|অনিক আদিত্য।
রাত দু’টো নাগাদ হবে। বাহির টা নিরুদ্যম হয়ে আছে ঠান্ডায় একটা কুকুর ডেকে যাচ্ছে ভীষন। এতক্ষনে সবার আধঘুম হয়ে গেছে মোটামুটি।ঘুম আসছিল নাহ। এমনিতে যদিও নিয়ম করে দেরিতে ঘুমোই।ঠান্ডাও পড়ছে খুব।লেপ মুড়ি দিয়ে যদিও টের পাচ্ছিলাম নাহ! কানে হেডফোন গুজিয়ে “মহীনের ঘোড়াগুলি” বাজছে।
উঠে বসলাম! ততক্ষনে ২:২০ বেজে এসেছে।
সিগারেটের প্যাকেট টা খুজে পাচ্ছিলাম না। মাথাটা যে খুব একটা জ্যাম ধরে আছে তাও না।
নাহ!সিগারেট একটা খেতেই হবে মনে হচ্ছে। বিকেল বেলায় এক প্যাকেট এনে রেখেছিলাম ড্রয়ারে এতক্ষনে মনে পড়ে গেলে।
শীতকাল আমার প্রিয়কাল।ঠান্ডাকে উপভোগ করি বরাবরের মত। পাতলা একটা জ্যাকেট পড়ে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। হেলান দেয়া চেয়ার টার বয়স ও বছর খানেক হবে।জং ধরেছে একটু আকটু। সিগারেট ধরিয়ে কমলাকান্তের মত ঢুলতে থাকলাম চেয়ারে।
এদিকে বাতাস বইছে খুব।ঠান্ডা বাতাস।বাতাসে ভেসে আসছে শুনশান আওয়াজ।কানে আসছে খুব।চোখ লেগে এল।ঘুমও আসছে। সিগারেট জ্বলছে……!
চোখের উপর ভেসে এল বাবার ছবি।বাবা চলে গেল, সে বছর খানেক হবে।সে থেকে মা-ই সংসার টা চালাচ্ছে। তখন ও ঘুমের ঘোরেই আছি। শুধু কথা গুলো কানে আসছে আর চোখে ভাসছে বাবার ছবিটা…
নিভৃত! এই নিভৃত! একা বসে আছিস কেন?এখন সিগারেট খাওয়া টাও শিখে ফেলেছিস? আমার ভাল লাগছে নারে। ওখানে কেউ নেই কথা বলার মত।একা থাকি খুব। আমার গান গুলো আছে এখনো? তুই আমার সাথে যাবি? গেলে.. চল! চল!
তারপর আর কিছু মনে নেই।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মায়ের গলার তীব্র আকুতি! মা কাঁদছে খুব। সবাই শান্তনা দিচ্ছে। মূহু-মূহু শব্দে বুকের এক পাশে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলাম। আজকে বাবার বাৎসরিক কাজ।বাবা আমাদের ছেড়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ন হল।বাবার পুরোনো ছবিগুলো দেখে ভাবছি অত কম বয়সে কেউ তার বাবাকে হারিয়েছে কিনা!