জয়ন্ত মল্লিক এর দুটি কবিতা

জয়ন্ত মল্লিক এর দুটি কবিতা

জয়ন্ত মল্লিক

 

১.

অপরাজিতা

নিষিদ্ধতার উল্লাসে মেতে নিষিক্তের অভিলাষে–
নিষ্পাপ ধরিত্রীকে কলঙ্কিত করে;
তার উর্বরা গর্ভে রোপিলি  তোর অনুর্বরা বীজ-
এক অব্যক্ত চাপা যন্ত্রনা সয়ে যাওয়া ধরনীর তলপেটে —
একরাশ অনিচ্ছায় আর ঘৃনায়
সফল অঙ্কুরোদগম হলো তোর অনুর্বরা বীজের।

একদিন এই চারা মহীরূহ হয়ে পৃথিবীর ভার বাড়াবে আর একটা পাপে।
সে পাপ কেবলি তোর, হে পাপী!
ধরনী সেদিনও নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ।

এক বুক ঘৃণায় ধরনী তার উদ্ধত্য আঙুলের ডগায়
যেদিন তোর পাপের হিসাব লিখবে,
এঁকে দিবে তোর জীবনের শেষ সীমায় মৃত্যুর দাগ;
তুই জেনে রাখিস- অপরাজিতা
আমি সেদিনই লিখবো প্রেমের কবিতা।।

 

২.

প্রতিবাদের হলুদ কেতন

পৃথিবীজুড়ে প্রতিবাদের কেতন উড়িয়ে
মঞ্চ কাপাচ্ছে মাইকে তির্যক টিউনে।
যেন সমস্ত অন্যায়ের স্তুপে এখনি অগ্নিসংযোগে ওরা এক কাতারে নামবে।

প্রতিবাদের হলুদ কেতন উড়িয়ে–
অত্যাচারীর বুকে বসিয়ে দেবে ক্ষুরধার খঞ্জর।
তার রক্তে লাল হবে মঞ্চের কার্পেট।

অত্যাচারিত মূর্খেরদল তখনো গিলছে
মেকি স্লোগানের গরল।
এ যেন সাগর মন্থনের অমৃত।
অমৃত গিলে মাতালের ন্যায় সুর মেলাচ্ছে স্লোগানে।

একটা সময়ে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো তির্যক টিউন।
যাদের হাতে প্রতিবাদের কেতন ছিলো;
তাদের হাতে জায়গা করে নিলো দগ্ধ কাঁচি।
গৃহ পরিচারিকার সামান্য কর্মজ্ঞানের অভাবে
একটা গ্লাস ভেঙেছে,সিরামিকের।
উদ্ধত হয়ে এগিয়ে গেলো কাঁচি
গ্লাস ভাঙার শোধ দিলো শরীরে কাঁচির দগ্ধ দাগে।
যন্ত্রনায় কাতর সে দগ্ধ ঘাঁ।

বিয়ারের চকচকে পেয়ালায় ঠোটের ছাপ এঁকে–
ঘাড়ে পশ্চিমা পারফিউম মেখে,
শয্যাসঙ্গীর কোমল উরুদেশে পায়ের অবস্থান।
সুগন্ধী ব্লাউজের নিচে মাথা নত করেছে প্রতিবাদ।

এতক্ষনে মূর্খেরদল ও বাড়ি ফিরে গেছে
পাকস্থলি ভরে নিয়েছে মেকি প্রতিবাদে মন্থিত অমৃত।।
শুধু আমি তখনো নির্বাক বসে আছি
প্রতিবাদের নিমজ্জিত কেতনতলে।

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
ছোটগল্প - শ্যাওড়া গাছের বেদনা

ছোটগল্প – শ্যাওড়া গাছের বেদনা

আশিক মাহমুদ রিয়াদ মধ্যদুপুরে উঠানের শ্যাওলা পড়া গাছটার বাদাম দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চোখে মুখে ঘুমের আবির্ভাব। বার বার হাই তুলতে হচ্ছে। হাত থেকে মাছের গন্ধ ...

নগ্নগন্ধ [পর্ব-০৭]

আশিক মাহমুদ রিয়াদ গত পর্বের পর থেকে। গত পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন। সুদীপা আমি  আর এ কাজ করতে চাই না! বিষন্য গলায় বলে প্রীতি। ...
কলিজা পোড়ার কাঁন্না

কলিজা পোড়ার কাঁন্না

মুহাম্মদ ফারহান ইসলাম নীল শুনেছি আপনার প্রিয় রঙ নীল ৷ হাত খরচের টাকা জমিয়ে একটি নীল রঙের শাড়ি এবং ডজন খানেক নীল রঙের চুড়ি কিনেছি ...
সবার পুজো

সবার পুজো

ক্ষুদিরাম নস্কর সবার পুজো হয় না সমান দুঃখ সুখের মেলা, আসবে পুজো যাবে পুজো হবে কি তার হেলা? কারো কাটে কষ্টে কেবল কারো মুখে হাসি, ...
গল্প - চোর

গল্প – চোর

জোবায়ের রাজু পড়ন্ত দুপুরে নিনার কল দেখে আমি অনেকটা হকচকিয়ে উঠলাম। আমার মনে হল এই কলটা রিসিভ করলেই নিনার বাবার মৃত্যুর সংবাদ পাবো। নিনা হয়তো ...
গল্প - ভাঙা জানালার জার্নাল

গল্প – ভাঙা জানালার জার্নাল

আশিক মাহমুদ রিয়াদ শো শো শব্দ হচ্ছে। এ শব্দের উৎপত্তি বাতাস থেকে। জানলার গ্লাসে ফাঁক দিয়ে বাতাস ঢুকে এ শব্দ তৈরী করছে। মনে হচ্ছে সমুদ্রের ...