ছাইলিপি ডেস্ক
“গপ্প মীরের ঠেক” নামটি জুড়ে গিয়েছে বাংলা সাহিত্যের সাথে। রেডিও আরজে ও উপস্থাপক মীর আফসার আলী ‘গপ্প মীরের ঠেক’ নামে একটি গল্প পাঠ সেগমেন্ট চালু করেছেন আগে। এর আগে মীর ছিলেন রেডিও মির্চির সাথে। রেডিও মির্চি থেকে সরে এসে নিজেই শুরু করেছেন গপ্প মীরের ঠেক নামে একটি গল্পপাঠ সেগমেন্ট। সেখানে বাংলা সাহিত্য ও বৈদেশীক সাহিতের বিভিন্ন গল্প পাঠ করেন মীর। মীরের এই গল্প পাঠ প্রোগ্রামে মাঝেমধ্যেই হাজির হন টলিউডের বিভিন্ন অভিনেতা অভিনেত্রী। ‘টালিগঞ্জের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ অনির্বাণ ভট্টচার্য, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী।
বাংলা সাহিত্য এমন এক সরোবর যেখানে যুগের পর যুগ সৃষ্টি হয়েছে দারুণ সব কাব্যকথার। তপ্ত রোদে নদীর স্রোত মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে কখনো নোনাজলের কাব্যকথা, শিউলি ফুলে মোড়ানো প্রেম পঙ্কক্তিতে কিংবা দ্রোহের বিপরীতে শক্ত প্রতিরোধের দেয়াল হয়ে। যুগের পর যুগ কেটে গেলেও বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি হয়েছে অনবদ্য সব লাইন, বাংলা সাহিত্য হয়েছে প্রতিবাদের উত্তপ্ত পঙ্কক্তিমালা। শোসকদের প্রতিরোধে সৃষ্টি হয়েছে বারুদের বিরুদ্ধে ছোঁড়া কবিতার লাইন।
বাংলা সাহিত্যের কিছু মহিয়াসী স্রষ্টা হলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসুদন দত্ত, বিশ্ব-কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সতেন্দ্রনাথ দত্ত, সুকুমার রায়, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি জীবনানন্দ দাশ, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়, আহমেদ ছফা, হুমায়ূন আহমেদ, সুনীলগঙ্গোপাধ্যায়। এই কিংবদন্তীদের নামের তালিকা এতটাই বড় যে তা বলতে গেলে গোটা একটা ভিডিওই শেষ হয়ে যাবে। এই তালিকায় যদি উল্লেখযোগ্য কোন লেখকের নাম বাদ পড়ে থাকে তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
কালের প্রবাহে বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো সাদা থেকে তামাটে হয়ে গেলেও, কিংবদন্তীদের লাইনগুলো এখনো ঘুরে ফিরে একেরপর এক বাসা বাঁধছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। সেই সকল কিংবদন্তীদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
এ বিষয়ে আমাদের ভিডিও দেখুনঃ
একসময় লেখকরা লেখার সময় ব্যবহার করতেন দোয়াত, সকাল কিংবা ভরদুপুর গড়িয়ে দোয়াতের খসখসে আওয়াজের ধুম্রজালে সৃষ্টি হয়েছে অনবদ্য সব লাইন, কবিতা কিংবা গল্পের সম্মোহনের প্রেমে বুঁদ হয়েছে পাঠক সমাজ। দিন গড়িয়েছে, যুগের পর যুগ কেটে হয়েছে শতাব্দী। সেইসব লেখকদের লেখা আজও ঘুরছে ব্যাস্ত শহরের অলিতে গলিতে কিংবা গ্রামীন মেঠোপথে।
কালের পরিক্রমায়, দিন যত গড়াচ্ছে মানুষ হয়ে উঠছে ব্যস্ত। শহুরে জীব কিংবা জৈবিক ব্যস্ততায় ঘেরা সময়ে সাহিত্যমনষ্কা মানুষেরা চায় বইয়ের রাজ্যে বুঁদ হয়ে থাকতে। কিন্তু সংসারের ব্যস্ততায় তার আর সময় কি? জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে তো খালি পেটে সাহিত্য চর্চায় পেট ভরবে না। বরং দরকার আর্থিক জীবনের প্রতিশ্রুতি। সেই জীবনের পিছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ হারিয়েছে তার প্রেম, হারিয়েছে বইয়ের প্রতি তার বদ্ধ সময়। তবে দিন গড়িয়েছে, আধুনিকতা এসে যে শুধু খারাপ হয়েছে এমন না। বরং মানুষ শুনছে বইয়ের পড়ালাইন। শহুরে জ্যাম, কিংবা ক্লান্তির অবসাদে মানুষ কানে হেডফোন গুজে, বালিশের তলায় মোবাইল রেখে শুনছে সেসব বিখ্যাত লাইন। সেই সাথে কন্ঠশিল্পীদের গলায় যেন রিন রিন করে বাজে বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত গল্পের সমাহার।
পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা কেন্দ্রীক পরিচিত মুখ মীর আফসার আলী। তার কদর আছে ওপার বাংলায়। সঞ্চালনা কিংবা অভিনয় অথবা রেডিওর আরজে। মানুষটি সব জায়গায় নিজের পরিশ্রম দিয়েছেন। তবে মীরের এখন ধ্যান জ্ঞ্যান শুধু মাত্র তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পাঠ করা গল্পের প্রতি। গপ্পো মীরের ঠেক নামে গল্প পাঠ সেগমেন্টের চালু করেছেন গত জানুয়ারিতে। এখানে শুধু তিনি একা গল্প পাঠ করছেন না। আনছেন থিয়েটর জগতের মানুষদেরও। অনির্বান ভট্টাচার্য, অপরাজিত আঢ্য, সহ আরও অনেকে। তাই দিন দিন মীর আফসার আলীর প্রচেষ্টা ছড়িয়ে যাচ্ছে মানুষের কাছে। এতে অবশ্য লাভ-ক্ষতি নেই। বরং সারাদিন ব্যস্ততা শেষে বালিশে মাথা গুজে, শুনছে বাংলা সাহিত্যের অনবদ্য সব গল্প।
‘গপ্প মীরের ঠেকের প্রতি ছাইলিপির পক্ষথেকে আমরা জানাই আন্তরিক শুভ কামনা। যারা সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের জন্য দিতে চাই সুসংবাদ। ছাইলিপিতে পাঠাতে পারেন আপনার লেখা দারুণ সব গল্প, কবিতা সহ যেকোন সাহিত্যকর্ম।