সাকিব হোসেন নাঈম
এলাকার দশজন ধনী ব্যক্তির তালিকা করলে দু তিন নাম্বারে আসে পঙ্কু দাদুর নাম। তার প্রকৃত নাম কেউই জানেনা কারণ তার ‘পঙ্কু দাদু’ নামটা চারদিকে ছড়িয়ে যাওয়ার পর তার প্রকৃত নাম জানার ইচ্ছা কারোরই আর হয়নি। নামটার মধ্যে সবাই একটা মজা টের পায়। এলাকার যদি কৃপণ লোকদের তালিকা করা হয় তাহলে পঙ্কু দাদুর প্রথম স্থান কেউ দখল করতে পারবেনা। কিপটেমি করে বেশ পয়সাকড়ি জায়গা-জমি জুটিয়েছেন অল্পসময়ের মধ্যেই। বাজার থেকে এক পোয়া এর অধিক তেল মরিচ কিনতে তাকে কেউ কখনো দেখেনি। বাজার থেকে ফিরে বউয়ের সাথে তুলকালাম বেঁধে যায় ঘরে। সেদিন শুনলাম তার বউ গলা ফাটিয়ে তার গুস্টি উদ্ধার করছে।
– আরে গোলামের ঘরের গোলাম এইটুকু তৈল কি খামু না মাথায় দিমু? আর আলু তো আধা কেজি ও মনে হয় আনো নায় তোর রান্দা তুই কইরা খা মুই পারমু না।
বেচারা বউকে খুব ভয় পায়। একবার তো বউ পিঁড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতটাই ভেঙে দিয়েছিল। এই বয়সে এসেও তিনি স্বামীকে পরিবর্তন করতে পারলেন না এজন্য বেচারীর যত দুঃখ। একবার নোয়াখালী থেকে বড় মেয়ের জামাই বেড়াতে এসেছিল। নিজেই বড় একটা দেশী মোরগ নিয়ে এসেছিল কারণ সে জানে তার শ্বশুর তাকে মুরগির পশমও খাওয়াবে না। জামাইকে দেখেই পঙ্কু দাদুর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। তিনি জিজ্ঞেসই করে বসলেন,
– বাবা থাকবা তো না বেশিদিন জানি, হেয়া.. যাবা কবে?
আসতে না আসতেই এমন প্রশ্ন শুনে ব্যাটা জামাই তো রেগে কয়লা।
-নাহ্ যাইতাম না। দশ-বারো দিন থাকুম। ছুট্টি লইয়াই আইছি।
নাছোড়বান্দা জামাইয়ের এমন উত্তর শুনে তো পঙ্কু দাদুর মাথায় আকাশ ভাঙ্গার উপক্রম। বউয়ের কথায় গেলেন জামাইয়ের জন্য বাজার করতে। ঘন্টাখানেক পর বাজার থেকে ফিরলেন একগাদা কচু নিয়ে। বেচারী বউ তো রেগে আগুন।
– আরে গোলামের ঘরের গোলাম এগুলা কি আনছো? জামাইরে খালি কচু দিয়া কেমনে ভাত খাওয়ামু?
– আরে তুমি তো বোঝোনা, কচুতে একসের ভাইটামিন আর আমাগো জামাইর বোলে ভাইটামিন এর অভাব আছে হুনছি। জামাই দেখলে খুশি অইবে। আর হেয়া ছাড়া মাত্র পঞ্চাশ টাহায় এতগুলা কচু কিনছি, জিতছি না কও?
তার স্ত্রী রাগে ফোসফোস করতে করতে চলে গেলেন রান্নাঘরের দিকে। একটু পরেই শুরু হল আরেক কান্ড। জামাইয়ের নিয়ে আসা মোরগটা উধাও। উঠানের কোনায়ই বাঁধা ছিল অথচ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সবাই মিলে খুঁজছে হন্য হয়ে। জামাইও খুঁজতে বেরিয়েছে। হঠাৎ পঙ্কু দাদু বলে বসলেন,
-আমাগো এলাকায় যেই সুন্দার সুন্দার মুরগি জামাইয়ের মোরগ মনে হয় হেগুলা দেইক্কা নিজেরে সামলাইতে পারে নায় হেইতে হেগুলার পিছে পিছে ভাগছে।
মেয়ে জামাইয়ের সামনে এমন বেয়াক্কেল মার্কা কথা শুনে জামাই লজ্জায় রাগে ঘরে চলে গেল। পরেরদিন বাজার থেকে ফিরতে জামাইয়ের পথ আটকালো পাশের এলাকার কোব্বাত আলী। পঙ্কু দাদুর বড় মেয়েকে বিয়ে করার অনেক চেষ্টা করেছে কোব্বাত। কিন্তু পঙ্কু দাদুর সাথে একদিন বেয়াদবি করায় আলতাবানুর গলায় মালা পড়ানোটা আর কোব্বাতের কপালে জুটল না। কোব্বাত এর সাথে পঙ্কু দাদুর মেয়ে আলতাবানুর প্রেমও নাকি ছিল এমন শোনা যায়। জামাই তো কোব্বতরে একদমই সহ্য করতে পারে না। নিজের বউয়ের প্রেমিককে পৃথিবীর কোন পুরুষই সহ্য করতে পারেনা।
-কিরে শালাবাবু কোব্বাইত্তা, কিছু কইবা ?
-হয় দুলাভাই কমু দেইক্কাইতো খাড়াইছি।
-কি কইবা কইয়া হালাও, আমার তাড়া আছে।
– আরে হোনো, তোমার হউর মানে আমাগো পঙ্কু দাদুর কি টাহা-পয়সা কোনহান দিয়া কম আছে? হেরপরও হের বাজারে যাইয়া মোরগ বেইচ্চা কচু কেনা লাগবে ক্যা। হউরেরে একটু বুঝাইতে পারো না মেয়া?
জামাই এই কথা শুনে তো রেগে এটমবোম হয়ে গেছে। তার আনা মোরগ বিক্রি করেই তাকে কচু দিয়ে ভাত খাইয়েছে ব্যাটা শশুর। সে হনহন করে বাড়ি গিয়ে ব্যাগপত্র গুছিয়ে সেই যে চলে গেল এই পাঁচ\ছয় বছর যাবত আর শ্বশুর বাড়ি আসে না। মোরগের কাহিনী শুনে পঙ্কু দাদুর বউও রেগে বাপের বাড়ি চলে গেল। ফিরল তিন দিন পর।
২.
পঙ্কু দাদু যেমনি রসিক তেমনি রাগী। তাকে ক্ষেপানোর জন্য একটি বাক্যই যথেষ্ট। কেউ যদি শুধু বলতে পারে ‘পঙ্কু দাদু কুক’ ব্যাস, সেদিন এলাকা রণক্ষেত্র। সারাদিন দৌড়ে ধরতে হলেও তাকে ধরে উত্তমমধ্যম না দিয়ে ছাড়বে না। একবার কোব্বাত আলী বাজারের আটচালায় বসে বলেছিল, ‘পঙ্কু দাদু কুক’, ব্যাস লুঙ্গিটা মালকোঁচা মেরে গালি পারতে পারতে সারা বাজার দৌড়েছে কোব্বাতকে ধরার জন্য।
– ওরে হালারপো হালা, কি কইলি তুই মোরে? খাড়া তুই। আইজগো তোর একদিন কি মোর একদিন।
এই বলতে বলতে বাজারের উত্তর পারের খাল সাঁতরে আজিমউদ্দিনদের বাগানের মধ্যে দিয়ে দৌঁড়ে চারা গাছ গুলো সব মাড়িয়ে লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। আজিমুদ্দিনের ছেলে টিলু খাঁ পঙ্কু দাদুকে চারা মাড়ানোর জন্য গালাগাল করলে পঙ্কু দাদুর মেজাজ আরও তুঙ্গে উঠে যায়।পাশের গাছটার ডাল ভেঙে দিল টিলুর মাথায় এক বারী। ওরে বাবা’গো ওরে মা’গো করতে করতে টিলু দৌঁড়ে পালালো। এদিকে কোব্বত ততক্ষণে ঢালী বাড়ির ধানের ক্ষেত পার হয়ে সোজা পশ্চিমদিকে গিয়া উঠছে। পঙ্কু দাদু পাইতরাবাড়ির ভিতর দিয়া শর্টকার্ট রাস্তায় গিয়ে পিছন দিক দিয়ে কোব্বাতকে দিলো দু’চার ঘা বসিয়ে। বেচারার চোখ ফুলে ঢোল। সামনের পাটীর তিনটি দাঁত খসে সোজা মাটিতে। কোব্বাত জায়গায় বেহুশ। এই ঘটনার কারনেই আলতাবানু কোব্বাতের কপাল থেকে গেল।
৩.
সামনে কোরবানির ঈদ। পঙ্কু দাদু কখনও কোরবানি দেন না। এত টাকা খরচা করে কোরবানি দেয়ার কি দরকার। পাশের বাড়ির লাল মিয়া, ফুলবানুর বাপ, ফটকা খাঁ এরা তো কোরবানির গোশত দিয়েই যায়। খামোখা পয়সা খরচার মানেই হয়না। এদিকে মেয়ের জামাইয়েরাও এবার ফন্দি এঁটেছে যে এবার তারা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সবাই মিলে একসাথে শশুরবাড়ি যাবে আর শশুরকে এবার কোরবানি দিতে বাধ্য করবে। যেই ভাবা সেই কাজ।ঈদের তিন দিন আগেই কাউকে কিছু না জানিয়ে সবাই শশুর বাড়ি হাজির। সবাইকে একসাথে দেখে পঙ্কু দাদুর স্ত্রী তো মহা খুশি। কিছুক্ষণ পরেই বাজার থেকে ফিরলেন পঙ্কু দাদু। সবাইকে একসাথে দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষ। হঠাৎ ঠাস করে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলেন মাটিতে। সবাই পানি-টানি মেরে কোনমতে তাকে জাগিয়ে তুলল। নাতিরা নানাকে এতদিন পরে পেয়ে চকলেট খাবে বলে পকেট থেকে টাকা নিয়ে দিল দৌড়। পঙ্কু দাদু লাফ দিয়ে উঠে নাতির পেছনো দৌড়।
-নানা ভাই এদিক আও। কয় টাকা লাগবে তোমার আমি দেতে আছি। মোর হাজার টাহার নোটটা নিও না। শেষমেষ নাতিকে ধরেই ফেললেন আর দুই টাকার নোটটা দিয়ে হাজার টাকার নোটটা নিয়ে নিলেন। টাকা ফিরে পেয়ে পঙ্কু দাদু এমন নিঃশ্বাস ফেললেন যেন জমের কাছ থেকে নিজের জীবন উদ্ধার করেছেন।
রাতে সবাই খাবার দাবার সেরে গল্প করতে বসেছে। পঙ্কু দাদু নাতি নাতনীদের সাথে খেলছেন। মেয়ে জামাইরা শাশুড়িকে শ্বশুরের সাথে আলাপ করতে বলছেন গরু কেনার ব্যাপারে। পঙ্কু দাদুর স্ত্রী গেলেন তার কাছে। গরু কেনার কথা বলতেই তার মুখ চুপসে গেল যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।
-কিইই গরু? কোরবানি আমি দিমু না। একটা গরুর দাম কত জানো? একটা গরুর দাম দিয়া তোমার মত তিনডা বউ বিয়া করা যাইবে। এই কথা আর ভুলেও কবা না।
এবার মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনিরা সবাই মিলে নাস্তানাবুদ করে ফেলল তাকে। বড় মেয়ে বললো, “আব্বা আননে যদি এইবার আঙ্গো কথা না হুনেন তাইলে আই আর আন্নের জামাই জীবনেও এই বাড়িত আইতামনা। এই বলেই সে কাঁদতে শুরু করলো। ছোট জামাই বলে, ” আমরা আম্মারে আমগো লগে ঢাকায় লইয়া যামুগা। তহন আপনে মিয়া থাইকেন আপনের টেয়া লইয়া। সবার কথায় অতিষ্ঠ হয়ে শেষপর্যন্ত রাজি হলেন পঙ্কু দাদু। তিনি এবার কোরবানি দেবেন। এই শুনে তো সবাই মহাখুশি। রান্নাবান্না এমনভাবে চলছে যেন আজই ঈদ। এসব দেখে পঙ্কু দাদুর কলিজা তো ভুনা ভুনা। এ-র চেয়ে পাতিলে তাকে ভাজলেও তার এতে কষ্ট হতনা যতটা ঐ পিয়াজগুলো ভাজার জন্য হচ্ছে। পঙ্কু দাদু বড় জামাইয়ের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করছে, “এ সবকিছু ব্যাটা বড় জামাইয়ের চালাকি। ধুরন্ধরডায় মোরগের প্রতিশোধ গরু দিয়া তোলবে।
৪.
এবছর হাটেও অনেক ধরনের গরু উঠেছে। পঙ্কু দাদু জামাইদের সাথে নিয়ে গেলেন গরুর হাটে। কয়েকটা গরু দেখলেন। দাম শুনে তার পাশে আর এক মুহূর্ত দাঁড়ানোকে তিনি প্রাণনাশের হুমকি স্বরূপ মনে করেন। এদিকে কোব্বাত আলী একটি ষাঁড় গরু এনেছে হাটে। বড় জামাইয়ের সেটা দেখে বেশ পছন্দ হলো। ছোট ভায়েরা কে দেখালে তার পছন্দ হল। শশুরকে ডাকতে গিয়ে দেখেন তিনি একটি বুড়ো গাভী গরুর দাম করছেন। গরুর শরীরে হাড় ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছে না। পঙ্কু দাদু গরুর মালিক আকবরের সাথে কথা বলছেন।
-আকবর গরুডা ভালো হইবেতো?
-কি কন ম্যাভাই! ভালো মানে? এরাম গরু আডে আরেকটা পাইবেন? গরুটা মোর বাজা।বাসুর হয়না হেইতে বেচমু।
-হয় গরুডা আমারও পছন্দ হইছে। তয় দাম কিন্তু যা চাইছো হেয়া দিতে পারমু না। পনের হাজার হইলে নিমু।
-কি পোনারো হাজার? আমহে কি গরু কেনতে আইসেন না দেখতে আইছেন? আমহের গরু কেনা লাগবে না যান মেয়া। আইসে, পোনারো হাজারে গরুর রোমাও পাইবেন না।
শশুরের এই অবস্থা দেখে জামাইরাতো রেগে আগুন। টান দিয়ে নিয়ে গেল পঙ্কু দাদুকে কোব্বাতের গরুর কাছে। গরুটা বেশ বড়োসড়ো। দামও বেশিই হবে ভেবে পঙ্কু দাদু বললেন তার পছন্দ হয়নি। তবুও জামাইদের জোরজবরদস্তিতে কিনতে বাধ্য হলেন গরুটি। পঙ্কু দাদুর পকেট ফাঁকা। মেজাজ একশ এক। গরু নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটছেন আর বলছেন, “আহারে মোর টাহা, আহারে মোর টাহা।
-পঙ্কু দাদু কোরবানির গরু কিনেছে এই দৃশ্য দেখে বাজারে মানুষ তো অবাক। সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছে।
-গরুডা তো জম্মের ভালো হইছে ম্যাভাই। কতটা দিয়া কেনলেন?
পঙ্কু দাদু কাঁদো কাঁদো গলায় দাম বলেন। একটা লোক বললেন, “দাদু গরুতে জেতছেন। কেনার চেয়ে ভালো হইছে।
-ঐ মেয়া কেনার চেয়ে ভালো হইছে মানে কি হা? গরু কি চুরি হইররা আনছি যে কেনার চেয়ে ভালো হইছে কও?
– না হেয়া কই নায়। কইছি যে দামে কেনছেন হেতে দাম হিসাবে গরুতে জেতছেন, এইডাই বুঝাইতে চাইছি।
হাটের শেষ প্রান্তে আসতে আসতে বিশ জনের কাছে গরুর দাম বলতে বলতে ক্লান্ত পঙ্কু দাদু। এমন সময় কয়েকটা ছেলেপুলে কোত্থেকে যেন এসে ‘পঙ্কু দাদু কুক’ বলে দিলো দৌড়।পঙ্কু দাদু গরুর রশি ফেলে লুঙ্গি মালকোঁচা দিয়ে গালি পাড়তে পাড়তে দিলে ওদের পিছনে দৌড়।
“হালার পো হালারা তোগো আইজ খাইছি”, এই বলতে বলতে দৌড়াচ্ছে পঙ্কু দাদু। হঠাৎ সে খোয়াল করল তার পেছনে কি যেন দৌড়াচ্ছে।পিছনে তাকাতেই দেখলো চার পাঁচটা ষাঁড় তার পিছনে ছুটছে। পঙ্কু দাদুতো অবাক, ষাঁড়গুলো তার পিছনে ছুটছে কেন? হঠাৎ সে খেয়াল করল তার গায়ে লাল রঙের পাঞ্জাবি। ছোট জামাই দিয়েছিল কাল রাতে। সেটা পড়েই আজ এসেছিলেন গরুর হাঁটে। তাই ষাঁড়গুলো তার পিছনে ছুটছে। পঙ্কু দাদু ভয়ে একেবারে কাঁপতে কাঁপতে দৌড়াচ্ছে। এত বড় বড় শিং দিয়ে এক গুতা মারলে তার চৌদ্দগুষ্টির নাম ভুলে যাবে সে, আর মরে গেলে কুলখানিতে মেয়ে জামাইরা তার অনেক পয়সাকড়ি খরচা করবে এই ভেবে সে আরো জোরে দৌড়াচ্ছে। হঠাৎ পিছন থেকে একটা ষাঁড় শিংয়ে তুলে পঙ্কু দাদুকে ফেলে দিল ধানক্ষেতে। পঙ্কু দাদুর লুঙ্গির অর্ধেকটা ছিড়ে রয়ে গেল শিংয়ের সাথে সেদিকে খেয়াল না করেই ধানক্ষেত দিয়ে সোজা দিলেন দৌড়। এদিকে লুঙ্গির বাকি অংশও খুলে পড়ে গেল ধানক্ষেতে। পরনে পাঞ্জাবি না থেকে শার্ট থাকলে আজ তার ইজ্জতের বারোটা বেজে যেত। এই ভেবে ছোট জামাই কে ধন্যবাদ দেবে নাকি লাল পাঞ্জাবি দেওয়ায় তার গুষ্টি উদ্ধার করবে এই ভেবে কনফিউসড পঙ্কু দাদু। দৌড়াতে দৌড়াতে আব্বাসদের বাড়ি পর্যন্ত এসে দেখলেন তার পিছনে ষাঁড়গুলো নেই। পঙ্কু দাদু হাঁটুতে হাত দিয়ে হাপাচ্ছে। হঠাৎ আব্বাসদের গোয়ালে বাঁধা গাভীটা দিল ডাক। “ওরে বাবাগো আর জীবনে কুক কইলে খেপমু না, আর লাল পাঞ্জাবিও পরমুনা,” এই বলে পঙ্কু দাদু আবার দিল দৌড়। এক দৌড়ে দক্ষিণের ধানক্ষেতে পেরিয়ে সোজা নদীর ওপার।
সুবিদপুর, নলছিটি, ঝালকাঠি।