আশিক মাহমুদ রিয়াদ
একুশ এসেছে একুশ,
এসেছে মিছিলে মিছিলে প্রতিবাদের প্রতিধ্বনী
এসেছে পুরণো রাজপথে নতুন কুঁড়ি।
গাছে গাছে ফুটেছে বাসন্তী ফুল,
অথচ রাজপথ ছেঁয়ে গেছে নতুন পদধ্বনীতে
ঝরা পাতার মরমর শব্দে,
কন্ঠে কন্ঠে উত্তাল হয়েছে তিলোত্তমা ঢাকা।
“রাষ্ট্র ভাষা চাই বাংলা”
শুনেছো তোমরা? চেয়ে দেখো রাজপথে
মিছিল নেমেছে, বুলেটের বিরুদ্ধে।
মায়ের ভাষায় কথা বলতে আজ শোসকদের চোখ রাঙানি?
গর্জে উঠেছে তরুণ-অরুণ!
হারামজাদা! পাকিস্তানি? এ তল্লাট আমার।
মায়ের আঁদর বুঝি যতখানি, ততখানি আমার ভাষা।
সেই ভাষাকে কেড়ে নিতে চাস ?
সাহস কতখানি?
“না না হবে না-উর্দু-ফারসি!”
আমরা বাঙালী, বাঙলা আমার ভাষা।
রক্তে রক্তে আজ আগুন লেগেছে,
ফাগুন সেজেছে তারুণ্যের আগুনে!
বাংলা আমার মুখের ভাষা,
মায়ের ভাষা, আমার ভাষা, আমাদের ভাষা।
সেই ভাষাকেই কেড়ে নিতে চাস তোরা?
সাহস কত বড়, বেয়োনেটে পেতেছি হৃদয়!
তাও ভাষা কেড়ে নিতে চাস? সাহস কতখানী?
ফাল্গুনের আট তারিখে
রাজপথ ওথে বিক্ষোভের ঝড়
“রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই”
মাতৃভাষার মিছিলে মুখর গ্রাম-শহর
এ আমার প্রতিবাদ, আমাদের প্রতিবাদ
তাও শকুনের চোখে জ্বলে হিংসার আগুন
লিপ্সার যন্ত্রণায় পুড়ে নির্বিচারে চালায় গুলি
মুক্ত আকাশে কেঁটে যায় ঘুড়ি,
গাছে গাছে আর ডাকে না পাখি।
পাতা ঝরা বসন্তে ঝড়ে যায়-
রফিক, সালাম, জব্বার বরকত।
বিনিময়ে কয়েকটি তাজা প্রাণের রক্তে
শান্ত হয় পাকিস্তানি শোসকের দল।
সেই ফাগুনেই, রক্তে রক্তে রাঙে রাজপথ।
ফাগুনের এ দিনে দ্বিগুন হয়ে আজ!
এসো জানাই তাদের সালাম, শ্রদ্ধা।
হে বীর যোদ্ধা তোমাদের তরে লাখো সালাম।
প্রতিদানে এসো বাংলায় ভাসি,
ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে আর কোন জাতি?
মায়ের ভাষা বাংলা যে চিরখাঁটি!