ত্রয়ী কবিতা – রাজীব চক্রবর্তী

ত্রয়ী কবিতা - রাজীব চক্রবর্তী

রাজীব চক্রবর্তী

 

এক

নভেম্বর

 

ভাষা বৃক্ষের মতো গলিত ব্যর্থতারা

ঢলে পরে রোজ…. নিয়মিত,

কিভাবে প্রস্থান পথে মানুষের দল

তোমার -আমার কথা

আমাদের চিন্ময় স্বাধীনতা রুটি – জমি –

শান্তির সময় গেয়েছিল

অর্হৎগান…. যেভাবে

গানের কথা, সুর ধরে গেয়ে চলে যায়

বাস কিম্বা ট্রেনের হকার

 

সুর ও দৃশ্যের পটবদলের মতো,

ময়নাতদন্তের পরবর্তী অবাঞ্ছিত শান্তসময়

হাত তুলে পুড়ে যায়….. ক্রমাগত….

ছাঁই….. ওম…. আলো আর

 

আধপোড়া জ্বলন্ত অঙ্গার কিছু

আজো বেঁচে আছে এই

রুগ্নশতবর্ষ পর…..

 

দুই

নিশ্চিন্হ প্রেম ও প্রলয়ের ধাতু চিহ্ন

 

কোথায় রেখেছো তবে উচ্ছিন্ন মস্তক;

প্রাণবায়ু….. বিম্বসম মাথুর প্রত্যাশা?

নরম শরীর বুঝে দার্শনিক মাছি

হাত চিনে নিতে চায়

ফেলপরা জ্যোতিষের মতো

 

আমিও অন্ধ, তবু প্রলয় বীক্ষণ

কীলকঅক্ষরে আঁকা

মনসিজ স্মৃতি,কাঁচপোকা  জ্যোতির্ময়

 

সম আলো ফুঁটে আছে—

এইসব লৌহশৃঙ্খল থেকে জামরঙা

ফটকের পরপারে বহতা

বালির দেশে তবু

 

জেগে ওঠে কাকচক্ষু সজল

হৃদয়..

কৌস্তভ মনির মতো জ্বলে আছে

 

আমাদের জাদুবিশ্বাস;

মৃত্যুহীন অবিনাশী মহৎশিশুর

এই বিস্মিত চোখ

ভোরের তারার সাথে

 

পথ জেনে নেয়,

বুঝে নেয় নারীর বিলাস;

কথা থেকে সদ্যজাত

 

তরুণ প্রশ্রয় উড়ে আসে

চিনে রাখো,

চিনে রাখা ভালো তার সামবেদি

 

মলিন স্তব্ধতা…..

ব্রহ্মবীজে গাঢ় কোনো প্রাণ,

প্রাণের আশ্বাস বালিঘড়ি থেকে

 

স্কন্দকাটা ইশারারা

খুঁজে নেয় পথ

সফেদ প্যাগোডা সম,

 

মানুষের স্ফীত হিঙ্কার তুলে ধরে

মাথা ও শিশ্নরোম

যৌথযাপন থেকে জেগে উঠে

দুই জোড়া চোখ ডুবে যায়

আলোকিত সকালের নিকষ আলোয়….

 

 

আঁধার পর্ব

 

এই খোপ, আঁধার জৌলুস ভেঙে

মেরুদণ্ডের মত নক্ষত্রের দেশে

চলে যাওয়া ঘোরানো লোহার সিঁড়ি বেয়ে

উঠে গেলো সবেমাত্র গন্ধগোকুল…..

 

আমিও আঁধার হাতড়াই —

শূন্যতার ঘাড় চেপে ধরে

হলুদ ব্রথেল থেকে

ঝুরঝুরে মাটি নেব বলে

 

আদিম নখর সানাই…..

সূর্যাস্তের নামে চেনা যায় একমাত্র

এইসব প্রত্নতল্লাট…..

 

ইতিহাস লেখা হয়

শত শত নাম —

মারিচ হৃদয়; মাধুকরী, প্রেতযোনি সেই

কবেকার দ্রিদিম হৃদয়….

 

অতঃপর, মলমাসে দেবীপক্ষে নীরবেই

সময় কাটালে মৃত জ্যোৎস্না নিচে

অবিরাম পুড়ে চলে

যুবতীর চিতা…..

 

 

সোদপুর, 24 পরগনা(উত্তর)- পশ্চিমবঙ্গ,ভারত 

 

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
আদনান সহিদের কবিতা - "শৈত্য 'সত্য' বচন"

আদনান সহিদের কবিতা – “শৈত্য ‘সত্য’ বচন”

 আদনান সহিদ   মাঝরাতে কম্বলের ওম ছুঁড়ে ফেলে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসি হঠাৎ কাঁচা ঘুম জড়ানো বিরক্ত স্বর শোনায় প্রেয়সীর সদ্যবিচ্যুত উষ্ণ আলিঙ্গন, পাগলামির যারপরনাই সীমা ...
খুশির ঈদ এসেছে

খুশির ঈদ এসেছে

সাবিরুল সেখ ত্রিশ দিনের রোজার শেষে খুশির ঈদ এসেছে, ধরার বুকে ফোয়ারার মতো আনন্দে সব হেসে উঠেছে। রমজানের ঐ পরে দেখো সওয়ালের চাঁদ উঁকি দিয়েছে, ...
সুন্দরবনের ভ্রমণ কাহিনী

সুন্দরবনের ভ্রমণ কাহিনী

প্রদীপ দে  সুন্দরবন ঢুকছি টুরিস্ট ব্যুরোর বড় লঞ্চে। দেখতে একটা ছোট জাহাজ। ম্যাংগ্রোভের জঙ্গলের পাশ দিয়ে, উজানে তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছি। একবার ডেকের মাথায় চড়ি তো ...
শুভ জন্মদিন বাবা

শুভ জন্মদিন বাবা

|ফজলে রাব্বী দ্বীন   ‘শুভ জন্মদিন বাবা। দেখো, তোমার জন্য একটি গোলাপ ফুল এনেছি।’ হুইল চেয়ারে বসা অসুস্থ বাবার দিকে এগিয়ে এসে কথাটি বললো সৌরভ। ...
ফাগুন প্রেয়সী

ফাগুন প্রেয়সী

শুভ্র শোভন রায় অর্ক নীল সমুদ্রের সীমাহীন গর্জন পিছে রেখে, প্রবালের বাঁধা পেরিয়ে ডোরাকাটা লালচে বালুচর আর সবুজে মন ফিরে যায় । দ্বীপজুড়ে সারি সারি ...
স্রোতের টানে

স্রোতের টানে

রেবেকা সুলতানা রিতু মাথার উপর খাঁ-খাঁ রোদ্দুর।হঠাৎ মাথার উপর দিয়ে চিল উড়ে যায়।চারিদিকে নিস্তব্ধতা। তীব্র বন্যা আর নদী ভাঙনে মানুষের মুখে-চোখে  তার ছাঁপ বিদ্যমান। বড় বকুল ...