Standard Bangladesh
পদ্মা নদী! বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদী। অ্যামাজন বা ব্রহ্মপুত্রের মতই ভয়ানক এই নদী। পানি প্রবাহের দিক থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অ্যামাজনের পরেই এই নদীর স্থান। পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও খরস্রোতা এই নদীকে শাসন ও এই সেতুর ওপর দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ ছিলো বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন সূত্র ও গণমাধ্যম পর্যালোচনা করে জানা যায়, বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সেতুর তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে পদ্মা সেতু। এটির অন্যতম কারণ খরস্রোতা ও রূপ পরিবর্তণ করা এই নদীতে সেতু নির্মাণ সহজ কোন বিষয় নয়। তবে বাংলাদেশ সরকারের বহুমূখী উদ্যোগ ও চীনের সহায়তায় নির্মাণ করা সেতুটি বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও স্বপ্নের বাস্তব।
ভেঙে গড়েই চলছে পদ্মা নদীর স্রোত। নদীর একপাড় ভাঙে তো আরেকপাড় গড়ে। রাজা রাজবল্লভের কীর্তি পদ্মার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ধ্বংস হয় বলে পদ্মার আরেক নাম কীর্তিনাশা কেউ কেউ পদ্মার এই ভয়ংকর রূপকে সর্বনাশা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সেই পদ্মা নদীতেই আরও একটি সেতু অর্থাৎ দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের জোড় গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার পরে সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু।
দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া রুটে এ সমীক্ষা করা হয়েছে। রাজবাড়ী আর মানিকগঞ্জের মানুষ সহ এই রুটে চলাচলকারী মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মান করা হোক। তাদের দাবি, এই সেতুর ডিজাইন হবে ওয়াই আকৃতির। যা সংযুক্ত করবে রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ এবং পাবনা জেলাকে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মান হলে দূর্ভোগ কমবে এই অঞ্চলে বসবাসকারী আট জেলার মানুষদের।
পাবনা, ঈশ্বরদী, নাটোর, লালপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ইত্যাদি এলাকার মানুষকে তাহলে আর গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ ঘুরে ঢাকা যাতায়াত করতে হবে না। ঢাকা থেকে সংক্ষিপ্ততম রাস্তা আরিচা-নগরবাড়ী হয়ে তারা রাজধানী শহরে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়াও কমবে যমুনা সেতুর ওপর পরিবহনের চাপ।যার ফলে সেতু থাকবে দীর্ঘস্থায়ী।
বতর্মানে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারিত হওয়ায় আরিচা-নগরবাড়ী (ঢালারচর) সেতুর অপরিহার্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদী বাঁচাতে ও ব্যয় খরচ কমাতে পদ্মায় সেতু নয় টানেল নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু কিংবা টানেল নির্মাণ করা হলে রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন গতিশীল হবে এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এক যুগান্তকারী সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে।