বর্তমান সময়ের সেরা ব্যান্ডগুলো কারা? Bangla Band Song

বর্তমান সময়ের সেরা ব্যান্ডগুলো কারা? Bangla Band Song
আশিক মাহমুদ রিয়াদ
আপনি সর্বশেষ আপনার হেডফোনে কোন গানটি শুনেছেন? যদি হয়ে থাকেন ব্যান্ড শ্রোতা তাহলে নিশ্চয়ই আপনার হেডফোন আপনাকে শুনিয়েছে এ সময়ের দুর্দান্ত কোন ব্যান্ডের অদ্ভুত সুন্দর কোন গান। ব্যান্ডের গানের ওপর জোড় দিয়ে বলার কারণ, আমরা এই প্রজন্ম ভীষণ ভাগ্যবান যে জীবনের তাড়নায় উঠতি বয়সী কিশোর থেকে শুরু হতাশায় ডোবা বিষাদগ্রস্থ তরুণদের প্লে লিস্টে থাকে, ‘অনিকেত প্রান্তর’ এর আর্টসেল গান কিংবা, ‘এই অবেলায়’ এর শিরোনামহীন গান।
বসেন একটু!
কমেন্ট একটু পরেও করা যাবে। ব্যান্ডগুলোর নামে আর গানে গড়মিল থাকার কারণে কমেন্ট করতে যাওয়ার যে তাড়না আপনার মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক একই তাড়নায় ভুগছে একটা হার্ড ব্ল্যাডেড, রক প্রজন্ম। যারা পাথরের মত শক্ত, যাদের ইমোশন বারুদে আগুন লাগানোর মতো। যাদের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে দুঃখবিলাস, মেয়ে তুমি কি দুঃখ চেনো কিংবা অচেতন শহরের ঘরকুনে হতাশায় মোড়ানো তরুনের জন্য সৃষ্টি হয়েছে, “তুমি সেই পূর্ণতা আমার জীবনে”
এই লেখাটি দেশের মেগাব্যান্ডদেরকে নিয়ে না। আপাতত তাদের সাইডে রাখি। আজ বরং একটু গড়মিলে সন্ধিহীন ঝুক ঝুকে রেলট্রাকে বুঁদ হওয়া ব্যান্ডগুলোকে নিয়ে আলোচনা করি। সেটা হতে পারে শীত বিকেলের ‘মেট্রোলাইফ’, কিংবা অট্টালিকার শহর ছাড়িয়ে ‘জোনাক পাখির ডানায় শেষবারের মত বাঁচার আকাঙ্খার চান্দের গাড়ি’ অথবা সর্পদংশীর আঘাতে বিষে মুখ হওয়া জীবনের অস্বস্তির ‘চাপ’ এর ‘আরেকটা রক ব্যান্ড’। আমরা এই প্রজন্মের সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ! কারণ ভবিষ্যতে যে ব্যান্ডগুলো শীর্ষে আসছে সেগুলোকে উঠতে দেখছি। দিন যতই যাচ্ছে, গানের কথা, বেইজ কিংবা ড্রামের রগরগে মাস্টার মিক্সিং বাজছে একেকজনের ফোনে। প্রত্যেকটা গানের লাইন যেন আমাদের জীবনের সকাল, বিকেল, সন্ধ্যা এক করেছে। যে ছেলেটা হতাশার বেড়াজালে বন্দি, যার একচুয়াল মোমেন্ট বোঝার আসলেই কেউ নেই। সে আপন করে নেয় ব্যান্ড মিউজিকগুলোকে।
স্পেসিফিকলি আলোচনা করলে এই প্রজন্মের জন্য সবথেকে বড় ভাইব দিয়েছে- লেভেল ফাইভ 60’sLove, ব্লু-টাচ এর মায়াবী/ কার্ণিভালের – ভ্রম/ অড সিগনেচরারের প্রত্যেকটা ক্রিয়েশন জাস্ট স্পেসিফিকালি ওভার ব্লো। প্রত্যেকটা গান তার নিজেস্ব গতি, ধারায় সুন্দর। সেই সাথে আঞ্চলিক কিছু উঠতি ব্যান্ডের নাম শোনা যাচ্ছে যতদূর জানি বাংলা ব্যান্ডের আতুরঘর চট্টগ্রামে। সেখান থেকেই অনেকে উঠে এসেছে, দাঁপিয়েছে বাংলা ব্যান্ড কিংবা শিল্প জগৎ। আমি যেহেতু বরিশালে থাকি, তাই বরিশালেও লোকাল ব্যান্ডগুলোর ব্যাপক ফ্যান-এবং পারফর্মেন্স চোখে পড়ে। হয়ত সু্যোগ পেলে তাড়াও একদিন দুর্দান্ত কিছুর জন্ম দিয়ে বসবে।
এই প্রজন্মের ব্যান্ডগুলোর যেন একেককটা একেক ভার্সের, সেটা মেট্রোলাইফের-
‘শীত বিকেলের রোদ
ক্লান্ত সে অনুরোধ
রেখে গেছে প্রেয়সী
ওড়না তে জলছাপ’
অথবা লেভেল ফাইভের-
“ওই দূরে চলো না, নীল আকাশে
হারিয়ে যাই, তোমার হাতটি ধরে
পায়ে পায়ে ঘুঙ্গুর পায়ে, হারিয়ে তুমি
কাশ বনের, মৃদুল বাতাসে হয়েছি”
কিংবা যদি বলি ব্লুটাচের মায়াবী’র –
জমে থাকা অনুভূতিরা আজো
কাঁদছে বরষা হয়ে,
এপিটাফে রাজকন্যা তুমি
আমি পরাজিত প্রহরী।
গানগুলো এতটা মুগ্ধ এবং স্নিগ্ধ যে এরা যেন আলাদা একটা ভার্সে পাঠিয়ে দেয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে যখন ভীষণ ডিপ্রেসড কিংবা হীণমন্যতার সময় পাড় করেছি তখন আরেকটা রক ব্যান্ডের ‘চাপ’ গানটি আমাকে বেশ ঘিরে ধরেছিলো। আরেকটা রক ব্যান্ড ভীষণ সম্ভাবনার, বিশেষ করে ইডেন এই ব্যান্ডের মাস্টারপিস ক্রিয়েশন।
এই প্রজন্মের বিষণ্য বন্ধুদের কাছে হাত রাখে, ‘হাইওয়ে’। আমি স্পেসিফিকালি বন্ধুদের সাথে চাঁদের আলোতে ছাদে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিতে দিতে হাইওয়ের এই গান শুনেছি বহুবার। অথবা নির্জনে একা দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে,’ চাঁদনী রাইতে নদীর ওপারে আকাশ থেইকা নামলো পরী’র সেই পরীকে কল্পনায় খুঁজেছি বহুবার। ‘হাইওয়ে জাস্ট এনাদর লেভেলের একটা ব্যান্ড। সেটা কোন সন্দেহ রাখে না।
মেকানিক্সের স্বপ্নভঙ্গ শুনতে শুনতে হারিয়ে ফেলেছিলাম। মেকানিক্সও এই প্রজন্মের দারুণ অবজার্ভেশন! তারাও লিখে ব্যর্থতা কিংবা হতাশায় ডোবা গান। এখানেই তো বাংলা ব্যান্ডের আসল শক্তি। কনসার্টে গিয়ে বন্ধুদের কাঁধে লাফাতে লাফাতে চোখের পানি ফেলে দিয়ে গাইব এসব গান।
আমি জানি যে আমার এই লেখায় অনেক ব্যান্ড বাঁদ পড়েছে। সেটা অলরেডি সাব-কনশাস মাইন্ড বলাবলি শুরু করে দিয়েছে। আমি ব্যান্ডগুলোর গান আরও শুনতে চাই, তাদের অনুধাবন করতে চাই। এই লেখা পড়ে পাঠক যদি চায়, সেগুলোকে ধারাবাহিক আকারে লেখার জন্য একটুও ক্লান্তি বোধ করবো না।

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
ছোটগল্প: উপলব্ধি

ছোটগল্প: উপলব্ধি

মানজুলুল হক আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে শহর পেরিয়ে গ্রামে। মানুষগুলোর ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম নয়। এ যেন এক প্রতিযোগিতা চলছে। মফস্বল শহরের মেয়ে নীনা। নীনা দেখতে মাশাল্লাহ ...
স্বপ্নভ্রম

স্বপ্নভ্রম

|আহমেদ সুমন    একটি ঘুড়ির মতো আমিও উড়ি স্বপ্নের আকাশে, নিমিষেই ঘুরে বেড়াই পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে, মিশরের পিরামিড আর নীলনদ যেন হাত ...
ছোটগল্প- বিশ্বাস

ছোটগল্প- বিশ্বাস

আসিফ আফনান পিয়াল “আব্বা মোগো গরু কেনবা না এবার?” ছেলে রাকিবের প্রশ্নে নিরব তরিকুল! কেননা এই প্রশ্নের উত্তর যে জানা নেই কেয়ারটেকার তরিকুলের। কিনবেই বা ...
শ্রী রাজীব দত্তের সম্পাদনায় ভৌতিক সংকলন "প্রেতাত্মা"

শ্রী রাজীব দত্তের সম্পাদনায় ভৌতিক সংকলন “প্রেতাত্মা”

শ্রী রাজীব দত্তের সম্পাদনায় সৃষ্টি বই মহল প্রকাশনার তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ একটি ভৌতিক সংকলন প্রকাশ হচ্ছে “প্রেতাত্মা” সংকলন, এই সংকলন তরুণ তরুণী লেখক লেখিকার নানান ভূত-প্রেত ...
কবিতা- অজ্ঞাতনামা

কবিতা- অজ্ঞাতনামা

 রীতম দত্ত আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তোমার পানে তোমার চলনে নিজেকে খুঁজে ফিরি তোমার তৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত পথিক আমি হাজার বছর ধরে পাড়ি দিয়েছি কত গিরি। তোমাকে ...