লুনা রাহনুমা
(এক)
দূরত্ব বাড়ে – ছেলেটা অপেক্ষায় থাকে, মেয়েটার অভিমান কমুক। দূরত্ব বাড়ে – মেয়েটা প্রেমিকের উপেক্ষা সইতে না পেরে মানসিক ভারসাম্যহীন।
(দুই)
মানুষ সাফল্যের পেছনে দৌড়ে শরীরের-আরাম, শিশুর-শৈশব, সংসারের-খুনসুটি, আত্মীয়-পরিজনদের সান্নিধ্য – সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে উপলব্ধি করে- এতকিছুর প্রয়োজন ছিলনা, সত্যি।
(তিন)
এতিমখানায় বাচ্চাদের নিজ হাতে খাইয়ে মন্ত্রী-সাহেব চোখের পানি মোছেন। বাড়ি ফিরে ঘর অপরিষ্কার বলে কষে চড় বসান এতিম জামালের গালে।
(চার)
প্রতিযোগিতায় পুরস্কার না-পেয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে খুকি। সান্তনা দেয়-না মা। বরং, ভবিষ্যতে পুরস্কৃত হতে মেয়ের বুকে আকাঙ্খার আগুন প্রজ্জলিত করে দ্বিগুণ।
(পাঁচ)
একটি ডালে ছয়টি পাখি। তিনটি মনের আনন্দে উড়ে উড়ে গান গায়, বাকিরা মুখ টিপে হাসে। তিনটি পাখি সুখি, তিনটি হিংসুটি।
(ছয়)
স্বামী-স্ত্রীর যৌথ ফেইসবুক-একাউন্ট। স্ত্রী সস্তিবোধ করেন, স্বামীর পরকীয়া নেই নিশ্চিত। স্বামীটি রাত জাগে মেসেজ দেখার নামে স্ত্রীর সুন্দরী-বান্ধবীদের ছবি ঘেটে।
(সাত)
পরিবারের সবচেয়ে আদরের মেয়েটা গলা খুলে গাইতো। মন খুলে হাসতো। স্টেজে উপস্থাপনা করতে ভালোবাসতো। ভালোবাসার বিয়ে মেয়েটির সব(আত্মবিশ্বাস) কেড়ে নিয়েছে।
(আট)
কর্মজীবী দম্পত্তি। দুইজনই ফুলটাইমার। ঘরের কাজে সাহায্য করতে স্বামীটির পৌরুষে বাঁধে। স্ত্রীর বেতনের পুরোটা বুঝে নেয়া নিজের হক মনে করে।
(নয়)
আরেকটি মৃত্যুসংবাদ। লোকটি আমার অপরিচিত। স্ক্রল করে আনন্দের সংবাদ খুঁজি। মনে বেঁধে থাকে একটি কাঁটা – আমার মৃত্যুসংবাদেও কী-ই-বা যাবে-আসবে!
(দশ)
ফেইসবুকের পাঠক: গল্পে, কবিতায়, ছবিতে, আঁকায়: ন্যায়-অন্যায় খোঁজে খুব।
উচিত-অনুচিত, ভালো-মন্দের জ্ঞানে টনটনে তাদের মাথা।
বাস্তবের সমাজে এই লোকগুলো কোথায়?