চৌরাস্তার মোড়ে ফুটপাতের পাগলীর পেটে!
নাকি কোনো ধনীর দুলালীর সখের উদর চেটে।
আমার জন্ম হয়েছে, রেল রাস্তার ঐ সরু গেটে-
দিন-রাত চলে এই রোজ কিয়ামত ঘাটে খেটে।
আমার ঘুম ভাঙে,রোজ কাক ডাকা ভোরে-
চোখ ডোলে,খানিকটা বসে রই,ব্রাঞ্চিটা ধরে।
ছোটোলোকেরা ছুটছে,ঐ আশার নামাজ পড়ে;
ওদের দেখে আমি,পাশ কাটিয়ে যাই দূরে সরে-
নইলে আবার নাক চেপে,লাথি মারবে জোরে।
রঙিন কাঁচের গাড়িতে বসা তোদের ভদ্রলোকে;
হাত পাতলে ধমক দিয়ে,জারস বলে ডাকে।
কাজ করলেও চুরির দায়ে,ঘুরায় বাঁকে বাঁকে।
স্বর্গ,নরক দেখাবো মাইর দিয়ে,আজ ব্যাঁটা তোকে।।
এটাই আমার জীবনের প্রতিচ্ছবি খুদাই করে আঁকা।
সকালের খাবার জোটে আমার ময়লার ভাগাড়িতে-
কুত্তায় খায়,আমিও খাই,শেষ হয় কামড়াকামড়িতে।
আঙুল চাটতে চাটতে চলি,বোতলের কাড়াকাড়িতে-
এক টুকরো কাগজের জন্য,বাজি ধরি মারামারিতে।
কুড়ি পয়সায়,একমুঠ সাদা ডাল ভাতে-
দুপুরের ভোজনটা সেরে নেই,রোজ পাতে।
ঘামের ছায়াতলে জিরিয়ে নেই দিব্যি তাতে-
বৈকালে খেলা দেখি,গ্রিলে আটকানো মাঠ-টাতে।
দু আনা বেচে!খুশিতে আটখানা মহাজনে-
ট্যারা চোখে চেয়ে কইতো ট্যাকা গুনে গুনে;
বেজন্মার বাচ্চা বেজন্মা যাহ,যা এহানতোনে।
আর কিনবো কেডায়?তোর কোন বাপজানে?
রক্তের দামে,ফিরতাম আপন নিজ বাড়িতে-
বিছনা পাতা সদা,পথিকের পায়ের ধুলোতে।
হামাগুড়ি দিয়ে ভাবতাম আমি রোজ মাটিতে?
খোলা আকাশের ছাদে,ঠাই হতো প্রতি রাত্রিতে;
কেন এমন জীবন আমার,নয়-কো ফুলেতে-
কেন?আমার জন্ম হলো,এই বেইমান ফুটপাতে।।
বরাট, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী।