সম্পর্ক গড়ায় প্রণয়ে! একদিন রেস্টুরেন্টের বিশেষ টেবিলে তিথিকে কাছে টেনে ঠোটে ঠোট যখন মেলাতে যাবে ঠিক তখনই তিথির হাত চলে যায় শাহিনের উত্থিত দন্ডে,শাহিনের হাত যায় তিথির সুডৌল পাহাড়ে! শাহিন ভীষণ কামুক হয়ে তিথিকে যেই কাছে জড়াতে যাবে ঠিক তখনই ওয়েটার এসে তাদেরকে এ অবস্থায় দেখে বিপরীত দিকে ফিরতেই তার হাতে বেধে একটা গ্লাস ভেঙে যায়। তারা দুজনই চমকিত হয়ে, লজ্জা বোধে কাতর হয়ে যায়৷ তিথিকে তারপর থেকে কখনো কাছে পায়নি শাহিন! বিথি সেদিনের পর থেকে শাহিনকে এড়িয়ে চলে, এখানেই ঘটে এক কামুকতার গল্পের অর্ধাংশের পরিণতি। বিথির ডিভোর্সের পরে, আমেরিকায় চলে গিয়েছে বেশ কদিন হলো৷ বিথির কামুক শরীরের তেজি গন্ধ নাকে ভেসে উঠলেই শাহিনের কামুকতা জেগে ওঠে প্রবলভাবে। তিথির ছবি দেখতে দেখতে পুরোনো দিনের কথা এভাবেই জাবর কেটে নেয় শাহিন। সময় পাড় হয় অবশেষে ব্যালকনিতে আসা মেয়েটিকে দেখতে পায় শাহিন। মেয়েটি অসম্ভব লাস্যময়ী! ফোনে জুম করে বার কয়েক ছবি তুলে নেয় পরে নিজের একান্ত সময়ে দেখবে বলে।
৪.
কথায় আছে নারী, নেশা, তাস তিলে তিলে সর্বনাশ। তবে শুধু নেশা আর তাসকেই সর্বনাশ বাদে নারীকে সর্বনাশ ভাবার কোন উপায় নেই। পুরুষের ভোগ বিলাসের জন্য নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে’, এমনটাই ধারনা শাহিনের। শাহিন বহুবার বহু নারীর কাছে হেরেছে। তবুও সে হাল ছাড়েনি, বিয়ের বয়স পড়ে যাচ্ছে । ঠিক কি কারণে শাহিন বিয়ে করছে না? অদ্ভুত কারণে! এসব কথা ভাবলে তার গা গুলিয়ে আসে, পেটের তলায় অদ্ভুত এক চাপ অনুভব করে সারা শরীর জুড়ে বয় অস্বস্তি।
একবার বাড়িতে ফেরার সময় এক পতিতালয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো তার। অসম্ভব লাস্যময়ী সেই যৌনকর্মীর বয়স ২৫-৩০ এর কাছাকাছি। মেয়েদের জীবনে দুটি সময়ে দেহের ফুল জন্মায়, প্রথমটি বয়সন্ধিতে আর দ্বিতীয়টি যৌবে! এমন কথা হয়ত কখনো কোন মণিঋষি বলেছিলেন। সেই পতিতাপাড়ার মেয়েটির নাম ছিলো লাবণ্য! তার চেহারার যেমন রূপ, সেরকম তার কথাতেও ধার।
‘শুনেন মিয়া ভাই! আফনারা শহরের মানুষ এইখানে আসেন দেহের জ্বালা মিটাইতে। কোন প্যারেশান হওয়ার দরকার নাই। আপনার হাতে সময় আছে, কিন্তু আমার হাতে সময় নাই, আমার দরকার টাকা। হেইডা আসা করি আফনে বুঝবার পারছেন?
শাহিন সারা মাসেরবেতন নিয়ে এসেছে। তার সাথে বোনাসের টাকাও আছে। যৌনতার বিধ্বংসী নেশায় সে ক্ষাণিক ভেবে মাথা নাড়ায়, আমার কোন অসুবিধা নেই। এরপর তারা ঘন্টা প্রতি চুক্তিতে যায়। ঘন্টা প্রতি দু হাজার টাকা। এমন এক খদ্দের পেয়ে লাবণ্যও বেশ আনন্দিত হয়ে বলে,
-আফনে কি এখনই কামে লাইগা পড়বার চান?
-তোমার সাথে ক্ষাণিক গল্প করি, ‘উত্তর দেয় শাহিন।
-আফনে করবার পারেন আমার অসুবিধা নাই।
মেয়েটির পড়নে সাদা স্যালোয়ার কামিজ, উত্থিত যৌবনের অর্ধেকটা ফুটে উঠেছে মেয়েটির বুকে, চোখে কৃত্রিম পাপড়িগুলো তাকে অসম্ভব সুন্দরী করে তুলেছে। আর ঠোটে লাল লিপস্টিকের আর্টে পুরুষের ভেতরের ক্যানভাসের রঙতুলি একটু হলেও নাড়া দিয়ে উঠবে। আধশোয়া অবস্থায় গল্প করার একপর্যায়ে শাহিন মেয়েটির কানের পাশে পড়ে থাকা চুলগুলোকে কানের ফাঁকে গুজে দিতেই মেয়েটি অদ্ভুত এক শব্দ করে লম্বা এক নিশ্বাস নেয়, সেই নিশ্বাসের উত্থান-পতনে তার সারা দেহ………..(চলবে)