কাজী আশিক ইমরান
দেখেনি কেউ অপরাহ্ন,আহ!
কতোদিন থেমে ছিল মৃদু পরিমল।
শান বাঁধানো খোলা ডাস্টবিন আবর্জনা নয়,
লাশের স্তুপ চেয়েছিলো।
ক্রিং ক্রিং হর্নে জেগে উঠা শহরের অলিগলি নিস্তব্ধ হয়ে
ছেড়ে দিয়েছিল সব সখ্যতার আলাপন।
স্যুট টাই বেঁধে কর্ম যুদ্ধে ব্যাগ বহন করা রনবীরের
মোড়ে মোড়ে ভীর করা নিষিদ্ধ ছিলো।
নিষিদ্ধ বাস স্টপে লোকাল বাসের অপেক্ষা।
খাদ্য সন্ধানী হয়ে রাজপথ না ঢেকে
মুখ ঢাকো মাস্কের আড়ালে।
রাস্তা নয়, উঁকি বন্ধ বাড়ির আর্চওয়েতেও।
বিষন্নতা নিয়ে প্রকৃতি হেসেছিল।
জার্নালিস্টের স্থিরচিত্রে এসেছিলো ত্রান সংরক্ষণের কতো অনাবিষ্কৃত প্রক্রিয়া।
অনিয়ন্ত্রিত আধুনিকতার কড়া নড়েছিলো
নিজেকে একটা প্রশ্ন করেছিলো,”কতদূর আমি?”
স্বজনের ছেড়ে দেয়া জীবন্ত লাশ একা বদ্ধ ঘরকে বলেছিল, তুমি কফিন হও আমি আর বেঁচে নেই।
চারদেয়ালে বন্দি হয়ে আহারের জ্বালায় মধ্যবিত্ত দু ফোঁটা অশ্রুজল ফেলে সবার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতো; স্টে এট হোম।
হসপিটাল হতে তাড়া খেয়ে সন্তান কে কোলে নিয়ে স্যাঁতস্যাঁতে ফুটপাতে বসে আর্তনাদ করেছিল এক অসহায় মা।
নিষ্পাপ শিশুর সাথী হয়েছিল এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন, জানা ছিল না কেন মা নেই তার পাশে।
পুরো বসন্ত তার এক বুক জ্বালা নিয়েও মেহগনি আর দেবদারুর ডালে নবপল্লব সাজিয়ে বসে ছিল,কেউ দেখতে আসে নি।
চোখে অশ্রু গড়াতে গড়াতে হঠাৎ হৃদপিন্ডের নিভে যাওয়া ব্যক্তির মৃত্যুর আগে বলে যাওয়া দু চারটা কথা শুনার জন্য কেউ পাশে ছিলোনা।
কোন কাব্যওয়ালা লিখতে লিখতে ভেবেছিল ইহাই হয়তো তার শেষ কবিতা আবার কারো লিখা ছিল বাকি।
প্রিয়জনকে লিখা ছোট্ট চিরকুট কতো আবেগ দিয়ে লিখেছিল কে জানে… পকেটেই রয়ে গেল।
রক্ত- আত্মীয়ের মৃত্যুর খবর শুনে প্রাচীরের আড়ালে কে দেখে কার চিৎকার।
তবু কোটি প্রানের চাওয়া ছিলো ,
অংকুরে থেমে যাওয়া স্বপ্ন গুলোকে একটু সূর্যালোক দাও।
দাও একটু বাঁচার আশ্বাস।
অতঃপর , সবাই মুক্তি পায়।
বুকে বুক মিলিয়েছিল কোন এক উৎসবে;
যদি এখানেই শেষ হতো অনাগত দিনের গল্প।