হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
একটা রোগা দড়ির ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
ঠিক বিকেলবেলায় একটা ভাঙাচোরা সেতুকে দেখলাম
ছোটবেলার চার লাইনের কবিতা মনে রাখার মতো
স্মরণপথে এলো একটা হাতির মতো বাস
একসময় বাবার হাত ধরে রোজ দেখতাম
একটাও কথা বললাম না অথচ
মুখের ভেতর উঠে আসছিল এমন কিছু বাক্য
যাদের একশ বছর আগে ছাই করে দেওয়া হয়েছে
পাহাড়ের ওপাশে
দূরের এক গ্রাম থেকে ভেসে আসছে মাদলের ডাক
চিনি না, জানি না
তবুও জল পাথর পেরিয়ে কিছু বাক্য উড়ে আসছে
তাদের গ্রামে এখনও লম্ফ, কোথাও কোথাও হ্যারিকেন
অন্ধকারে ঢাকা পড়ে গিয়ে যেসব শব্দ ঘুমিয়ে গেছে
তাদের জাগিয়ে তোলার জন্য একটাই মাত্র পথ
সেতুর জামার নীচে দাঁত বার করা রাস্তায় অগাধ আস্থা
লোহার গান আসছে
শিকল পায়ের ঝনঝনার বিদ্যুৎ
উঠে আসছে একটা মই আর অগণন পায়ের ওড়াউড়ি
এখন মুছে যাওয়া যাবতীয় রঙের যোগফল
একঘরে ছবিঘরের সাদা পাতায়
হাজার হাজার বছরের কাঠকয়লার ঝড়
যার সমগ্র শরীর থেকে ঝরে পড়ছে পিতামহের রক্ত।