[সতর্কীকরণঃ লেখাটি গতানুগতিক লেখার বাইরে ভিন্ন একটি লেখা যেটি পড়ে আপনি উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারেন। তাই লেখাটি পড়ার সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। লেখাটিতে কোনভাবেই কোন জাতি, বর্ণকে হেয় কিংবা প্রতিপন্ন করা হয়নি। এবং এর প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং কাল্পনিক তাই বাস্তবিক জগতে এর মিল খোঁজা অনার্থক। লেখাটি শুধু মাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য।]
রাত দেড়টা! যে গরম পড়েছে এতে সাধারণ মানুষের এই দুর্বিষহ গরমে হাঁসফাস করার অবস্থা। সেখানে অদ্ভুত কোন এক সম্মোহনী টানে এই গরমেও রুমে ফ্যান না ছেড়ে বসে থাকাটা যেন তাল-তমাল বনে আগুন লাগার মতো! রুমের এক কোনে চুপটি করে বসে আছে তমাল। তার হাতে একটি চটি বই! চটি বইয়ের নাম শুনলেই আজকাল মানুষের শরীর বিড়বিড়িয়ে ওঠে! চটি বই বলতে ছোট গল্পের বই। যৌনউত্তেজক এমন কিছু নয়! মাঝেমধ্যেই তমাল একখানা বই নিয়ে রুমের এক কোনে চুপটি করে বসে থাকে, বন্ধুরা এসে তাকে কত কথা শোনায় তাতে তার বিন্দু মাত্র এসে যায় না! সেদিন রুবেল নামে এক নিগ্রোধর্মী তার এক বন্ধু তাকে বলে, ‘সারাদিন ঘরের কোণে বসে, চটি না চিবিয়ে ঘর থেকে বেড়োতে তো পারিস না কি?’
তমাল বলে না কিছু! এক ঝলক অগ্নিতপ্ত চোখে নিগ্রো রুবেলের দিকে তাকিয়ে আবার চুপ করে বইয়ের পাতায় মনযোগ দেয়। রুবেল আর কিছু বলে না, ঘরের এক কোণে বসে সে সিগারেট ধরায়। অর্ধেকটা টেনে বাকি অর্ধেক দেয় তমালের হাতে। তমাল গাঁজা খাওয়ার মতো দু’টো টান দিয়ে সিগারেটটা ফেরত দেয় রুবেলের দিকে!
রুবেল হতভম্ব হয়ে বলে, এ তো গাঁজা না রে ! বিড়ি আরও টান!
তমালের মুখ থেকে এবার কথা বের হয়, অতিরিক্ত সিগারেট খাওয়া শরীরের জন্য হানিকারক! জনস্বার্থে – তীর্থ তমাল। রুবেল এক গাল হেসে বলে, তমাল না বাল – খালি বই পড়ার তাল। তমাল হেসে রুবেলের গালে ছোট করে একটা চাটি মারে!
রুবেলের সাথে রাস্তায় হাঁটতে তমাল খানিকটা বিব্রতবোধ করে! ওর ঢ্যালা ঢ্যালা চোখ নিয়ে যেভাবে মেয়েদের দিকে তাকায়! তাতে মেয়েরা ঠিক কতটা বিব্রতবোধ করে তার ধারণার বাইরে। তমাল মেয়ে হলে রুবেলের গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর লাগিয়ে দিতো!
আপাতত রাগটা ঝাড়ে সিগারেটের ওপর! তবে রাগ ঝাড়তে গিয়ে নিজেই খানিকটা বিপাকে পড়ে। লম্বা লম্বা টানে মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। আজ বিকেলে বের হওয়াটাই যেন অনার্থক! জনসম্মুক্ষে মানুষের সঙ্গে কিভাবে আলাপচারিতা করতে হয়, ‘তার ছিটে ফোঁটাও জানে না রুবেল। তমাল যখন সুরুত করে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিলো ঠিক তখনই রুবেল বলে ওঠে, ‘নতুন একটা কালেকশন আছে! রাতে ড্রাইভে পাঠিয়ে দেব নাকি?’ গরম চা গিয়ে গলায় বাঁধে তমালের! দম ফেঁটে কাশি আসার উপক্রম হয়। বিড়বিড় করে তমাল বলে – এ শালা তো দেখছি কখন কি বলতে হয় তা-ই জানে না
২.
প্রীতির কথা কি তমালের মনে আছে? হ্যাঁ ওটা প্রীতিই হেসে হেসে কার সাথে যেন কথা বলছে, কোন একটা ছেলের সাথে! প্রীতির বয়ফ্রেন্ড। তমাল রুবেলকে ফেলে সোজা এগিয়ে যায় প্রীতির দিকে!
-প্রীতি?
(মেয়েটি তার ছেলের বন্ধুর সাথে কথা বন্ধ করে তাকায় তার দিকে! মেয়েটির চোখে সিলভার কালারের কোন একটা প্রসাধণীর উজ্জ্বলতায় চিক চিক করছে)
-হ্যাঁ। (মিষ্টি গলায় জবাব দেয় মেয়েটি)
-আমাকে চিনতে পেরছো? আমি তমাল তোমাদের সাথে একসাথে ওয়াপদা কলোনীতে থাকতাম? সিরাজগঞ্জ?
(মেয়েটির আড়চোখ খানিকটা স্মৃতির পুনরুত্থান ঘটায়। তারপর মিষ্টি গলায় বলে, তমাল। রাইট?)
তমাল ঠোটের কোণে মৃদু হেসে বলে, ‘ইয়েস’
এবার প্রীতির হাত চলে যায় তমালের মাথায়!
‘তোকে কতটুকু দেখেছি! কত বড় হয়ে গিয়েছিস রে’ স্নেহের আদুরে গলায় প্রীতি – তমালকে বলে।
তমাল আর প্রীতির কথোপকথন শুনে এতক্ষণে পাশে দাঁড়ানো অপরিচিত লোকটি বুঝে ফেলেছে ! তারা পরিচিত। প্রীতি এবার পাশে দাঁড়ানো লোকটির সাথে তমালের পরিচয় করিয়ে দিতেই তারা দুজন হ্যান্ডশেক করে নেয়। পাশে দাড়নো লোকটি প্রীতির ফিয়ান্সে। লোকটির নাম – রাশেদুজ্জামান। বাইরেরে একটি কন্সট্রাকশন গ্রুপের কনসাল্টেন্ট সে! আগামী ছ’মাস দেশে থাকবে, প্রীতিকে সাথে নিয়ে এখানে-ওখানে ঘুরবে! প্রীতিকে মানিয়ে নিয়ে, বিয়ে করে তারা দুজন দেশের বাইরে চলে যাবে আপাতত এতটুকুই তাদের পরিকল্পনা।
ছোটবেলা থেকেই প্রীতিকে ভীষণ ভালো লাগতো তমালের। যদিও প্রীতি তমালের থেকে বয়সে খুব একটা বেশি বড় নয়। তমাল যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে প্রীতি তখন ক্লাস টেনে।
“বাঙালি ছেলেদের প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ক্লাস ফাইভের বেশি লাগে না! এ কথাটি কেউ না বললেও তমাল নিজেকে নিজে বলে’’ । ক্লাস ফাইভে থাকতে সে উপলব্ধী করে মেয়েদের সব থেকে বেশি সুন্দর লাগে গার্লস স্কুলের ড্রেসে! যদি বলা হয়, বিয়ের সা’জের থেকেও বেশি সুন্দর? তমাল নিঃসন্দেহে বলবে হ্যাঁ! কারণ তমাল এখন পর্যন্ত বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি!
প্রীতিদের বাসা ছিলো তমালদের বাসার মুখোমুখি! তমালের জানলা দিয়ে প্রীতিকে না দেখা গেলেও রান্না ঘরের জানলা কিংবা বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে একটু চোখ বাড়ালেই প্রীতিকে দেখতে পেত তমাল। প্রীতির পনিটেইল চুলের সাথে নীল-সাদার ড্রেস যেন তমালকে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বানানোর দায়িত্ব নিয়েছিলো!
– প্রীতি আপু স্কুলে যাচ্ছো?
প্রীতি তমালের কান মলে সেদিন বলেছিলো, আপু ডাকবি না আমায়! জাস্ট প্রীতি! ঠোট দুটোর প্রসরণ করে কেমন অদ্ভুত একটা হাসি দেয় প্রীতি।
(চলবে)
(পরের পর্বের অংশ বিশেষ – এরপর অভিমান করে যখন প্রীতি খাট থেকে উঠে যাবে ঠিক তখনই চারদিক দিনের আলোর মতো ফর্সা করে আরও একটি বাজ পড়লো ধারে কাছে কোথাও। প্রীতি এবার ভয় পেলো ভীষণ। প্রীতিকে আটকাতে তমালও তখন থতমত হয়ে শোয়া থেকে উঠে বসেছে। প্রীতি ভয় পেয়ে এসে পড়লো তমালের গায়ে, তমালের জ্বর কাতুরে শরীর প্রীতির ভার না নিতে পেরে প্রীতিকে সমেত পড়লো বিছানায়। অন্ধকারের মধ্যে তমাল তার ঠোটে অদ্ভুত কিছু একটা অনুভব করে। তমাল আর দেরী করে না, নিজের মুখের মধ্যে এটে নেয় প্রীতির ঠোট। এরপর চলে অদ্ভুত সম্মোহন, ঠোট রেখে এবার তমালের ঠোট এগোয় প্রীতির গলায়। বাইরে বৃষ্টির তোরজোড় বেড়েছে দু’টো বজ্রপাতের পর। প্রীতি যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে, প্রীতির মাথায় তখন কি চলছে? প্রীতির তমালকে বাঁধা দেওয়ার কোন শক্তি পাচ্ছে না। )
[পরবর্তী পর্বের লেখাগুলো সবার আগে পাওয়ার জন্য ডানপাশের বেল আইকনে ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করে নিন। গল্পটির প্রথম পর্ব আপনার কাছে কেমন লাগলো? জানাতে ভুলবেন না]
[পরের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন]
[আপনার সামান্য উৎসাহ আমাদের অনেক বড় করে তুলবে। সাবস্ক্রাইব করুন – ছাইলিপির ইউটিউব চ্যানেল]