পূর্ণবৃত্ত

পূর্ণবৃত্ত

আশিক মাহমুদ রিয়াদ

ঘড়ির শব্দ! সময় তো সময়ের গতিতেই চলবে। সময়কে রোখার সাধ্য স্বয়ং পৃথিবীরও নেই, কারণ সময়কে রুখতে গেলে পৃথিবীকেই যে ধ্বংস হয়ে যেতে হবে, কথাটি শুনে আমাকে পাগল বললেও বলতে পারেন। কিন্তু পৃথিবী যে ঘুরছে, কিংবা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে চাঁদ অথবা ধরুণ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে পৃথিবী। এসব আমাদের কাছে নিছক শুধুই সময়ের গণনা। এসব চাঁদ, সূর্য, পৃথিবীর কথা শুনে আমার কথাগুলো অনর্থক মনে হচ্ছে তাই না? তাহলে চলুন এই ক্ষুদ্র সময়ে আমার জীবন থেকে একটা ছোট্ট চক্কর দিয়ে আসা যাক। [কথাগুলো গল্পের পুরুষ চরিত্রের গম্ভীর গলায়। সেই সাথে ঘড়ির টিক টিক শব্দ।

সিড়ির মাঝামাঝি জায়গায়। দুপুর। চারপাশে পাখপাখালির আওয়াজ, রিক্সার টূং টাং শব্দ

আবির              :ইসস! দিলি তো ছবিটা ফেলে। বজ্জাত মেয়ে জানি কোথাকার।

রূপা                : কী? আমি বজ্জাত? তাহলে তুই..তুই (উত্তেজিত হয়ে)

আবির               : আমি কি?

রূপা                : তুই একটা কা-পু-রু-ষ। (মুখ ভেঙচি দিয়ে)

আবির               : কী? এত বড় কথা বললি?

রূপা                   : হ্যাঁ! বলেছি। কারণ তুই আসলেই একটা রামছাগল।

আবির               : তাহলে তুই…তুই…তুই (বেশি উত্তেজিত হয়ে লাইন শেষ করতে পারে না)

(রূপা হাসে; সেই হাসি ছড়িয়ে পড়ে দেয়াল থেকে দেয়ালে, হাসি থামিয়ে রুপা বলে)…

 

রূপা                  : একটা সত্যিই কথা শুনবি?

(রুপা হাত দিয়ে ইশারায় কানপাততে বলে আবিরকে )

আবির               : কী (কান রূপার মুখের দিকে এগিয়ে রেখে)

রূপা                  : তুই আসলেই একটা রামছাগল

(এই বলে রুপা দৌড়ে ছুটে পালায়। আবারও আবির তার পিছু নেয়)

“রূপা এ বাড়ির চঞ্চল মেয়ে। আবির আর রূপা সমবয়সী। তবে তারা কেউ কারও পরম আত্মীয় না। বছর বিশেক আগে, রূপার বাবা জনাব ইদ্রিস আলী পাটোয়ারী আমার একমাত্র আপন চাচা ইমতিয়াজ হোসেন এর কাছ থেকে এ বাড়ির অর্ধেক ক্রয় করেন। আমার চাচা ইমতিয়াজ হোসেন বাবার ভাষ্যমতে একজন ধেড়েবাজ মানুষ। নাহলে নাকি তিনি পৈত্রিক ভিটা বিক্রি করে বিদেশ পাড়ি জমাতে পারেন না। তবে রূপার বাবা ইদ্রিস আলী চাচা অতীব ভালো মানুষ। কারণ! তিনি আমার চাচার সম্পত্তি অনুযায়ী এই বাড়িটির অর্ধেক কিনে নেওয়ার পরেও বাড়িটিকে ভেঙে নতুন করে তার মতো করে গড়েননি। তাই আমার বাবা জনাব আলম সাহেবের কাছে রূপার বাবা ইদ্রিস সাহেব অতীব উদার মনের মানুষ।”

রান্নাঘর, আবিরের মা রান্না করছেন, হাড়ি থেকে কিছু একটার ধোঁয়া উড়ছে।(দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রূপা বিনয়ের সুরে বললো)

রূপা                    : আন্টি আসব?

আবিরের মা         : ও মা শোনো মেয়ের কথা, আমার কাছে আসতে আবার তোর অনুমতি নেওয়া  লাগে?

রূপা                     : একটু একটু লাগে!

আবিরের মা         : তাহলে বেশি বেশি কেন লাগে না?

রূপা                      : তা তো জানি না!

(আবিরের মা রুপাকে কিছুটা শাসনের গলায় বলে)

আবিরের মা         : তুই এখনো এমন কেন বলতো? বড় হয়েছিস না?

এখনো এরকম বাচ্চাদের মতো করিস যেন এখনো ছোট।

 

(রূপা আবিরের মা’কে আলিঙ্গন করে বলে…)

রূপা                        :      মেয়েরা কি কখনো মায়েদের কাছে বড় হয় বলো? আমি তো   তোমাদের কাছে এখনো ছোট!

আবিরের মা                : শোনো মেয়ের কথা। দু’ দিন পরে যখন বিয়ে হয়ে অন্য  কোথাও চলে যাবি তখন আমি আর তোর মা তোকে ছাড়া থাকবো কিভাবে?

রূপাঃ                      : সে জন্যই তো বলি তোমার গাধা ছেলেটার জন্য সুন্দর দেখে একটা বউ আনো আগেই।

আবিরের মা                : বাড়িতে মেয়ে থাকলে সেই মেয়েকে আগে সৎ পাত্রে

সম্প্রদান করতে হয়। তোর বিয়েটা আগে হোক। তার পরে আবিরকে নিয়ে ভাবা যাবে।

 

রাস্তা। দুপুর। মাঝেমধ্যে দু’একটা রিক্সা/বাইক আসছে-যাচ্ছে।

(আবির রাস্তায় তার বন্ধুর বাইক নিয়ে চালানোর চেষ্টা করছে। সে বাইক চালাতে পারে না। কিন্তু তার বন্ধু রসু তাকে আজ বাইক চালানো শিখিয়েই ছাড়বে। তবে আবির ভয় পাচ্ছে, কোমড় নড়ছে। রসু বিরক্ত হয়ে বললো……….)

রসু                        : আরে ব্যাটা তোর তো কোমড়-ই ঠিক নাই। আগে কোমড়  ঠিক কর। তারপর বাইক চালাবি।  + তুইতো সাইকেল চালাছিস। তাইলে বাইক কেন চালাইতে পারবি না।

(রসু আবিরকে বাইক চালানোর নানা টিপস দিচ্ছে। এরই এক পর্যায়ে ভার্সিটি থেকে বাসায় আসছে রূপা। আবির রূপাকে দেখে ভাব নিতে গিয়ে রসুকে বললো।) রসু নানা পরামর্শ দিচ্ছে। আবির নায়কের মতো রসুকে থামিয়ে দিয়ে বললো,

আবির                     : “ বুঝছি। সামনে থেক সর”

রসু                        : এর মধ্যে বুইঝা ফ্যালাইলি? আরে ব্যাটা বাইক চালানো কি  এতই সহজ?

আবির                     : আবির রাগন্বিত হয়ে বললো, হ বুঝছি। তুই সামনে থাইকা সর।

(এরপর আবির ফুল পিকাপে ক্লাস ধপ করে ছেড়ে দিয়ে আবারও ধরলো। বাইক হেলে দুলে গিয়ে আঘাত করলো রূপার পায়ে। রূপাও পড়ে গেলো,  আবির বাইকের নিচে চিৎপটাং। রসু ছুটে এলো। আগে তুললো, রুপাকে।

রূপা:                      : ঊফফ পা টা মনে হয় ভেঙেই গেল।

আবির                     : বাইকের নিচে কাঁতরাতে কাঁতরাতে। আরে ব্যাটা তুই ওরে

আগে কেন তুললি। আমারে তোল।

রসু                        : রাগন্বিত হয়ে আবিরের ওপর রাগ ঝেড়ে বললো, “লেডিস ফার্স্ট)

ঘরের ভেতরে। রূপা এক পা লম্বা করে আধশোয়া অবস্থায় বিছানায়। পাশেই আবির।

আবির                     : প্লিজ! কাউকে কিছু বলিস না। আমি তো ইচ্ছা করে করিনি।

এই এই কানে ধরেছি। প্লিজ কাউকে বলিস না।

 

(রূপা মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। যেন আকাশে মেঘ জমেছে একটু বাঁদেই বৃষ্টি নামবে। মৃদু বাতাসে তার চুল উড়ছে। আবির আবারও বললো।)

 

আবিরঃ                    : কিরে কাউকে বলবি না তো? বল। আমি না হলে টেনশানে আছি। প্লিজ বল। তুই যদি আম্মাকে সত্যিটা বলে দিস  তাহলে   আম্মা আমার ঠ্যাঙ ভেঙে তোর মতে করে দেবে।

(আবিরের হাসি আসে অজানা কারণে। আবির হাসতে গিয়েও অজানা কারণে হাসে না। চুপ করে মুখ চেপে বসে থাকে। আবির যে ভেতরে ভেতরে অনুশোচনা নয় বরং আনন্দিত সেটি আবিরের মুখ দেখলেই বোঝা যায়। ব্যাপারটি দৃষ্টি এড়ায় না রূপার। আবির চেয়ে দেখে রূপার চোখ থেকে টপটপ করে জল পড়ছে। চোখ ভিজে ছল ছল, সেই জল গাল বেয়ে শুকনো নদীর মতো বয়ে গিয়েছে। এবার ভেতরে ভেতরে অনুশোচনা কাজ করে আবিরের।আবিরের দিকে না তাকিয়ে রূপা বলে)

রূপা                       : আমার পা ভেঙে তুই খুশি হয়েছিস তাই না? (রূপার চোখ জলে ছলছল)

আবির                     : কি বলিস খুশি হব কেন? পাগলের মতো কথা বলছিস কেন?

রূপা                       : হ্যাঁ আমিই তো পাগল। (একটু রাগী হয়ে)। তুই ছোটবেলার সেই জেদ পুষে রেখেছিস। তাই জেদ পুষে আমার পা ভেঙে  দিয়ে এখন ভেতরে ভেতরে অমানুষের মতো হাঁসছিস।

*

(আবির ঘর থেকে বেরোয় মুখ গম্ভীর করে। ছোটবেলার কোন জেদের কথা রূপা বলছে সেটি আর আবিরের অজানা নয়। সে আবারও আপন মনে ভাবতে থাকে সেই ছোটবেলার দিনগুলি।)

“সেবারও রুপাকে কাঁদতে দেখে আমি হেসেছিলাম। বার্ষিক পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলো। আমি ফার্স্ট হলাম আর রুপা সেকেন্ড। সারাপথ ওকে ব্যঙ্গ করতে করতে বাড়িতে এলাম। বাড়িতে ঢুকেই কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,’ফার্স্ট হয়েছিস দেখে মহাভারত শুদ্ধ করে ফেলিসনি বুঝেছিস! এত গর্ব করিস না।দেখিস একদিন তুই ফেল করে কাঁদবি। ‘ এই বলে রুপা ভেঁউ ভেঁউ করে কেঁদে ফেললো। আমি মুখ চেপে হাসতে হাসতে অট্টো হাসিতে ফেটে পড়লাম। আর রুপা ভেউ ভেউ করে কাঁদলো। পরিক্ষার আগে রুপা বেশ অহংকার করে বলেছিলো, সে নাকি পরিক্ষায় ফার্স্ট হবে৷ আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলো। আমিও সেই চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছি। ফার্স্ট হয়েছি। এবার আমার ভাব নেওয়ার পালা। আমার এই ভাব রুপার সামনে বেশিদিন নিতে পারলাম না। একদিন পথ দিয়ে আসার সময় রাস্তায় কলার ছোলায় পা দিয়েই হুড়ুম করে পা পিছলে পড়ে গেলাম। আশেপাশে তাকালাম। কেউ দেখেনি তো! ও মা ও বাবা বলে কাতরাতে কাতরাতে উঠলাম। হঠাৎ অট্টোহাসি ভেসে আসলো কানে। রুপা হাসলো! আমি ভ্যাবলার মতো কোমড়ে হাত দিয়ে বাড়ির দিকে হাটলাম”

“আবির পুরনো কথা স্মরণ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো একটা সিগারেটে টান দিয়ে। রূপাটাও না সেই আগের মতোই রয়ে গিয়েছে। একদম ছোট্টবেলার মতো। নাহলে কেউ সেই রাগের কথা এই বড়বেলা অব্দি মনে রেখেও এমন কাজ করবে? আবির ভেবে পেলো না”

এক মাস পর………….

সেদিনের পর থেকে রূপার সাতে আর সেরকম কথা হয়নি আবিরের। রূপা ভাঙা পা নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে। আবির জানলার পাশ দিয়ে অনুশোচনার দৃষ্টিতে রূপাকে দেখে। আবিরে অবচেতন মন বলতে থাকে, রূপার এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র আবির-ই দায়ী। আবির জানলা দিয়ে রূপাকে দেখছিলো। রূপা হাত বাড়িয়ে বিছানার পাশে থাকা ছোট টেবিল থেকে ওষুধ নিতে গেলে ওষুধ নিচে পড়ে যায়। ভাঙা পা নিয়ে নড়তে পারে না রূপা। একপ্রকার বিরক্তির সুরে কাতরাতে থাকে। আবির এসব দেখে কোন কিছু না বলেই রূপার রুমে ঢুকে পড়ে। হঠাৎ আবিরকে দেখে কিছুটা ভড়কে যায় রূপা। আবির ফ্লোর থেকে ওষুধ উঠিয়ে রূপাকে দিতে যাবে অমনি বকুনির সুরে রূপা বলে……..

রূপা                       : কোন মেয়ের রূমে ঢোকার আগে তার পারমিশন নিতে হয় জানিস না? উহ আসছে উনি, মানবসেবা করতে। সেদিন তো আমাকে প্রায় মেরেই ফেলেছিলো। এখন আবার আসছে দয়া  করে ওষুধ আগিয়ে দিতে। যত্তসব! (আবিরের দু’চোখ এমনিতেই অনুশোচনায় কাঁতর ছিলো। রূপার এমন কথা শুনে যেন আরও মন খারাপ হয়ে গেলো আবিরের।)

আবির                     : য়্যাম! য়্যাম সরি। (এই বলে আবির আর একদন্ডও রূপার রূমে দাড়ালো না। দ্রুত পাঁ চালিয়ে বেড়িয়ে এলো রূপার রূম থেকে।)

 

সেদিনই বিকেলে……..আবির বিষণ্য মুখে সিগারেট টানছিলো ছাদে দাঁড়িয়ে। রূপা স্ট্রেচারে ভর দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে ছাদে এলো। রূপার হাতে এক কাপ চা। সেটি রূপার হাটার কারণে দোলুনিতে দুলছে। রূপা আবিরের দিকে এগিয়ে গেলো। আচমকা রূপাকে দেখে আবির মুখের সিগারেট হাইড করে নিচে ফেলে পা দিয়ে ডলা দিলো। কারণ, ইদানীং আবির রূপাকে কিঞ্চিত ভয় পায়। রূপা আবিরের কাছে গিয়ে চায়ের কাপটা প্যারাপেট ওয়াল/ ছাদের নিরাপত্তার ওয়ালের ওপর রেখে বললো।

রূপা                              : বাব্বাহ! ইদানীং দেখছি সিগারেটও খাওয়া শিখেছিস।

আবির                            : না মানে! (ইতস্তত বোধ করে)

রূপা                              :  ছ্যাঁকা খেয়েছিস নাকি? (রূপা আবিরের দিকে কিঞ্চিত ঝুকে বললো)

আবির                            : না মানে! অ্যাম……আবির কিছু বলার আগেই রূপার অট্টহাসি। এ হাসি যেন থামতেই চায় না। আবির ভ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর রূপা চুলে একপেশে নেড়ে। চায়ের কাপে চুমুক দেয়। এরপর বলে……..

রূপা                              : আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে জানিস?

আবির কেন যেন ধাক্কার মতো খায়। এই ধাক্কা কেন সে খেলো তা নিজেও জানে না। রূপার এমন কথায় যেন অনমনস্ক হয়ে গিয়েছিলো আবির। হৃদয়ের গহীনে কেমন এক অদ্ভুত অনুভূতির সঞ্চার হয়। আবিরের দিক থেকে কোন সাড়া না পেয়ে রূপা বলে..

রূপা                              : কি রে কি হলো?

আবির                            : ও ও অভিনন্দন। তোর বিয়ে। এ তো আনন্দের খবর। মিষ্টি কই? বাজার থেকে মিষ্টি নিয়ে আসি।

রূপা                              : আরে কার সাথে বিয়ে সেটা শুনবি তো?

(এই প্রশ্নে আরও সম্বিত হয় আবির। আবির ভেবে নিয়েছে রূপা তার কথাই বলবে। কেন এই কথা ভেবেছে সেটা আবির নিজেও জানে না।)

আবির                            : কা কার সাথে?

রূপা                              : তোর চাচাতো ভাইয়ের সা্থে।

আবির                            : আমার চাচাতো ভাই? আমার চাচাতো ভাই কোত্থুকে

এলো?

রূপা                              : আরে গাঁধা। তুই কি সিগারেটের সাথে অন্য কিছু খাস নাকি? সকালে না তোর ছোট চাচা এলো। তার একমাত্র ছেলের সাথে আমার বিয়ে।

 

আবির একে তো কয়েকদিন ধরে কি অদ্ভুত কারণে হতবিহ্বল অবস্থায় আছে। তারোপর সে কয়েকদিন ধরেই রসুর সাথে রসুদের বাড়িতে থাকে। বাড়ির দিকে আসে খুব কম। আর বেশিরভাগ সময়েই বাবার চালের দোকানে ব্যস্ত থাকে। তাই আজ সকালে যে তার স্বয়ং ছোট চাচা তাদের বাড়িতে এসেছে সেটি আবির জানে না। কারণ সকাল থেকেই সে চালের দোকানের হিসেব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। শুধু সকাল বেলায় বাবার ফোনে একটি ফোন আসে, বাবা দোকান থেকে কিছু না বলেই বাড়ির দিকে চলে যান। আর আবির বাড়িতে ঢুকেছেও কিছুক্ষণ আগে। তাই তার এ কথা জানার কথা নয়। রূপার কথা শেষ হওয়ার পরে আবির কিছু বলার আগেই, সিড়িঘর দিয়ে ছাদে প্রবেশ করে সুদর্শন এক ছেলে। তার চোখে চশমা, চেহারা নায়কদের মতো। সে ছাদে আসছে দেখে রূপা ফিসফিস করে বলে…

রূপা                              : এই যে এই ছেলে আমার হবু জামাই তোর হবু দুলাভাই।

ছেলেটি তাদের দিকে এগিয়ে এসে আবিরের দিকে হাত বাড়িয়ে বলে.. “হাই আবির আমি আশিক। তোমার কাজিন। ছেলেটি খুব স্মার্টলি কথা বলে” আবিরও আশিকের দিকে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়।

আবির                            : হাই। আশিক।রূপা ওদের দুজনের হ্যান্ডশেকের মাঝখানে চায়ের কাপে চুমুক দেয়। চুমুকটা এত বেশি জোরেই দেয় যাতে ওরা দু’জনই রুপার দিকে তাকায়।

 

আবিরের বাবা আবিরের ছোট চাচাকে নিয়ে ছাদে প্রবেশ করেছে। তাদের সাথে পিছনে আছে রূপার বাবা। আবিরের ছোট চাচা আবিরের বাবাকে বলছে,

আবিরের ছোট চাচা             : কতদিন পরে এমন ছাঁদটা পেলাম। নিজের বাড়ির ছাদ। (এই কথা বলে খানিকটা অস্বস্তি বোধ করলো আবিরের চাচা। কারণ বাড়িটি এখন আর তার নেই।) আবিরের বাবার মুখ কঠিন হয়ে আছে।

গ্রাম অথবা মফস্বলের রাস্তা। সকাল/ দুপুর।

আবির বাইক চালানো শিখেছে। তার বন্ধু রসু তাকে বাইক চালানো শিখিয়ে দিয়েছে কিছুদিন আগে। আবির বাইক চালাচ্ছে, আশিক বাইকের পিছনে। রসুর বাইকে রূপা। তারা গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে যাচ্ছে রসুর বাইক। তারা একটি জায়গায় দাঁড়ালো।

 

কোন কফিশপ, অথবা টং দোকান।

আশিক তার লাইফের প্লান নিয়ে নানা ধরণের কথা বলছে। আশিক আপাতত আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠানে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকুরী করলেও তার স্বপ্ন সে হবে মহাকাশ চারী। সবাই চা খেতে খেতে আশিকের কথা শুনছে।

আশিক                       ;  আমার ড্রিম জব স্পেস স্টেশনে জব করা। (আকাশের দিকে

তাকিয়ে) ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখি মহাকাশে ঘুরে বেড়াবো।

রসু (তাছ্যিল্যের সুরে)        : আবিরকে ইঙ্গিত করে, তা তো আমরা প্রায় প্রতিদিনই মহাকাশে যাই।

রূপা কৌতুহলী দৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকায়। মহাকাশে যাওয়ার অর্থ অস্পষ্ট নয় রূপার কাছে। সে আবিরের চোখের দিকে কঠিন দৃর্ষ্টিতে দেয়। আবির রূপার এ কঠিন দৃষ্টিতে থতমত বিষম খায়। সবার নজর যায় তার দিকে।

আশিক আবিরকে বলে       : তোমরা মহাকাশে যাও আবির? কিভাবে?

রসু আগবাড়িয়ে বলতে যাচ্ছিলো। আবির চিমটি কেটে বলে, মানে মানে ওরও ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন মহাকাশে যাওয়ার। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। চাঁদ দেখে, তারা-টারা দেখে আরকি।

আশিক রসুকে বলে          : ওয়াও দ্যাটস ব্রিলিয়ান্ট। রসু তুমি কি সত্যিই মহাকাশে যেতে চাও? তাহলে আমেরিকায় চলো। আমি পাপাকে বলে সব  ব্যবস্থা করবো।

রসু                                : না মানে আমি আর আবির বিনা ভিসাতেই আমেরিকা, কানাডা, লন্ডনে যাই।

 

(আবিরের মুখ থেকে এবার চা’ প্রায় বেরিয়ে যায় যায় ভাব। রসুকে এবার জোরে একটি চিমটি কাটে। রসুও একপ্রকার লাফিয়েও ওঠে উফফ। এসব দৃষ্টি এড়ায় না রূপার। সে আবিরের দিকে আবারও খচমচ দৃষ্টিতে তাকায়।)

*

রূপা ফুঁচকা খাচ্ছে। আবির আর রসু একটু দূরে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে। রূপার পাশে দাঁড়িয়ে আশিক। রূপা আশিককে ফুঁচকা খাইয়ে দিচ্ছে। আবির সিগারেট টানতে টানতে দেখছে সেসব দৃশ্য। হুট করে কিছু পাতি ছেলেপেলে এসে রূপাকে টিজ করলো “তোত্তো বাবুকে কাইয়ে দিচ্চে। ও লে লে লে!’’ (এই টাইপ) । রূপা খাওয়া রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। ব্যাপারটি দৃষ্টি এড়ালো না আবিরের। রূপা ফুঁচকা খাওয়া বন্ধ রেখে চুপ করে বসে আছে মাথা নিচু করে।

আবির এসে দেখলো রূপা চুপ করে বসে আছে। তার চোখ জলে টলমল।

আবির                            : কিরে কি হয়েছে?

রূপা                              : কিছু না ! ঝাল একটু বেশি লেগেছে। (নিজেকে সামলে নিয়ে)

আবির                            : তাহলে পানি খা। (একটি পানির বোতল নএগিয়ে দিয়ে আবির বলে)

(ওদের খাওয়া শেষ হলে আবির রূপাকে বলে তোরা এগো আমি আসছে। রূপা আর আশিক বাইকে একটু দূরে আগাতেই শুনতে পায় কিছু লোকে কর্কষ আর্তনাদ। বাইক থামিয়ে পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখে। আবির সেই ছেলেগুলোকে বেধড়ক পেটাচ্ছে।)

 

রূপার চোখেমুখে অন্যরকম একটি ভালোলাগা ফুঁটে উঠে। সে হয়ত ছেড়েই দিয়েছিলো, আবিরের মতো ভ্যাবলা ছেলে ঐ বজ্জাত ছেলেগুলোকে কিছু বলবে না। এরপর বাইক টেনে আসে আবির। বাইকের পেছনে রসু, আবিরের চোখেমুখে অন্যরকম কঠোরতা। যা আগে কখনোই দেখেনি রূপা।

*

রূপার পড়নে শাড়ী। সে ঘোমটা টেনে একটি খাবারের ট্রে নিয়ে ঘরের ভেরে ঢুকলো। এতদিন বিয়ের কথাচললেও আজ রূপা ও আবিরের ঘরোয়া বাগদান। আবির ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে তার বন্ধু রসু। আবিরের চোখমুখ বিষণ্য, অপরদিকে তার পাশে দাঁড়ানো বন্ধু রসু’র চোখে মুখে হাস্বজ্বলভাব। সবার ভেতরেই আনন্দ কাজ করলেও আবিরের চোখেমুখে আনন্দের ছাপ নেই। আবির চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। আশিক রূপার হাতে আঙটি পড়িয়ে দিলো। সবাই একই সাথে, আলহামদুলিল্লাহ……..মাশাল্লাহ বললেও আবিরের ভেতরে কেমন যেন অদ্ভুত অনভূতির আবেশ বয়ে যাচ্ছে।

আশিকের (বাবা অথবা মা)               : মেয়ে তো মাশাল্লাহ ভারী মিষ্টি। সেই সাথে   ভীষণ লক্ষী।

রূপার (বাবা)                             : ভাইজান। আমার মেয়ে মাশাল্লাহ ভীষণ লক্ষী।

এভাবে টুকটাক কথাবর্তা চলতে থাকে তাদের মাঝে।

*

আবির এক নাগাড়ে সিগারেট টেনেই যাচ্ছে। তার সামনে সিগারেটের একটি প্যাকেট। একটার পর একটা সিগারেট ধরাচ্ছে। রসু বলছে,

 

রসু                               : কিরে তুই তো শুধু সিগারেট টেনেই যাচ্ছিস ব্যাপারটা

কি?

আবির                            : কথা বলিস না। তোর দরকার হলে তুই ধরা।

(গম্ভীর গলায়)

রসু                               : আরে ব্যাটা বলবি তো। কি হইছে? অন্তরে না চেপে

বলে ফেল।

আবির                            : (সিগারেট ফেলে দিয়ে) দোস্ত একটা ব্যাপার না আমাকে

কিছুদিন ধরেই খোঁচাচ্ছে।

রসু                               : কি ব্যাপার বল (কৌতুহলী হয়ে০

আবির                            : দোস্ত আমি না। অ্যাম… আমি না রূপাকে ভালোবেসে

ফেলেছি।

রসু                               : কি বলিস? (বিস্ফারিত চোখে)

আবির                            : বুঝতে পারছি না রে। রূপার বিয়ের কথা শোনার পর  থেকেই আমার ভেতরে এমন কাজ করছে।

রসু                               : আবিরের কাঁধে হাত রেখে। বন্ধু তুমি গোলকধাধায় পড়েছো। তবে তুমি যদি সত্যিই রূপাকে ভালোবেসে  থাকো। তাহলে এক্ষুণি বলে ফেলো। কারণ  ভালোবাসার কথা জানিয়ে কেউ অপরাধী হয় না।

আবির                            ; না দোস্ত আমি এটা পারবো না।

রসু মাথায় হাত দিয়ে চুল টানতে থাকে। বন্ধুর জন্য সে হঠাৎ করেই টেনশনে পড়ে গিয়েছে। এরপর শুরু করে তার চিরচারিত বচন। যাতে অণুপ্রেরণার বার্তা থাকে আবিরের জন্য।

রসু                        : কোন হালায় জানি কইসিলো,  ‘মানুষ প্রেমে পড়লে অন্ধ হইয়া যায়৷ তুই তো শালা.. কানা টুট হইয়া গেছিস।

আবির                     :-তাইলে তুই বল আমি কি করবো?

রসু                        : আরে ব্যাটা, করার কি কিছু আছে? মেয়েটার বিয়ে ঠিক।বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ আনন্দে আছে। তুই পারবি এর মধ্যে সবাইকে  মন খারপ করে দিতে!-আর রূপা! রূপাও তো তোকে ভালোবাসে এমন না৷ তা ছাড়া তোদের বাড়িটা একজায়গায়,   শুধু দু’তালা আর নিচতলা৷ রূপার বাবা মা কিংবা তোর বাবা  মা তারা কি চাইবে উপর তলায় ছেলে-মেয়ের শশুর বাড়ি  হোক?

আবির                         : তাহলে আমি কি করবো?

রসু                            : আবিরের কাঁধে হাত দিয়ে রসু বলে..তুই সত্যিই রূপাকেভালোবাসিস?

আবির                         : হ্যাঁ রে দোস্ত

রসু                            : তাইলে ওরে বললি না কেন?

আবির                         :সাহসে কুলাতে পারিনি।

রসু                            :  তাহলে এখন সোজা নিচে যা….বাড়িতে গিয়ে এক্ষুণি

রূপাকে বল।

আবির                         : যদি রাজি না হয়?

রসু                           :  আরে ব্যাটা বলে তো দ্যাখ। যা! (সময় থাকতে নিজের ফুলের যত্ন নাও বন্ধু। না হলে ফুল ঝড়ে গিয়ে কিন্তু ভুল হয়ে ছোবল মারবে তোমার ঠিক এই খানে……………দূরে গিয়ে রসু বলে ‘সাধু সাবধান!’ আবির রূপাকে তার মনের কথা বলতে যাবে এমন সময় আশিক চলে আসে। আবির আর রূপাকে কিছুই বলতে পারে না।

*

বিয়ের বাকি একদিন। তবে বিয়ে বাড়িতে যে’রকম আমেজ থাকার কথা সেটি নেই। কারণ গতকাল রূপা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ডাক্তার বলেছে, আঘাত জনিত কারণে রূপার ব্রেইনে সমস্যা হয়েছে। এর দ্বারা রূপার স্মৃতিভ্রম রোগ হয়েছে। যে কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে রূপা হ্যালিউসিনেশন ও ডিলিউশন রোগে সমস্যায় পড়তে পারে। আশিক রূপাকে বিয়ে করতে অগ্রাহ্য প্রকাশ করলো। সবকিছু যেখানে ঠিক, সেখানে হঠাৎ করেই আবারও আশিকের বাবা অর্থাৎ আবিরের ছোট চাচা বাড়ি থেকে চলে গেলো শুধু এই অযুহাতে। আবির ভেতরে ভেতরে ভীষণ অনুতপ্ত। কারণ সেদিন রূপার পা ভাঙার সাথে সাথে মাথাতেও আঘাত লেগেছিলো। যার একমাত্র দোষী আবির, যে কারণে মেয়েটি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। আবিরের চাচা’ আবারও সেই একই কাজ করলো যে টি সে বাড়ি বিক্রির সময় করেছিলো। সে রাগ সময়ের সাথে নিভে গিয়েছে আবিরের বাবা।  কিন্তু রূপার বিয়ের আগে এমন একটি খবর জানতে পেরে আবিরের বাবার রাগ আবারো জ্বলে উঠলো নেভা আগুন থেকে।

আবিরের বাবা বললো, মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়েছে; এখন রোগের খবর জেনে ছেলে আর বউকে নিয়ে ভেগেছে। ওকে আর ভাই বলে আমি পরিচয় দিবো না। রূপার বাবা বিষণ্য মুখে বসে আছে। আবিরের বাবা তাকে আশ্বস্ত করছে। সে নরম গলায় রূপার বাবাকে বললো, “মন খারাপ করবেন না ভাই”

-আমি আপনাকে একটি প্রস্তাব দিতে চাচ্ছিলাম। আপনি যদি কিছু মনে না করেন।

– রূপার বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী প্রস্তাব?

– আপনার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে রূপাকে আমার ঘরের পূত্রবধু বানাতে চাই।

রূপার বাবা এবার আবিরের বাবাকে ধরে কেঁদে ফেললো। রূপার বাবা কাঁদতে কাঁদতে বললো, আপনি মানুষ না ভাই, আপনি ফেরেশতা।

আবিরের কয়েকদিন ধরেই দিন-রাতের ঠিক নেই। প্রথমত সে রূপাকে বলতে পারেনি সেই অনুশোচনা। আর দ্বিতীয়ত, রূপার এই দশার জন্য একমাত্র আবিরই দায়ী। তাই সারাদিন এদিক সেদিক বসে থাকে, বিষণ্য মুখে, রাতে ঘুমায় না। গালে খোঁচাখোঁচা দাড়ি, চোখের নিচে কালি। সব মিলিয়ে আবির পুড়ছে অনুতপ্তের ভীষণ জ্বরে। বিকেল বেলায় সে যখন রূপার ঘরে গেলো, তখন দেখলো রূপা ঘরে নেই। আবির ছাদে যায়, ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে রূপা। তার পাশে প্যারাপেট ওয়ালের উপরে একটি চায়ের কাপ। তার চুল উড়ছে বাতাসে, চোখে জল। আবির ধীর পায়ে রূপার দিকে এগিয়ে গিয়ে রূপার পাশে দাড়ালো। রূপার চোখে জল, খোলা চুল উড়ছে বাতাসে। আবির শান্ত গলায় বললো,

আবির                                                : তুই কি আমাকে ক্ষমা করতে পারবি না?

রূপা আবিরের দিকে ফিরে               : কেন কী করেছিস তুই এমন?

আবির                                                  : তোর এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র আমি, আমিই দায়ী।

রূপা কিছু বলে না, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আবির বলে,

আবির                                   : আমি……আমি তোকে একটা কথা বলতে চাই রূপা।

রূপা                                     : “বল” আবিরের মুখোমুখি

আবির                                   : আমি জানি না, তুই আমাকে ক্ষমা করতে পারবি

কি না। কিন্তু বিশ্বাস কর, আমি সত্যিই অপরাধী। আর এই অপরাধের শাস্তি তুই আমাকে যা দিবি, আমি মাথা পেতে নেব।

রূপা                                     : আবিরের সম্মুখ থেকে ঘুরে উল্টোপাশে দাঁড়ায়। অভিমানের সুরে বল, “এই ছিলো তোর কথা?”

আবির চুপ করে যায়। আবারও বলে,

আবির                                   : আরেকটা কথা বলব?

রূপা                                     : বার বার অনুমতি নিচ্ছিস কেন? যা বলবি বল।

আবির                                   : আমি…..আমি…….তোকে ভালোবাসি রূপা।

 

(রূপা এবার ঠাস করে একটা চড় মারে। ছাদ থেকে উড়ে  যায়, কবুতরের ঝাক।) এরপর ধপ করে রূপা বলে, “এই কথা বলতে তুই এত সময় নিলি কেন?” এরপর প্রায় ঝাপিয়ে পড়ে আবিরকে রূপা জড়িয়ে ধরে। এরপুর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। এক হাত দিয়ে আবিরের হাত নিজের পিঠে উঠিয়ে দেয়। কাঁদতে কাঁদতে আবিরকে  বলে….. “আমাকে কখনো ছেড়ে যাবি না তো?” আবির ভীষণ ভালোবাসার সুরে বলে, “না! যাব না’’ রূপা আবিরের বুক থেকে উঠে আবার তার গালে থাপ্পড় মারে, এরপর বলে রামছাগল একটা। (সেদিন আবির আর রসুর কথা সিড়িঘরে দাঁড়িয়ে জানতে পেরেছিলো রূপা।)

এরপর রূপা কান্না রেখে হাসে, প্রায় দীর্ঘদিন পরে রূপার হাসি দেখলো আবির। এর আগে সে রূপার হাসি এত ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেনি। রূপার হাসি যেন অদ্ভুত মমতার রংমিশেল। (এরপর কি ঘটে তা লেখক নিজেও জানে না)

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
রহস্যঘেরা শিমুলতলা: পর্ব-২

রহস্যঘেরা শিমুলতলা: পর্ব-২

ড. গৌতম সরকার অনুদিদার বাড়িটা একদম একপ্রান্তে বলা চলে। এরপর লাট্টু পাহাড়ের দিকে যেতে আরও কয়েকটা বাড়ি আছে বটে, তবে সেগুলো অধিকাংশই আর বাসযোগ্য নয়। ...
দেশকে ভালোবাসি

দেশকে ভালোবাসি

 হামিদা আনজুমান ব্রিটিশ রাজের অত্যাচারের জন্য ভীন দেশিদের তাড়িয়ে হই ধন্য। কিন্তু কপাল হায় কত যে মন্দ সাপের ফণা দম করে দেয় বন্ধ। পাক হায়েনা ...
কবিতা- নির্বাধ | মাইনুল হোসেন

কবিতা- নির্বাধ | মাইনুল হোসেন

|মাইনুল হোসেন   তোমার আমার মিলন হবে  এক দেয়ালবিহীন পৃথিবীতে।   এক সূর্যমুখীর ক্ষেতে দাঁড়িয়ে, দেশ-কাল-সীমানার গন্ডি পেরিয়ে, সমাজ,সম্পর্ক, সংসারকে পায়ে মাড়িয়ে ঘাসফড়িংদের সাক্ষী রেখে তোমায় ...
প্রিয়তমার রেকর্ড ভাঙবে রাজকুমার

প্রিয়তমার রেকর্ড ভাঙবে রাজকুমার

সিনেমানামা প্রিয়তমার মতো রাজকুমার সিনেমার প্রথম গানটিও দর্শকদের মধ্যে ব্যপক সারা ফেলেছে। মুক্তির পর পরই সিনেমাটির প্রথম গান ও টাইটেল ট্র্যাক ‘তোমার রাজকুমার’ শিরোনামের গানটি ...
মরিচিকা অভিলাস

মরিচিকা অভিলাস

দীপঙ্কর শীল   তুমি যদি এসো  নিদ্রালু নয়ন জেগে থাকবে, হৃদয় পরশে ঝরবে প্রেমবৃষ্টি যদি শুরু হয় এলোমেলো ঝড়, তবু মেঘজলে ভিজে পাশে রহিবে।   ...
বেহেস্ত- শুভাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।

বেহেস্ত- শুভাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।

  শুভাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়   সন্ধ্যা নেমে এসেছে বেশ খানিকক্ষণ আগে। পূর্ণিমার তারাগুলো যেন ঝলমল করছে মর্মর সৌধের বুকে। প্রধান ফটকের ভেতর দিয়ে এগিয়ে গেলাম। সামনে ...