[এই গল্পগুলো অতি যত্নে আপনাদের জন্য সাজানো, গল্পগুলো থেকে দারুণ একটি রোমান্টিক অনুভূতি পাবেন। তবে গল্পে কোন ধরণের অশ্লীলতা প্রয়োগ করা হয়নি। তবে গল্পগুলো ১৮+। তাই পড়লে নিজ দায়িত্বে বুঝেশুনে পড়ুন। ]
নববধু
আশিক মাহমুদ রিয়াদ
সবাইকে বিদায় দিতে দিতে প্রায় রাত বারোটা বেজে গিয়েছে। ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে মাহমুদ, বার বার হাই তুলছে। ড্রয়িং রুমে বসে হাই তুলতে তুলতে
মাহমুদের বাম হাতে সিগারেট। ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে সিগারেটে লম্বা টান দিচ্ছে। তার নিউজফিড জুড়ে তাদের বিয়ের ছবি। সিগারেট শেষে করে তার মনে পড়লো তার বেডরুমে আরো একজ্ন আছে। সে মাহমুদের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। তার নাম তিশি। মাহমুদ বেসিন থেকে হায় ধুয়ে ঘরের স্লাইড পড়ে থপথপ পায়ে বেডরুমের দিকে এগোয়। বেডরুমে ঢোকার আগে ফোনের পাওয়ার বাটন চেপে উজ্জ্বল স্ক্রিণে দেখে নেয় সময়। রাত বারোটা ত্রিশ মিনিট। ড্রয়িং রুমে বসেই আধাঘন্টা কেটেছে তার। ড্রয়িং রুমের দরজায় হালকা গা এলিয়ে দিলে দরজা খুলে যায় নিঃশব্দে।
ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সেও। আজ তাদের বিয়ের দিন, বাসর রাত, ফুলসজ্জার রাত। এই রাত নিয়ে শৈশব থেকে উথাল পাথাল গা গরম করা কত গল্প শুনেছে মাহমুদ।
মাহমুদ খাটের কোণে দাঁড়িয়ে ভাবলো। মেয়েটাকে কি সে জাগাবে? জাগানো কি তার উচিত হবে? মাহমুদ ডান হাত বাড়িয়ে দেয় মেয়েটির গায়ের দিকে। হাত সরিয়ে নেয়, মেয়েটার ঘন নিশ্বাস পড়ছে। সে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাকে জাগানো ঠিক হবে না। মাহমুদের মস্তিষ্কে মধ্যে দুটো ভাগ তৈরী হয়ে যায়৷কনশাস আর সাব-কনশাস মাইন্ডের দ্বন্দ। এই দ্বন্দ নিয়েই মেয়েটির পাশের বালিশে শুয়ে পড়ে মাহমুদ। চোখ বন্ধ করে, দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে।
মাহমুদের ঘুম ভাঙে চুড়ির রিনঝিন শব্দে। চোখ খুলে তাকায় । মেয়েটি ঘুম থেকে উঠে বসেছে। হাতের চুরি খুলছে। কানের দুল খুলছে। শ্লমা জড়ানো কন্ঠে মাহমুদ বলে, তুমি উঠেছো? আমায় ডাকলে না কেন? মেয়েটি হকচকিয়ে ওঠে। শ্লমা জড়ানো গলার স্বর শুনে কিছুটা বিব্রত বোধ করে মাহমুদ।
*
এতক্ষণ বাসর ঘরে একা একা বসে থেকে রীতিমতো ভীষণ খারাপ লাগছিলো নববধূ তিশির। সে সবেই আজকে নতুন এক জীবনে পা দিয়েছে। তিশির বয়স যে খুব একটা বেশি এমন না, সবে মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে। কলেজে থাকতে তার বয়ফ্রেন্ড তাকে ধোকা দেওয়ার পরেই গোটা পুরুষ জাতির ওপর থেকে তার শ্রদ্ধা বোধ উঠে গিয়েছিলো। এই বিয়েতে কোন মত ছিলো না তিশির। বাবা তাকে একপ্রকার জোর করেই এই মানুষের সাথে বিয়ে দিয়েছে। তবুও তার প্রথম দর্শনে ছেলেটাকে খুব একটা খারাপ লেগেছে তাই না। কলেজ থেকে ফেরার পথে বাসার সামনে এত সুদর্শন একটি ছেলেকে দেখে সে খানিকটা অবাকই হয়েছিলো। ছেলেটি তাদের গলির মুখে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্ক হয়ে অন্যদিকে ফিরে সিগারেট টানছিলো এমন সময় হাজির তিশি। তিশির গায়ে ধাক্কা লাগতেই খানিকটা বিব্রত বোধ করে। তিশিরও তাড়া ছিলো ভীষণ, বাসায় গিয়ে যখন তিশি আর মাহমুদ দু’জন দু’জনকে আরও একবার দেখে সেদিনই চমকে গিয়েছিলো। ছেলেটির সাথে আলাদা কথা বলেছে তিশি, ব্যবহারে ভীষণ স্মার্ট মনে হয়েছিলো সেদিনই।
বিয়ের প্রথম রাত নিয়ে ভীষণ নার্ভাস তিশি। ছেলেদের বিশ্বাস করতে নেই, প্রথম রাতেই তাদের লোলুপ লালসা জেগে ওঠে। অবশ্য এটাকে তিশি গোটা ছেলে জাতির দোষ দিচ্ছে না বটে, কারণ এ বিয়েতে তার মত ছিলো না দেখে অচেনা অজানা এক যুবকের সাথে ঘর বাঁধতে ছুটে এসেছে। মাহমুদ ঘরে প্রবেশ করে, ঘরে ডিম লাইট জ্বালানো। ফুলসজ্জ্বা রাত বলে সারা ঘরে ফুলের বাগান করে রেখেছে। মাহমুদ খাটে বসার আগে তিশির অনুমতি নেয়, “বসতে পারি”
তিশি মিহিগলায় মৃদু সুরে বলে, “বসুন”।
-এ কি আপনি তো দেখছি এখনো কিছু খোলেনই নি। তিশি ছেলেটির দিকে হক চকিয়ে তাকায়। এ কি? যেটুক শ্রদ্ধাবোধ ছেলেটির প্রতি জন্মেছিলো সেটুকুও নষ্ট হয়ে গেলো।
মাহমুদ অভয় দিয়ে বলে, “আপনি আপনার কাপড় চেঞ্জ করে কম্ফোর্টেবল কাপড় পড়ুন। শাড়ি পরে সারারাত ঘুমাতে আপনার কষ্ট হতে পারে। বাই দ্যা ওয়ে, আগে শাড়ি পড়ে ঘুমিয়েছেন কখনো?
তিশি মাথা নাড়ায়, “ঘুমায় নি”। মাহমুদ আরও এক দফা তিশির জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মুশকিল হলো, তিশি যে তার নিজেস্ব জামা কাপড়ের ব্যাগটি এনেছিলো সেটি খুঁজে পাওয়া যাচ্চে না। তাই উপায়ন্তুর হয়ে সে আরও একবার মাহমুদকে ঘরে ডেকে নেয়। জানায় সে ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছে না। ঘড়ির কাটায় ঠিক বেজে একটা। সারা ফ্লাটে দু’জন ব্যাগ খুঁজে পায় না। উপায়ন্তুর হয়ে মাহমুদের ট্রাউজার আর টিশার্ট বের করে দেয়। ঠিক আরও একবার যখন মাহমুদ ঘরে প্রবেশ করে তখন তিশিকে দেখে যেনো থ বনে যায়। ট্রাউজারের সাথে টিশার্ট, এ যেনো স্বর্গের কোন অপ্সরী দাঁড়িয়ে আছে। এতক্ষণ অন্ধকারে ছিলো আর বিয়েতে কেমন যেনো লাজুকতার কারণে সে তার নববিবাহীতা স্ত্রীকে দেখতে পারেনি।
*
মাহমুদ চোখের পলক ফেলছে না দেখে মাহমুদের সামনে হাত নাড়ায় তিশি। এরপর ভ্রম ভাঙে মাহমুদের, তিশি মুখে হাত দিয়ে মৃদু হাসে। সেই হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পরে সারা ঘরে। মাহমুদ তিশির প্রশংসা করে বলে, “আমার সহধর্মিনী হিসেবে আপনার মতো রূপবতী কাউকে পাবো সেটা ভাবতেই পারিনি।” আমি ভীষণ লাকি তিশি। আমি আপনার পরিবার মারফত জেনেছি, আপনার ডাক্তার হওয়ার ভীষণ ইচ্ছা। আমি এও জেনেছি যে, আপনার এই বিয়েতে কোন মত ছিলো না। তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। আমি আপনার কোন স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করবো না। তিশি বিয়ের আগে এও জেনেছিলো এই ছেলে তার বাবার কাছ থেকে কোন জামাই আবদার করেনি। জামাই আবদার বুঝলেন তো? অর্থাৎ কোন যৌতুক গ্রহণ করেনি। শুধু তিশির বাবাকে বলেছিলো, “আপনি আপনার ঘরের সবচেয়ে দামি জিনিস আর সবচেয়ে আলোকিত জিনিস আমার ঘরে পাঠাচ্ছেন। আমার কাছে এর থেকে বড় সৌভাগ্যের কিছু হয় না।” তিশির এতোদিন এসবে খেয়াল ছিলো না, ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে। তবে বিচার বুদ্ধিতে সে ভীষণ এগিয়ে। তাই নিমিষেই মাহমুদের ওপর জমে থাকা মৃদু ক্ষোভ আর রাগ সে একঝাপটায় দূর করে ফেললো।
মাহমুদ বললো, “সারাদিন অনেক পরিশ্রম গিয়েছে আপনার” আপনি শুয়ে পড়ুন। আপনার যদি কোন অসুবিধা হয়, তাহলে বলুন। আমি বাইরের ঘরে সোফায় গিয়ে শু’চ্ছি। হঠাৎ করেই তিশি যেনো বুকের ভেতরে অদ্ভুত এক হাহাকার অনুভব করে। এমন মানুষকে তার স্বামী হিসেবে পেয়েছে ভেবে সৃষ্টার কাছে ভেতরে ভেতরে কৃতজ্ঞতা জানায়। পরম ভালোবাসায় সে জীবনে প্রথমবার কোন ছেলেকে জড়িয়ে ধরে। মাহমুদ খানিকটা অবাক হয় বটে, তবে যখন শুনতে পায় তার গলার কাছে তিশির চোখ থেকে দরদর করে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। তখন সে তিশিকে কাছে টেনে নেয়। শরীর থেকে তিশিকে টেনে উঠায়, তিশির মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। দু’হাতে তিশির গাল চেপে পরম ভালোবাসার কন্ঠে বলে, “আমাকে প্লিজ একটু ভালোবাসবেন তিশি?” কথা দিচ্ছি, একটু ভালো বাসলে তার একশো গুন ভালোবাসা পাবেন। তিশি আবারও জড়িয়ে ধরে মাহমুদকে। এরপর হয় লোডশেডিং। পরম ভালোবাসার আলিঙ্গনে সে রাত এভাবেই কেটে যায় নববিবাহীতাদের।
গল্প-১
বাসর রাতে বউকে তুই বলে ডেকেছিলাম। বলেছিলাম তুই আমাকে আপনি করে ডাকবি। কাছে ঘেষার চেষ্টা করবিনা কখনো। কারণ বউছিলো পুরাই কয়লার ড্রাম। কুচকুচে কালো তার গায়ের রং। বাসর ঘরে ঢুকে বিছানায় তাকিয়ে দেখি যেন ঠিক একটা কালো কুকুর বসে আছে লাল ঘোমটা দিয়ে। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, কপালে ঢ্যামা একটা টিপ। ওয়াক থু, কি বিচ্ছিরি সাজ। লাল কালোয় কি এক অগোছালো সাজ। বাতি বন্ধ করতেই বুঝলাম যেন একটা আধার নিয়ে শুয়ে আছি। নেহাৎ যৌনতার দায় সারা হয়েছিল সে রাতে। তারপর বিছানা থেকে তুলে দিয়েছিলাম তাকে।
.
যৌতুক বিরোধী ছিলাম আমরা। তাই বাবার বক্তব্য ছিলো বিনা যৌতুকে নিজের আত্মীয়ের কারো মেয়েকে পুত্রবধু করে আনবেন। তাই হল। হাজারো অনিচ্ছা স্বত্তেও বাবার গরিব বন্ধুর কালো মেয়েকে বিয়ে করতে হল আমায়। কলেজের সেলফি বয়ের এমন একট বউ জুটলো, যে জীবনে বউকে নিয়ে আর সেলফি তোলা যাবেনা। বন্ধুরা অনুরোধ করত বউ নিয়ে বেড়াতে আসতে। কিন্তু আমি তাকে নিতামনা। লজ্জা আছে তো নাকি। রাতে বাড়ি ফিরতাম দেরি করে। তখনো সে জেগে থাকত। খাবার বেড়ে দিত। কথা বলতাম না আমি। কিভাবে বলি, বারে, ডিস্কোতে সুন্দরী মেয়ে দেখে বাড়িতে কি অমন আলকাতরা ভালো লাগে? ওর কি প্রয়োজন সেটা কোনদিন জিজ্ঞেস করিনি। বাড়িতে সবার কাপড় কেনাহত, খাবার তো আছেই। আর কি চাই? এভাবেই কেটে গেল কয়েকমাস।
.
সেদিন একবন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডকে গিফট দেয়ার জন্য কিছু কিনেছিল। সেটা আমাকেই পৌছে দিতে হবে। অনেকরাত গিফট বক্স নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আমি। দেখলাম সে সোফায় ঘুমিয়ে গেছে। ভাবলাম খেয়েছে তো? আমি না আসা পর্যন্ত আবার ওকে খেতে দেখিনি কোনদিন। শুয়ে পরলাম। কিন্তু মনটা বড় খচখচ করছে। ডেকে তুলে বললাম, খেয়ে তারপর শুবি। পরদিন সকালে গিফট বক্স খুজে দেখি ওটা আর আস্তনেই। ও ওটা খুলে ভিতরে যা ছিল ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে। ওর খুশি মুখ দেখে কিছু বললামনা। বেচারী। কালো বলে কি সাজতে নেই? নিজেই হেসেছিলাম সেদিন। তারপর নতুন করে গিফট সাজিয়ে পৌছে দিলাম আমি। তারপর একদিন ও বমি করলে বুঝলাম ও মা হতে চলেছে।
.
এক শীতের বিকেলে বাবা মা বেড়াতে গেলেন গ্রামে। বাসায় রইলাম আমি আর সে। সে রাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলাম। কারণ বাড়ি পুরো একা। গ্রাম্য মেয়ে। বলা যায়না ভুতের ভয়টয় পায় নাকি। বাসায় ফিরে শুনলাম রান্না হয়নি। কারণ জানতে চাইলে ও বলল, ভেবেছিলাম আপনি বন্ধুদের সাথে খাবেন। দুপুরের কিছু ভাত ছিল। আমার হয়েযাবে। তাই, ফ্রিজ খুলে দেখলাম। সামান্যই ভাত। বললাম চল, কাপড় পরে নে। হোটেলে খাবি। ও যেতে চাইলনা। আমিও রেখে যেতে পারছিনা একা বাড়ি বলে। অবশেষে দুজনে বাহির হলাম। রাতের শহর ও যেন হা হয়ে দেখছিল। বললাম হাত ধর, নাহলে ভীড়ে আবার হারিয়ে যাবি। সেদিন প্রথম ও আমার সাথে বেড়িয়েছিলো, প্রথম আমার হাত ধরেছিল। মন্দ না। আমিও ওর আঙুল ধরেছিলাম যাতে ও হারিয়ে না যায়! হোটেলে আমাকে আপনি করে বলবিনা, তুমি করে বলবি আচ্ছা? মাথা নাড়ল ও। কিন্তু হোটেলে খাবার সময় ও একবারো আমায় ডাকেনি। উল্টো আমিই বলেছিলাম, তুমি আরো কিছু খাবে!
.
সেদিন দেখি স্নোর টিউব কেটে স্নো বাহির করছে। রেগে বললাম, স্নো ফুরিয়ে গেছে বলতে পারোনা? সেদিনই সে প্রথম আমার কাছে শ্যাম্পু চেয়েছিল। আমি সেদিন ওকে নিয়ে মার্কেটে গেলাম কসমেটিকস কিনতে। বন্ধুরা অনেকেই দেখেছিল সেদিন কিন্তু সবাই ভাবি বলে যথেষ্ঠ রেসপেক্ট করেছিল। সবাই তিনদিন পর আড্ডাতে আসার জন্য অনুরোধ করছিলো ওকে। তিনদিন পর আমিই ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম মোটর সাইকেলে। ওর জীবনের প্রথম লংড্রাইভ আর ড্রাইভার ছিলাম আমি। আর আমার বউকে নিয়ে প্রথম।
.
জীবনের প্রথম ওরজন্য আজ খোদার দরবারে হাত তুলেছি আমি। ও যেন সুস্থ থাকে। কারণ আজ ও মা হবে। আমি বাবা হব। জানিনা কোথা থেকে আজ এতো কান্না আসছিল আমার। হাসপাতালে ওর কাছে বার বার ছুটে যাচ্ছিলাম। ও হাতধরে যতবার বলেছিলো ওর খুব ভয় করছে, ততবারই বলেছি ভয় পেওনা আমি আছি। সেদিন ও কাউকে খুজেনি শুধু আমায় খুজেছে। আমায় পাশে থাকতে বলেছে বার বার। আর আমি, বার বার পর্দার ফাকে বার বার ওকে দেখলাম। সিজারে নেওয়া হয়েছিলো ওকে। সন্তান পেলাম। কিন্তু ওকে পেলাম না। ওর দেহটা ধরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম। মনে হচ্ছিলো খুব যেন নিজের কলিজাটা ছিড়ে গেছে। আজো ওর কবরের পাশে ছুটে যাই। চিৎকার করে বলি, ফিরে এসো তুমি, একটা রাত তোমার সাথে গল্প করা বাকিছিলো, একটা সেলফি তোমায় নিয়ে তোলার ছিল। জানি ওকে ভালবাসা দিতে পারিনি। কিন্তু আজ বুঝছি কেন এখনো বুকের বামপাশটা চিনচিন করে ব্যাথা করে।
গল্প-২
বাসর ঘরে ঢুকে দেখি কারেন্ট গেছে।নববধূ ঘুমিয়ে আছে।এইতো সুযোগ,যা করার এখনি করতে হবে।ঘুমন্ত অবস্থায় এসব করতে দারুণ মজা লাগে। অসম্ভব রুপবতী একটা মেয়ে বউ সেজে ঘুমাচ্ছে।খুব গরম লাগছে।হাতরে হাতরে পুরো ঘর খুঁজলাম,কোথাও বাতাস করার মতো কিছু নেই।গরমে ঘেমেই আলতো ভাবে নববধূর পাশে বসলাম।খুব সাবধানে কানের দুল,গ”লার হার খুললাম।মিনিট দশেক পর নববধূ ধড়ফড়িয়ে উঠলো। লাজুক হেসে বললো ” ডাকেননি কেনো!রাত অনেক হয়েছে তাই না! ”
” হু ”
” তো চলুন ”
বিস্মিত হয়ে বললাম ” কোথায়? ”
” আজ তো আমাদের বাসর রাত।বাসর করতে হবে না? ”
কথাটা বলে নববধূ আমায় জ”রিয়ে ধরলো।নববধূকে ভয়ে বলতেও পারছি না যে আমি ওনার স্বামী নই।আমি চোর,কারেন্ট গেছে এই সুযোগে চুরি করতে ঢুকেছি।
***
গল্প-৩
সেদিন বাসর রাতের কথা আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে। সব মেয়েদের মত আমার মনের ভিতরও একটা ভয় কাজ করছিল।তবে আমার ভয়টা একটু বেশিই ছিল। কারন বাসর রাতেই আমার এক বান্ধুবী গর্ভবতী হয়ে যায় সেই কারনেই ভয়টা একটু বেশি ছিল। রাত ১১টায় ও মানে আমার স্বামী আরাফাত রুমে আসে, তাকে দেখেই আমার শরীর ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। ভাবছিলাম এই বুঝি এসেই শুরু করে দিবে। দাদি অনেকবার করে বলে দিছিলো,”জামাই যখন ঘরে ডুকবে তখন পা ছুঁয়ে সালাম করবি”তাই অনিচ্ছা সত্বেও পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলাম অমনি ও আমাকে ধরে ফেললো। বললো “এই করো এই গুলা! তোমার স্থান আমার পায়ে না! আমার বুকে”। কথাটা শুনে মনের ভিতর অদ্ভুত রকমের একটা প্রশান্তি পেলাম। তারপরে ও আপন মনেই বলে গেল এই গরমের মাঝে এই রকম মোটা শাড়ি পরে আছ কেন ? এটা খুলে সুতির শাড়ি পর। এই বলে ও আমাকে একটা সুতি শাড়ি এনে দিল অন্য ঘর থেকে। দিয়ে সে বারান্দায় গিয়ে বসল বলল শাড়িটা চেঞ্জ কর। শাড়ি চেঞ্জ করার পরে ও বলল আস দু রাকাত নফল নামাজ পরে আমাদের নতুন জীবন শুরু করি। অনেকটা সস্তি পেলাম ওর কথা শুনে।
এখন শুধু একটাই সমস্যা ক্ষুধা!! এমনতেই বিয়ের টেনশনে দুপুরে কিছু খেতে পারিনি। ক্ষুধায় পেট চো চো করছে। ক্ষুধা খুব আজব জিনিষ মানুষের জন্ম হোক বা মারা যাক ক্ষুধা থেমে থাকে না। আমার নানা যখন মারা গেল তখন সে বাড়িতে বিরাট কান্নার রোল এদিকে আমার এমন ক্ষুধা লেগেছে। এখন মৃত বাড়িতে তো আর খাবার চাওয়া যায় না। পরে দূর সম্পর্কের এক মামি আমাকে সে দিন খাইয়েছিলেন।
.
নামাজ শেষে হতেই দরজায় টোকা শুনলাম ও দরজা খুললে ওর এক খালা অনেক ধরণের খাবার নিয়ে আসলো। খালা চলে গেলে সে আপন মনেই বলতে লাগল আর বলো না তোমাদের বাড়িতে যে খাবার দিয়েছে সেগুলো আমি কিছুই খেতে পারিনি লজ্জার কারণে। ওর কথা শুনে আমি ফিক করে হেসে ফেললাম। সে রাতে আমার ২টা পর্যন্ত বারান্দায় বসে গল্প করলাম।আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটা রাত ছিল সেই রাত বাইরে ছিল উথাল পাতাল জ্যোৎস্না আর হালকা বাতাস সব মিয়ে একটা চমৎকার পরিবেশ।
.
ঐদিন জীবনে অনেক কিছু শিখলাম। বাসর রাতের সম্পর্কে আমার যে ভুল ধারণা ছিল সেটা ভেঙ্গে গেল। ওদের সরি ওদের কেন বলি আমাদের সংসার সম্পর্কে অনেক টপ সিক্রেট বিষয় জানলাম। যেমন ওর বাবার সব কথায় বলতে হবে “হ্যাঁ”। শ্বশুর আব্বা যদি সকাল ১০ টার সময় সে বলে এখন বিকাল।আমাকে অবশ্যই তার থেকে বেশি জোড় দিয়ে বলতে হবে হ্যাঁ বাবা এখন বিকাল কি? সন্ধ্যা হবহব করছে। আর মা মানে আমার শাশুড়ি আম্মার সামনে বোকা সেজে থাকতে হবে যেন কিছুই জানি না। এতে শাশুড়ি আম্মা রাগ করে না বরং খুশিও হয় হালকা স্নেহের ধমক দিয়ে বলবে বউ মা সারাজীবন কি শিক্ষা করলা শুধু কি পড়ালেখাই করছো আর কোন কাজ শিখ নাই? এই বলে সে নিজ হাতে সেটা দেখিয়ে দিবে খুশি মনে।
.
যেমন একটা ছোট উদাহরণ দেই। ডালে রান্না করার সময় লবণ আমি ঠিক মতই দিতে পারি কিন্তু আমি ইচ্ছা করেই ডালে নিজে লবণ দেই না আমার শাশুড়িকে ডেকে এনে লবণ দেওয়াই। এতে শাশুড়ি আম্মা খুব রাগের ভান করে বলে এত বয়স হইছে এখন ও ডালে লবণ দিতে পার না আমি না থাকলে কি করবা? আমি কিছু বলি না শুধু হাসি। অবশ্য ডালে নিজ থেকে লবণটা না দেওয়ার বুদ্ধি আমার না এই বুদ্ধি টা ওর মানে আমার স্বামীর। একদিন জিজ্ঞেস করলাম এই হাস্য কর কাজটা করার দরকার কি?
.
উত্তরটা ছিল এই রকম ও বলল…… মনে কর তুমি একটা অফিসে অনেক দিন ধরে কাজ করছো হঠাৎ করে তোমার যায়গায় একটা নতুন লোক রাখা হলো যে তোমার সব কাজ করবে।তুমি তখন বেকার হয়ে গেলে এক পর্যায় তুমি তাকে তোমার প্রতিধন্ধি ভাববে মনে করবে সে না থাকলে তো তুমি থাকতে তখন সে নানা ভাবে তোমার পিছে লাগবে। আর যদি তোমাকে না সরিয়ে দিয়ে তোমার কাজ কমিয়ে দিয়ে তোমাকে তার বস করে দেয় আর সেই কর্মচারী যদি হয় তোমার আনুগত্য তাহলে তোমার ভালই লাগবে।
.
ঠিক তেমনি এই কাজ গুলো আম্মা এতদিন দেখা শুনা করতো এখন তুমি করছো আর সব কাজ যদি তুমি করো তখন আম্মা মনে মনে ভাববে সব দায়িত্ব তুমি নিয়ে নিছ তার কোন মূল্য নেই তখন সে নিজেকে বেকার মনে করবে তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। তাই এই সামান্য ডালে লবণ দেওয়াটাকেই সে মনে করে এখন ও সংসারে তাকে দরকার। সে দিনি বুঝে ছিলাম আমার জীবনের সবচেয়ে ভাল বন্ধু হবে ও এবং হয়ে আছে আমার স্বামী………সংসার জীবনে প্রবেশ করেছি আজকে অনেক দিন কিন্তু কোন দিন মনে হয়নি এটা আমার বাবার বাড়ি থেকে খারাপ বরং মনে হয়েছে বাবার বাড়ি থেকে ভালই আছি। এর সবের মূলে রয়েছে আমার স্বামী। একই সাথে সে আমার বন্ধু , স্বামী , পরামর্শ দাতা, গার্জিয়ান সব কিছু। আল্লাহ যেন এমন স্বামী! প্রতিটা মেয়েকে দেয়।
লেখাঃ আরাফাত রুবেল(আদু ভাই)
গল্প-৪
শাড়িটা খুলবো?”, আমি ইতস্তত করে বললাম। জেনি ঘোমটা দিয়ে ঠায় বসে আছে। নিঃশ্বাস পর্যন্ত নিচ্ছে না মনে হচ্ছে দেখে। আমি আবার বললাম, “ খুলবো?”। মেয়েটা চুপ করেই থাকলো। আমি বেশ কিছুক্ষণ ওর দিকে জবাবের আশায় তাকিয়ে থাকলাম। দিলই না জবাব। গভীর একটা দীর্ঘশ্বাস আমার গলা চিরে বের হয়ে গেল। বাসর রাত সম্পর্কে যে ধারণাগুলো মনের কল্পনায় ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যেতে থাকলো। ছোটবেলা থেকে বাসরঘরে নর-নারীর আদিম উপাখ্যানের ধারণা পাওয়া আমি হঠাৎ করে ভেঙ্গে পড়লাম।
জেনি এখনও মাথা নিচু করে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। আমি বিছানা থেকে নেমে পড়লাম। ঘরের সাথে লাগোয়া বাথরুমের দিকে যেতে যেতে ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললাম, “শুয়ে পড়।”, একটু থেমে আবার বললাম, “ আর হ্যাঁ, কাপড়টা বদলে নিয়ো। তোমার স্যুটকেসটা খাটের ঐ কোণার নিচে আছে, ওখান থেকে কোনো একটা পড়ে নিয়।” জেনি সামান্য মাথা নাড়ালো। আমি বাথরুমে ঢুকে পড়লাম। দরজাটা আটকিয়ে দিলাম। বেসিনের সামনে যেয়ে দাড়ালাম। ভেসিনে উপরে দেয়ালে বিশাল আয়না। আমাকে দেখা যাচ্ছে সেখানে। ঘামে তেলতেলে হয়ে আছে মুখটা। চুলে হাত বোলালাম, আঠাআঠা হয়ে আছে। টেপ খুললাম। শো শো শব্দে পানি পড়ছে বেসিনের গায়ে। পানির ছিটে মুখে এসে লাগছে। সারাদিন ভালো ধকল গেছে। বসেই ছিলাম সারাক্ষণ, কিন্তু তাও ঘেমে নেয়ে একেবারে একাকার হয়ে গেছি।
টেপের পানিতে অনেকক্ষণ হাতের থাবা দুটো ভেজালাম। একসময় শীতের পরে বসন্ত আসতো। এখন আর আসে না। এবছরের শীত প্রায় কেটে গেছে, বসন্তের পরিবর্তে ভ্যাঁপসা গরম পড়তে শুরু করেছে। আরামই লাগলো ঠান্ডা পানিতে হাত দুটো ধরে থাকতে। মনে হোলো, ভেতরের অশান্তি তো কিছুটা কমলো।
টেপের পানি বন্ধ করে দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে গায়ের জামা খুলতে শুরু করলাম। আয়নার আমির সাথে আমার আমির চোখাচোখি হতেই একটা লজ্জা, হতাশা বুকে ভেতরে এসে বাঁধল। বৌকে মানাতে পারলাম না! কেন আমি চিরকাল এমন! সামান্য জোর পর্যন্ত খাটাতে পারলাম না নিজের কারো উপরে! নিজের উপরে! কেন?
কাপড় গুলো একপাশে ছুড়ে ফেলে শাওয়ারের নিচে যেয়ে দাঁড়ালাম। অন করে দিলাম শাওয়ারটা। ঝিরিঝিরি করে পানি এসে মুখে লাগলো। আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ভালো লাগছে আমার, একটু একটু, তবুও ভালো লাগছে।
হঠাৎ জেনি! জেনি কে আমি প্রথম দেখেছি ওদের বাড়িতে। সুন্দরী, ষোড়শী, কেশবতী। চেহারার শিশুসুলভ ভাব এখনও কিছুটা থেকে গেছে। ভালোই লেগেছিলো ওকে আমার। আমি হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। সবচেয়ে বড় কথা, আমার বাবা-মা ও হ্যাঁ করে দিয়েছিল। এক বসাতেই ডেট ফাইনাল। মাঝখানে একদিন আংটিবদল হোলো শুধু। জেনিকে অবশ্য সামান্য অপ্রস্তুত মনে হয়েছিল, কিন্তু, আংটি বদলের সময়ে তো সব মেয়েই কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তাই না? আফটার অল, এটা ওর প্রথম বিয়ে, একটু অপ্রস্তুত তো ও হতেই পারে।
এখনকার বিয়ে গুলোয় যেমনটা হয়, ওমন আমাদের বেলায় হয়নি। না হওয়ার পেছনে কারণ ছিল। জেনির মানসিক অবস্থা তেমন ভালো ছিলো না। সদ্য সদ্য গর্ভপাত হয়েছিল, মানসিক ভাবে বেচারি একেবারে ভাঙ্গা তখন। তারপর উপমহাদেশে যেমনটা হয়, খুব তাড়াতাড়ি ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। আমার সাথে।
মানসিকভাবে আনস্টেবল কারো সাথে সুস্থ কারো বিয়ে হবে এটা নিশ্চয় কোনো মানুষ মনে মনে কল্পনা করবে না। সুতরাং জেনির কপালে আরেকজন মানসিক রোগীর আদরই এসে জুটলো। হ্যাঁ, আমি নিজেও মানসিকভাবে অতটা সুস্থ নই। আজকের আগে অনেক কয়টা বছর এক ঘরে আটকা থেকে জীবন কাটিয়েছি। কেউ আমাকে আটকে রাখেনি, আমি নিজেই ঘর থেকে বের হতাম না। আমি জানি আমার অসুখটা ভয়ংকর। অসম্ভব রকমের ভয়াবহ। খুব ছোটবেলায় এই অসুখের ঘোরে এক ছেলেকে খুন করেছিলাম আমি। আমার এখনও মনে আছে। গোলগাল চেহারার একটা ছেলে, চশমা পড়তো। একদিন… থাক বাদ দেই। ভালো কথা হচ্ছে, সেই খুনের জন্য আমি ধরা খাইনি। ধরা পড়েছিলো সেসময়ে এলাকার উঠতি মাস্তান বাচ্চু ছাদেক। যাবজ্জীবন জেল হয় বেচারার।
জেনির বাবা বিশাল ধনী। আমাদের তুলনায় কম, কিন্তু তাও দেশের ভিতরে উনি টপ টেন ব্যবসায়ীদের একজন। মেয়েকে তিনি চাইলেই সুস্থ কারো সাথে বিয়ে দিতে পারতেন। কী জানি কী বুঝে আমার সাথে বিয়ে দিলেন। আমার বাবার বিশাল ধন-সম্পত্তি দেখে? মনে তো হয় না। টাকার জন্য মেয়েকে উলটাপালটা জায়গায় পাঠাবেন, এমন লোভী ওনাকে দেখে মনে হয় না। সম্ভবত উনি নিজের মেয়ের উপর রাগ করে আছেন। হাজার হোক, অনেক আদরের ছোট মেয়ে যদি কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে যেয়ে তিন মাস পরে ফিরে এসে কেচ্ছা কাহিনি শোনায়, তাহলে মেয়ের উপর রাগ করাটাই স্বাভাবিক।
এই রাগের কারণেই বোধ হয় মেয়েকে এবর্শোনের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে কোনো ধরণের সময় দেননি। ডাইরেক্ট ধরে বেঁধে আমার মত কারো কাছে বিয়ে দিয়েছেন।
আমার ঘরের বাথরুমের দেয়ালে তিনটা প্লাইউডের তাক আছে। নীচের দুই তাকে বেশ কিছু মন শান্ত রাখার বই আছে। অল্প কিছু গল্পের বইও আছে। তবে সেগুলো পড়তে পারি না আমি। গল্প পড়লে আমার অসুখটা বেড়ে যায়। ভয়ংকরভাবে বেড়ে যায়। আমার ভেতর অসুখ যে আমিটাকে সৃষ্টি করেছে সেটা বেরিয়ে আসে। মস্তিষ্ক দখল করে নিতে চায়। আমার উন্মত্ত্বতা প্রকাশ পায়। বড্ড অসহায় লাগে তখন।
সবার উপরের তাক থেকে লাফবয় প্লাস সাবানটা নিয়ে গায়ে সাবান লাগানো শুরু করলাম। আচ্ছা, বাইরে এতক্ষণে নিশ্চয় জেনি ঘুমিয়ে গেছে। নাকী স্বামীর জন্য জেগে বসে আছে বিছানায়। আমি শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে ফিক করে হেসে ফেললাম। স্বামীর জন্য জেগে বসে থাকবে! গশ! আমি দেখছি ভালোই চিন্তা করতে জানি!
২
গোসোল শেষে তোয়ালে পড়ে বের হয়ে আসলাম বাথরুম থেকে। বিছানার দিকে তাকালাম। খাটটা ফাঁকা, একপাশে শুধু জেনির নববধূ রঙ্গা শাড়িটা ভাজ করে ফেলে রাখা। আমি ঘরের চারদিকে নজর বোলালাম, নাহ এখানে তো নেই। নিশ্চয় বারান্দায় গেছে। এঘরের দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ। বারান্দা ছাড়া আর কোথায় যাবে ও?
আমাদের বাড়ির এই আমার ঘরের বারান্দাটা মোটামোটি ভালোই সুন্দর। সুন্দর বলতে যেনতেন সুন্দর না, ভালো সুন্দর। এই বারান্দায় জোছনা রাতে জোছনা পড়ে, গরমের দিনে দখিণা হাওয়া ঢোকে, আর দিনের বেলায় চাল ছিটিয়ে দিলে মাঝেমধ্যে চড়ুই পাখিরাও উড়ে এসে বসে কিচিরমিচির শুরু করে। তার উপর, এখানে এসে দাঁড়ালে বাড়ির পেছনের পাঁচিলে ঘেরা বাগানটা দেখা যায়। চাঁদের নীল আলোয় অথবা দিনের বেলায় অথবা সবসময়ের জন্যই, তাই জায়গাটা চমৎকার। আমি বেশিরভাগ সময় এই বারান্দাতেই বসে কাটাই। বাবা একটা দোলনা সেট করে দিয়েছে বারান্দায়, ওখানেই বসে বসে মন শান্ত রাখার বইগুলো পড়ি। মাঝে মাঝে চা খাই। ঘরবন্দি জীবনটা একেবারে খারাপও কাটে না। চলে যায়, মোটামোটি ভালোভাবেই কেটে যায় দিনগুলো।
একটা টিশার্ট আর থ্রিকোয়ার্টার পড়ে বারান্দায় চলে আসলাম। ঠিকই ভেবেছিলাম। জেনি এখানেই আছে। নীল রং এর ম্যাচিং সালোয়ার-কামিজ পড়েছে। গায়ের ওড়নাটা কালো রং এর, লাল বর্ডার করা। আমি কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে থাকলাম,মানিয়েছে খুব ড্রেসাপটা ওকে। সহসা মুখ ঘুরিয়ে ফেললাম। থাকুক কিছুক্ষণ একা মেয়েটা। প্রতি চার ঘন্টায় একবার করে ঔষধ নিতে হয় আমার। আমি ঘরের ভেতরে চলে আসলাম।
“ এইযে…”
কানে একটা একটা মিহি কন্ঠস্বর টোকা দিল। আহ! জেনির গলা তো জোস! গান…গান জানে নাকি মেয়েটা? আমি পেছনে মুড়ে আবার বারন্দার মাঝে এসে দাঁড়ালাম। জেনির দোলনায় চুপ করে বসে আছে। জোছনা রং এর আভা ওর মুখের উপর এসে পড়ছে। পরীদের মতো দেখাচ্ছে ওকে!
আমি আস্তে করে ওর পাশে গিয়ে বসলাম। অনেকক্ষণ কোনো কথা হোলো না। শেষে আমিই ওর দিকে তাকিয়ে উশখুশ করে বললাম, “ ডাকলে যে?”। ও কোনো জবাব না দিয়ে আমার মুখের দিকে তাকালো। অনেকক্ষণ , বেশ অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকল ও।ব্যাপারটা অস্বস্তিকর, কিন্তু আশ্চর্য তাও আমার তেমন খারাপ লাগছে না!
“ আচ্ছা আপনার বয়স কত?”
বয়স কত! এটা কী ধরণের প্রশ্ন! আমি আমতা আমতা করে বললাম, “ বত্রিশ!”। ও কিছুটা বিস্মিত গলায় বলল, “ আপনাকে দেখে তো এত বয়স্ক মনে হয় না!”। কিছু বলতে যাচ্ছিলাম আমি, ওর কথা শুনে হেসে ফেললাম। কিছুটা রিলিফও পেলাম। তাহলে, অবশেষে মেয়েটার ঠোঁটে কথা ফুটছে।
“ উম, আপনি আসলে দেখতে সুন্দর। আসলেই সুন্দর।”, জেনি বিস্মিত গলায় বলল। আমি আমতা আমতা করে করে বললাম, “ তুমিও।” জেনি মুচকি হাসি হাসলো আমার দিকে তাকিয়ে।
“ আপনার মনটা কিন্তু অতটা ভালো না। আমি অত্যন্ত কাওকে বলতে শুনিনি, বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই বলে শাড়ি খুলো! আশ্চর্য মানুষ আপনি। এভাবে বিনয়ের সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে আমি কাওকে দেখিনি। বই আর মুভিতে অবশ্য এরকম ক্যারেক্টার দেখেছি, কিন্তু বাস্তবে কখনও দেখিনি। এটাই কী আপনার মানসিক রোগ? “
আমি স্থির চোখে তাকিয়ে থাকলাম সামনে বসা মেয়েটার দিকে। ভালো বুদ্ধি, বেশ ভালোই বুদ্ধি মেয়েটার! কথা শুনে মনেই হচ্ছেনা কয়দিন আগে এবর্শোনের ভেতর দিয়ে গেছে।
লেখাঃ রিফু
গল্প-৫
বাসর ঘরে ঢুকলাম।অন্ধকার রুম।ফোনের ফ্লাস জ্বালালাম।নববধূ ঘুমাচ্ছে।গা ঘেমে জবজব করছে।
কারেন্ট নেই।ফোনের আলোয় মেয়েটাকে দেখে খুব মায়া হলো।অসম্ভব রুপবতী ছোট্ট একটা মেয়ে বউ সেজে ঘুমাচ্ছে।অতি চমৎকার দৃশ্য।পুরো ঘর খুঁজলাম,পাখা নেই।থাকার কথাও না।আমি কখনো পাখা দিয়ে বাতাস করিনা।
টেবিল থেকে বইয়ের ভারী কভার ছিঁড়লাম।আলতো ভাবে নববধূর পাশে বসলাম।ওর মুখের কাছে বাতাস করছি।বাতাসে ওর চুলগুলো একবার একদিক একবার ওদিক নড়ছে।মিনিট দশেক পর নববধূ ধড়ফড়িয়ে উঠলো।
লাজুক হেসে বললো ” ডাকেননি কেনো!রাত অনেক হয়েছে।সেই কখন খেয়েছেন।খিদে পেয়েছে? ”
মেয়েটার সরল প্রশ্নের মুগ্ধতায় ডুবলাম।অতি রুপবতী মেয়েদের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায় না।চোখ সরিয়ে নিলাম।
এরপর থেকেই রোজ রাতে খেয়াল রাখি কখন কারেন্ট যাবে।কারেন্ট গেলে বইয়ের কভার দিয়ে বাতাস করি,মন ভরে ওকে দেখি।মাঝেমধ্যে বু”কে খুব সাহস সঞ্চয় করে ওর লাল পাতলা ঠোঁ”টে আমার ঠোঁ”ট স্পর্শ করাই। সঙ্গে সঙ্গে ওর শরীর কেঁ”পে ওঠে। প্রতিবারই ভয়ে,লজ্জায় আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।
গল্প-৬: শ্যামবতী
বাসর-রাত নাকি জীবনের শ্রেষ্ঠ একটা রাত।
কিন্তু আমার বেলায় ও কি তাই??
আজ আমার বাসর-রাত। স্বামী জব করে ফায়ারসার্ভিস এ।দুজনে রিলেশন করে প্রায় চার বছরের সম্পর্ক টা পূর্ণতা নিল।
ও যখন আমার সম্পর্কে ওর বাড়িতে জানায় তখন আমার শাশুড়ি শশ্বুর খালাশ্বাশুরি আমায় দেখতে আসে। আমার বাবা মধ্যবিত্ত হলেও যথাসাধ্য আপ্যায়ন এর ব্যবস্থা করেন।তবুও আপ্যায়নে অপারগতা প্রকাশ করছে আমার খালাশ্বাশুরির মুখের প্রতিবিম্বে তা সুস্পষ্ট। আমার ফ্যামিলির সবাই সেটা বুঝতে পেরেছিল।যখন আমি তাদের সামনে গেলাম খালাশ্বাশুরি নাক শ্যাটকিয়ে বলেই ফেললেন… এমা গো এত দেহি শ্যামলা না না কালো বলা চলে। হেরে আপা তোদের ছেলে দিপু একে কেমনে পছন্দ করল রে।তা মেয়ে কি কি পার শুনি আর কিসেই বা পড়।আমি উওর করেছিলাম তেমন কিছু নাহ্।ভাত, ডিম এগুলোই।আর লেখাপড়া বলতে এইবার অর্নাস ভর্তি হলাম।খালাশ্বাশুরি বলে ওঠলেন এ্য…না আছে গুন… না আছে রুপ।তা আছে টা কি শুনি।
হেরে তুদের ছেলের চুখে কি ন্যাবা হয়েছে রে।যে চুখে দেখতে পায় নাহ্।শশুর-শাশুরি কোনো উওর করিলেন নাহ্।শুধু বলিলেন একমাএ ছেলের পছন্দ কে ত আর হেলনা ভাবতে পারি নাহ্।আমি বুজিলাম সাদি-তে তাদের মত আছে।না চাইতেও নিজের অজান্তে ঠুটের কোণে এক চিল্তে হাসির লেস ফুটল।মনে মনে কহিলাম নিজেকে নিজে…যাক শান্তি আপন মানুষকে আপন করে পাওয়া যাবে।
দিন-তারিখ ধার্য হল। অবশেষ এ বিয়ে।
বাসরঘর এ বসে আছি।সাথে কিছু ননদ/ননদীরা একেক জনের একেক রকম কথা।আর অট্টহাসি।অবশেষ এ ওনি এলেন।ননদ/ননদীরা তাকে ঘীরে ধরল।আর কঠোর দাবি জানাল যে নগদ পাঁচ হাজার না দিলে আজকে তারা সকলে এখানে ঘুমাবে।আমার ওনার ত বেহাল অবস্থা। তার অবস্থা অবলোকন করিয়া আমিও হাসিতে লাগিলাম।ওনিও আমার হাসিটা পর্যবেক্ষণ করিলেন।
ননদীনিরাও নাচরবান্দা।আমার ওনি তাদের দাবি পুরণ করিলেন।তারা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল সাথে বিদেয় ও নিল।
ওনি দরজা লাগিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকলেন।ওনার সাথে চার বছর যাবৎ পরিচয় থাকলেও আমার হৃদমাঝারে কম্পনের সৃষ্টি হলো।ওনার সাথে আগে কখনও দেখা হলে এমন অনুভুতি জন্ম নিতে পারে নি আমার হৃদমাঝারে।
ওনি যখন আমার কাছে এসে বসলেন শ্বাসরুদ্ধ কর পরিস্তিতিটা অতিব যতনে সামলিয়ে ওনাকে একটা লম্বা সালাম দিলাম।(পায়ে ধরে সালাম করা শিরক।এটা হিন্দু ধর্ম থেকে এসেছে)
ওনি সালামের উওর করিলেন সাথে পবিএ কোরআন”তাসবি”জায়নামাজ সাথে মোহরানা দিলেন।আমি সাদরে গ্রহণ করিলাম ওনার হাতে পাওয়া আমার জন্য শ্রেষ্ঠ হাদিয়া।
ওনি নামাজের জন্য প্রস্তাব করিলেন।আমি বলেছিলাম এরকম বউ সাজে ওযু নেব কিকরে নামাজ পড়তে কষ্ট হবে ত।ওনি বলেছিলেন হোক না একটু কষ্ট। আমার জন্যই ত।তুমাকে বউ সাঝে দুচোখ ভরে দেখতে চায় প্রিয়ু শ্যামবতী।এই শ্যামবতীর রুপে যে আমি আজ মাতাল হতে চায়।আমি কোনো উওর করিতে পারলাম না তিনার দুষ্টু আবদারের কাছে।শুধু মুখে লাজুকতার ছাপ।
নামাজ আদায় শেষ জায়নামায এ বসে ওনি আমার হাতটা টেনে নিয়ে আঙ্গুলে তাজবি গননা করতে লাগলেন।আমি বিষ্ময় হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।ওনি শুধু বললেন আমি আল্লাহর বেহেশত এ গেলে একা যাব না তুমায় নিয়ে ই যাব।এটা তারি একটা উপায় আমার শ্যামবতী।
আমি নির্বাক।ওনি আমাকে এতটাই চাইতেন।দুজনের মোনাজাত শেষ হতে না হতেই আমি তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে আলিঙ্গন করে আছি আর সাথে অশ্রুধারা ঝরাচ্ছি।
ওনি আলতো করে আমাকে সরিয়ে আমার অশ্রুকণা মুছে আবার আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে নিয়েছেন।
আজ শুশুরবাড়িতে আমার দুই বছর পূর্ণ হল।আমার ওনি আগের মতই আমার পাশে আছেন ভালোবেসে। এতদিন এ যা বুঝলাম শশুর শাশুড়ি নননদীনিরাও আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভাল আর ভালোবাসাপূর্ণ।শুধু খালাশ্বাশুরি একটু খিটখিট এ মেজাজের।
আমি এখন পূর্ণ গুনবতী।শাশুড়ির কাছ থেকে সবকিছু আয়ওে নিলাম।শাশুড়ি কে বিশ্রাম এ পঠালাম।
আমি এখন আমার ওনার গুনবতী”শ্যামবতী”।
সমাপ্ত
ফাহিমা জাহান
বাসর রাতে বিড়াল মারা বলতে কী বোঝায়?
‘বাসর রাতে বিড়াল মারা’ কথাটা কোথা থেকে এসেছে অর্থাৎ কথাটার ব্যুৎপত্তি কী জানতে চেয়ে বহু জন বিভিন্ন বছরে শুবাচে প্রশ্ন করেছেন দেখলাম। কিন্তু তার মূলগত কোনও উত্তর কোনও কমেন্টে নজরে এলো না। কথাটা এসেছে একটা ইরানি প্রবাদ গুরবে কুশ্তন্ শব্-এ-আও্অল্ থেকে। এই আসল উত্তরটা বহু আগে দিয়ে গেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পঞ্চতন্ত্র’ বইয়ে মার্জারনিধন কাব্যে। পরে এটা ‘সৈয়দ মুজতবা আলীর শ্রেষ্ঠ রচনা’ এবং ‘হাস্যমধুর’ বইতেও অন্তর্ভুক্ত হয়।
এত বড়ো উত্তর কমেন্ট হিসেবে ধরলো না বলে পোস্ট হিসেবে দিলাম। আলী সাহেবের এই লেখাটা নেটে পাওয়া যায়, কিন্তু সর্বত্র অসংখ্য বানান ভুল। আমি দুটো সোর্স দেখে ওনার বানান এবং যতিচিহ্নগুলো যথাসাধ্য যথাযথ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেই সোর্সের মধ্যে ভূত থাকলে আমারও ভুল আছে।
গুরবে কুশ্তন্ শব্-এ-আও্অল্ – বেড়াল মারবে রাত পয়লায় – এই ইরানি প্রবাদটা এসেছে একটা গল্প থেকে। গল্পটা আরব্য রজনীতেও আছে। আরব্য রজনীর গল্পগুলো মূলত পারস্য আর ভারতের। বাকি অনেক গল্প তুরস্ক এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে সংগ্রহ করা। এবং এই গল্পগুলো প্রথম সংকলিত হয়েছিলো পারস্যেই হাজ়ার আফসানা নামে। পরে অষ্টম শতাব্দীতে আলিফ লায়লা নামে আরবিতে অনূদিত হয়। সেখান থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীতে সাহেবেরা অনুবাদ করে থাউজ়েণ্ড ওয়ান নাইটস নামে। সেটাই আমাদের কাছে বাংলা অনুবাদে সহস্র এক আরব্য রজনী হিসেবে পৌঁছেছে।
চারুকলার নারীবাদী বিয়ে করেছিলাম ভেবেছিলাম বিবাহিত জীবনটা সুখের হবে। কিন্তু এখন বৌয়ের ফ্যাশন সেন্স দেখলেও বমি আসে। কপালে ইয়া বড় লাল টিপ, ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি, এটাই নাকি তার জীবনের একমাত্র ফ্যাশন। বিয়ে, অফিস, ঝড়,বৃষ্টি , বাসর রাত সবখানে এক পোশাক।
প্রথম রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বৌ মোমবাতির সামনে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে শুরু করেছিল। বৌয়ের বীভৎস চিৎকার শুনে বাবা মা দৌড়ে এসেছিল। পরিবারের সবাইকে শান্ত করে বললাম কিছুই হয়নি তোমরা ফিরে যাও।
বৈশাখ মাসে তার মনের অবস্থা ভালো থাকে না। শাহবাগের চত্ত্বরে ঘুরে বেড়ায়। সারাবছর ইংরেজি মদ খেলেও বৈশাখে খায় ইলিশ আর পান্তা। আর বন্ধুদের সাথে আন্দোলন করে যখন বাড়ি ফেরে তখন গায়ের গন্ধে এলাকার মাছিও মারা যায়।
তার জন্য ভালোবেসে টেডি কিনে এনেছিলাম। সে ওটা ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। বলেছে মঙ্গল শোভাযাত্রার পেঁচা ছাড়া কিছুই তার পছন্দ নয়। একটু রাগারাগী করেছিলাম তাই আমাকে পিটিয়ে পাশের ঘর বন্ধ করে গান চালিয়েছিল –
আমরা নারীবাদী,
আমরা সুখী হতে চাই
আমরা নারীবাদী
বলেছিলাম সন্তানকে ডাক্তার বানাবো। উনি রেগে বললেন সন্তানকে জাফর ইকবাল, হুমায়ুন আজাদ বানাবে। আমি মেনে নিয়েছি। কারন এগুলো সব মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু এটা কিভাবে মানবো যে, সন্তান নিতে গেলেই বলে মুড নাই। বৈবাহিক ধর্ষণের ভয় দেখায়।
হঠাৎ শুনলাম ওনার পেটে সন্তান এসেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে সম্ভব? ওনার উত্তর ছিল –
একজন নারীকে এসব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে শরম করে না? ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বলতে কিছু আছে তাই না! স্বামী বলে যা ইচ্ছা তাই বলবেন।