আশিক মাহমুদ রিয়াদ
কোন এক তপ্তদুপুরে, ক্লান্ত চোখে তৃষ্ণার্ত গলায়-
রাস্তার মোড়ের সস্তা হোটেল থেকে বেড়িয়ে
নীল পারের ঘ্রাণ ছুঁয়ে গিয়েছিলো তারুণ্যকে,
একটা সাদা বিএমডব্লিউ গাড়িতে।
লাল রঙা শাড়ির পার উড়িয়ে, সে চলে গিয়েছিলে-
অবলা, আনমনা, উষ্কখুষ্ক এক জীর্ণ ছেলের সামনে থেকে।
লাল পারের মেয়ে!
তুমি কি জানতে তোমার বাহুডোরে যে গোলাপ ফুঁটেছে
সেখানে কাটারদল ফিসফিসিয়ে তোমার হৃদয় চোষে।
তোমার পাশে যারা আছে, তারা তোমার ভালো বন্ধু নয় বটে।
জাত সাপের মত বিশ্বাসঘাতক, তারা তোমার দেহের ঘ্রাণে হারায়।
আনমনা, আনকোরা এক জীর্ণশীতল প্রেমিক হয়ে
চায়ের কাঁপে কল্পনার চুমু খেয়ে
তোমাকে ছোঁবার নেশায় যে পুরুষ বুঁদ হয়েছে।
তাকে তুমি অন্তত চরিত্রহীণ বলতে পারো না।
সে অপরাধবোধে ভোগে, আপ্রাণ চেষ্টায় নিজেকে গুটিয়ে
তোমাকেই তো শেষমেষ ভালোবাসে।
তাকে তুমি অন্তত কাপুরুষ বলতে পারো না।
অথবা পারো, সেই কাব্যিক পৌরষের এক ভ্রান্ত ভুল।
অর্থতে মেলে না সুখ বটে, নারীও দাসী হয় অর্থের প্রয়াসে।
পৌরষ্য ছিনিয়ে নেয় অর্থের কড়াল গ্রাসে!
তোমার সামনে হয়ত সে একদিন মার্সেডিজ কিংবা শাদা রঙের
বিএমডব্লিউ নিয়ে হাজির নাও হতে পারে।
অথবা যদি চাও সে ফিরতে পারে বাস্তবতার কড়াল গ্রাসে।
জ্বর কাঁতর গ্লাসে চুমুক দিয়ে জল তেষ্টা ছটফট করে
একবার যদি দেখা দাও তুমি, অথবা বলো ঐশ্বুরিক পাণে।
জেনে রেখো সে নরকে তোমার সাথী হবে
অনন্তকালের অধৈর্যের আগুনে।
তুমি তাকে পাপী বলতে পারো কিংবা অভাগা।
চায়ের দোকানে বাকির নামে যার হয় হালখাতা
তাকে কি তোমায় পাওয়ার শোভা পায়?
কি অদ্ভুত রং মিশেলে হৃদয়ের গহিণে
যাপিত নিদ্রায় কল্পনায় তোমার শরীর ছোঁয়
অথবা ক্লান্ত পথের পথিক হয়ে শেষ সূর্য হতে চায়।
হায় বিধাতা বলে, এ কেমন পৌরষ বটে?
যে জীবন হারায় নারীর ছলনায়।
হায় বিধাতা বলে, এ কেমন মেতেছো খেলায়।
জীবন নামের ষোলগুটিতে,
তুমি পাশা সাজাও হ্যালায় ঠ্যালায়।
তুমি হায় মানুষ বটে, শূন্য হাতে ছুঁতে চাও অট্টালিকা।
দিব্য ফাগুনে আগুন জ্বলে, আঁধার রাতে নিভু নিভু প্রদীপে
আগে ইহজনম সামলাও, পরজনমের আগে না হারাও বেখেয়ালে।