মধ্যপ্রাচ্যের গল্প

মধ্যপ্রাচ্যের গল্প

রেজাউল ইসলাম হাসু

 

আমি যে ঘরে থাকি সেখানে কোনো দরজা নেই, জানালা নেই। আপনার ঘরের দরজা, জানালাগুলো আমার অনেকদিন মনে থাকবে। বিশ্বাস করেন, এভাবে জানালা ভেঙে আমি আসতে চাই নি। দরজটা খোলা পেলে অবশ্যই এই নাটকীয়তার কোনো দরকার পড়তো না। 

তখন সন্ধ্যাটা বুড়ো হয়ে রাত্রির কোলে ঢলে পড়ছিল অর্থবের মতো। আমি ‘মধ্যপ্রাচ্যের নির্বাচিত গল্প’ এর পাতা উল্টাতে উল্টাতে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক পেরিয়ে ফিলিস্তিনে এসেছি। জিয়াদ খাদাশের ‘সেনা নির্দেশ অমান্যকারী এক গল্পকার-এ অনিদ্রিত চোখের নুড়ি ছুড়েছি সবে। অমনি এমন একটা ঘটনা ঘটবে আমি পূর্বানুমানই করি নি। যাইহোক, জিয়াদ খাদাশ থেকে চোখ ফিরিয়ে বিষ্ময়ভরে লোকটার কথা শুনি আমি। 

লোকটা আমার দিকে খুব অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে। আমিও তাকাই। যেন আমরা একে-অপরকে হাজার বছর আগে থেকে চিনি। যেন অনেকদিন পর আমাদের দৈবক্রমে দেখা হয়ে গেছে। আমি তাকে অপ্রস্তুতভাবেই স্বাগত বলে আরামকেদারাটা এগিয়ে দিই।  ‘মধ্যপ্রাচ্যের নির্বাচিত গল্প’টা সেলফের সেই জায়গায় পৌঁছে দিই, ঠিক যেই জায়গায় তার থাকবার কথা ছিল। তারপর আরেকটা আরামকেদারা ডাইনিঙ থেকে টান দিয়ে আমিও বসে পড়ি। 

আমরা মুখোমুখি বসে। নীরব ও নির্বিকার। কীভাবে কী শুরু করব সেই যথার্থ শব্দ গুচ্ছ যেন আমরা হাতড়ে ফিরছি। সমুদ্রডুবুরির ন্যায় হাতড়ে হাতড়াতে না-পেয়ে আমরা যেন যখন টেবিলের উপর ভেসে উঠছি, তখন আমাদের মুখগুলো যেন হতাশার একেকটা প্রতিমূর্তির প্রতিচ্ছবি হয়ে ফুটে উঠছে। 

 

—আমার এই অনাকাঙ্ক্ষিত আগমনে আপনি বিব্রত হলে চলে যাই। 

লোকটাই নীরবতা ভেদ করে এগিয়ে এলেন। 

—যাই বলতে নেই। এত রাতে কোথায় যাবেন? দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলি। ঘড়ির পেণ্ডুলামগুলো যেন একেকটি যুদ্ধের দামামা হয়ে দোদুল্যমান।

—কোথায় যাব মনে করতে পারছি না। সত্যি কথা বলতে কী, আমার যাওয়ার মতো পৃথিবীতে কোনো জায়গাই নেই। পৃথিবীটা যেন কাঁটাতারের উদ্যান। আর আমরা যেন সেখানে রক্ত চিড়ে ফুটে ওঠা থোকা থোকা লাল গোলাপ। 

 

যখন লিখতে বসে কলমে কোনো গল্প আসে না তখন আমি এক রকম মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যেতে ভালোবসি। সেখানে তখন না থাকে সীমানা, না থাকে কাঁটাতার। পৃথিবীর সমস্ত ঠিকানা ভুলে ওদের চোখে চোখ রাখি। ওদের হৃদয় পড়ি। চোখ পড়ি। ওদের রক্তের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে ওরা তখন আমার কাছে হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যের একেকটি মহৎগল্প। আর এরকম বিষ্ময়ভরে ওদের কথা শুনি। যেভাবে শোনছি লোকটার।

—কথা শোনাটাও একটা আর্ট। 

কালো বর্ণের কাপে কফি ঢালতে ঢালতে বলি। শূন্য কাপগুলো কফিতে উপচে কেমন যেন ধোয়াশাময় হয়ে উঠল। তারপর কুন্ডুলি পাঁকিয়ে জানালার রেলিঙ বেয়ে অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে গেলো। দৃশ্যটা দেখবার মতোই ছিল। অবর্ণনীয়!

—কথাটি কি আপনার?

—কোন কথাটা? ইতোমধ্যে আমরা অনেক কথার সিঁড়ি ভেঙে গল্প ছাদে উঠে এসেছি। সেহেতু আমি ভদ্রভাবেই লোকটাকে আরেকবার জিজ্ঞেস করলাম কোন কথাটা?

—ওই যে ওই কথাটা। কথা শোনাও একটা আর্ট। 

—এরকম কথা কবে যে আমার কলম থেকে বেরুবে জানি না। কথাটা ফরাসিদের। রুশ ফুকোর। বেশির ভাগ মানুষ যদি ফুকোর কথাটা শোনতো তবে দুনিয়ার দুঃখটা কিছুটা হলেও হালকা হতো। 

—ফরাসিরা অনেক নরম মনের অধিকারী হয়ে থাকে। তাই না?

—আপনি একদম ঠিক বলেছেন। ওদের শিল্প-সাহিত্যের ইতিহাস অনেক গৌরবের। পৃথিবীতে রোমান্টিসিজমের জন্ম তো ওরাই দিয়েছে। কফি?

—আপনার আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ। এই মূহুর্তে আমি কফি কেনো, পৃথিবীর কোনো কিছুরই স্বাদ গ্রহণ করতে পারব না। আমার এই অক্ষমতার জন্য আমি দুঃখিত। দয়া করে এটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।  

—আপনি তাহলে যাওয়া-আসা করেন কীভাবে?

—প্রশ্নটার পেছনের কথাটা বলুন। ইদানিং আমার স্মরণশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণ আগে কী বলেছি কিছুক্ষণ পর তাই মনে থাকে না। 

—আপনি যে ঘরে থাকেন, সেখানে না কি কোনো দরজা নেই, জানালা নেই। 

—নেই না। আসলে আমার লাগে না। তাই মিস্ত্রিরাও হয়তো নির্মাণের সময় আমার প্রয়োজন বুঝে রাখে নি। হয়তো ওদেরও তাড়াহুড়ো ছিল। কারোরই হাতে ফালতু সময় নষ্ট করবার ফুরসত নেই। সামান্য গোর খোদক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সামরিক, বেসামরিক সকলেই খুব ব্যস্ত ওখানে। আপনি একা কেনো? আপনার বউ, ছেলেমেয়ে ওরা সব কোথায়?

—ঈদের ছুটিতে বেরোতে গেছে।

 —আপনি গেলেন না…

—বেরোতে আমার ভালো লাগে সত্যি কিন্তু ওভাবে না। সবখানে যাওয়া আমার পছন্দ নয়। লাতিন আমেরিকার কিছু হাইকু অনুবাদ করেছিলাম গত লকডাউনে। ওগুলো ড্রয়ারে জমে আছে অনেকদিন থেকে। ওদের একটা গতি দান করতেই আমার বেরোতে না-যাওয়া। কিন্তু ভ্রমণ করতে আমি কখনো ক্লান্ত হই না। এ মূহুর্তে আমি হয়তো আপনাকে বোঝাতে পারব না সেটা। সামনে বৃষ্টির ছুটি আছে। ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে আপনাকে পেলে আমি খুশি হতাম।

—আমি তো একটা ভ্রমণের ভেতরেই আছি। আপনাকে নিশ্চিত কথা দিতে পারছি না বলে আমি দুঃখিত। তবে কোনো একদিন আমি না হলেও আপনি আমাদের ভ্রমণসঙ্গী হবেই হবেন। আচ্ছা, ম্যানহাটনে আজকে একটা প্রতিবাদ সমাবেশ হবার কথা ছিল। ওটা কি ওরা করতে দিয়েছে?

—না। বাইডেন প্রশাসন সেখানে বাঁধ সেজেছে। সমাবেশকারীদের উপর টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। কেউ কেউ লাঠিচার্জের স্বীকার হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। বার্লিনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। অনেকেরই বিশ্বাস ছিল জার্মানির উপর। কিন্তু তারা সে বিশ্বাস  কাঁচের মতো ভেঙে গুঁড়োগুঁড়ো করে দিয়েছে। 

—অন্যান্য জায়গায় কী খবর?

—ওদিকে ডরমিটরি, সিডনি, লন্ডন, কেপটাউন, ইস্তাম্বুল, লাহোরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধবাজদের পতাকা পুড়িয়ে প্রবল প্রতিবাদ জানানোও হয়েছে। বলা যায়, যুদ্ধের বিরুদ্ধে মানুষের ঢল নেমেছে পৃথিবীর পথে পথে। 

লোকটার উপস্থিতিতে নির্দয় নিঃসঙ্গতা কেটে উঠছি ভেতরে ভেতরে টের পেলাম। চাঁদের আলোক ছটায় ছাদটা যেন আরো গল্পময় হয়ে উঠছে। কিন্তু লোকটা যেন তাকে গোপন করবার চেষ্টা করছে। আমি তার কথাবার্তার ধরন থেকে আন্দাজ করি। 

—ঢাকার আকাশটা অনেক অনিন্দ্য, তাই না?

—আমাদের আকাশে কতোদিন এরকম চাঁদ দেখিনি। আমাদের আকাশ থাকে মেঘ ও মৃত্যুতে আচ্ছন্ন। সত্যিই ঢাকার আকাশটা কী অনিন্দ্য! পৃথিবীর সব আকাশ যদি এরকম হতো…

যেন না পাওয়ার দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস  লোকটাকে ঘূণপোকার মতো একটু একটু করে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। তার দীর্ঘশ্বাসের মতো রাতটাও ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। দূরে কমলাপুর রেল স্টেশনটা মিটমিটিয়ে জ্বলছে। আধো আলো আধো ছায়ায় পুরনো ট্রেনের ভাঙাচোরা বগির ভেতর শান্তি লেপ্টে থাকা কয়েকটা নিদ্রাময় মুখচ্ছবি ঝলমল করছে। ছয় নম্বর সেক্টর থেকে সিকিউরিটি শফিকের বাঁশির বিপুল হুঁইসেল রক্ষাকবচের মতো অ্যাভিনিউ থেকে অ্যাভিনিউয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। 

—ডিনার করেছেন?  

লোকটাকে দেখে খুব ক্ষুধার্ত মনে হলে ভদ্রতা সুলভ প্রশ্নটা করে বসি। 

—আমি খুব ক্ষুধার্ত। কোনো এক ক্ষুধার ক্ষুধা আমাদের তাড়িয়ে বেরোচ্ছে। আমরা সেই ক্ষুধা নিবারণের সৌর্য ও সঙ্গী খুঁজছি।  

—ছাদের কার্নিশে একটা হাজার ওয়াটের এনার্জি লাইট আছে। আপনি চাইলে সেটা আমরা জ্বালাতে পারি। 

—না, আপনার ভদ্রতার জন্য ধন্যবাদ। সেটার প্রয়োজন হবে না। চাঁদের আলোক মেশানো ফিনফিনে অন্ধকারই আমার বেশ লাগছে। হাওয়াই স্পর্শটাও লা-জবাব। ছেলেবেলায় কতোদিন এরকম একটা দৃশ্য দেখার জন্য ভাঙা আস্তাবল থেকে পালিয়ে বোহেমিয়ান হয়েছি। 

 

—আপনার ছেলেমেয়ে?

—এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলেটার পাঁচ। মেয়েটার আট। 

—ওরা এখন কোথায়?

—ঘরে ঘুম পাড়িয়ে এসেছি। 

—ওদের মা?

—শাদাবা গতকাল সকালে ক্লাস নিতে গিয়ে আর ফিরে নি। শুনেছি ওদের স্কুলটা উড়ে গেছে। গার্ডিয়ান পত্রিকায় ওদের ধ্বসে যাওয়া স্কুলের চিত্রটা ছাপা হয়েছে। 

—আমিও বিবিসির খবরে দেখেছি। 

ঘরে ধুপ করে কিছু একটা পড়ার আওয়াজ হলে আমরা সাময়িক গল্প-বিরতি দিয়ে একে-অপর থেকে আলাদা হই। ঘরে এসে দেখি সেলফ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের নির্বাচিত গল্প’টা উবু হয়ে অনাথের ন্যায় পড়ে আছে ফ্লোরে। আর তার উপর দিয়ে হেঁটে বেরোচ্ছে কয়েকটা ইঁদুর শাবক। আমার হন্তদন্ত ছুটে আসার ক্ষিপ্ততা আন্দাজ করতে পেরে শাবকগুলো লেজ গুটিয়ে পুরনো জিনিষপত্র রাখা ঘরটার দিকে দৌঁড়ে লা-পাত্তা হয়ে গেলো। আমি তাকে ফ্লোর থেকে আমার নরম হাতে তুলে নিই। খুব যত্ন করে মুছেটুছে তার আগের জায়গা তাকে ফিরিয়ে দিই। ছাদে এসে দেখি লোকটা নিরুদ্দেশ। এদিক-ওদিক তাকাই। কোথাও তার ছায়া দেখা গেলো না। এ যেন রোহের জাদুবাস্তব পৃথিবী। আস্তে আস্তে কালো রেখাবলি মুছে মুছে কৃষ্ণচূড়াফুলগুলো প্রতিভাত হচ্ছে। ভাঙা জানালার রেলিঙ ছুঁয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে তারই ঘ্রান ঢাকার স্ট্রিট জুড়ে।  

হয়তো দূরে কোথাও খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর সেই বৃষ্টির ভেতর ছাতাহীন একটা লোক হেঁটে যাচ্ছে। যার থাকবার ঘরে কোনো দরজা নেই, কোনো জানালা নেই। সেই ঘরের দিকেই সে হেঁটে যাচ্ছে, নগ্ন পায়ে…কাল থেকে অনাদিকাল…

 

রেজাউল ইসলাম হাসু

বেসরকারি সংস্থায় উন্নয়ন-কর্মী। বাংলা ভাষার সৃজনে অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা বেলাভূমি সম্পাদনা করেন।

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
How Health Businesses Can Survive in a Post Coronaconomy

How Health Businesses Can Survive in a Post Coronaconomy

Cursus iaculis etiam in In nullam donec sem sed consequat scelerisque nibh amet, massa egestas risus, gravida vel amet, imperdiet volutpat rutrum sociis quis velit, ...
নারী আটকায় কিসে?

নারী আটকায় কিসে?

আশিক মাহমুদ রিয়াদনারী পুরুষে আটকায় না, নারী আটকায় অর্থে, বিত্তে, শৌর্যে!নারী কখনোই পৌরষে আটকায় না নারী ছিড়ে, নাড়ি..জন্ম দেয় ফুল। প্রথম কান্নায়, প্রথম শব্দে মা ...
নিবন্ধ: মহালয়া

নিবন্ধ: মহালয়া

বিপ্লব গোস্বামী মহালয়া শারদ উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।হিন্দু ধর্ম মতে মহালয়ার দিন থেকেই দূর্গা পূজার সূচনা হয়।শাস্ত্র অনুসারে এই দিন মহাশক্তি দূর্গতিনাশিনী অসুরবিনাশিনী দেবী দূর্গা ...
ভারতে বর্ষা

ভারতে বর্ষা

শিবাশিস মুখোপাধ্যায় ভারতে বেশিরভাগ বর্ষার মরসুম জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। সবচেয়ে আর্দ্রতম মাস জুন ও জুলাই। বৃষ্টি আগস্টে ধীর হতে শুরু করে এবং সেপ্টেম্বরে ...
কবিতা-নিঃশব্দে কেউ

কবিতা-নিঃশব্দে কেউ

|আফসানা মীম   আমি যখন মনমরা হয়ে আকাশ দেখবো তখন নিঃশব্দে কেউ আসুক ঠিক যেমন দখিনা হাওয়া বয়ে যায়, চুপিচুপি আনমনে দিগবিদিক হয়ে! বৃষ্টি ভেজা ...
উত্তপ্ত উদাস দুপুর

উত্তপ্ত উদাস দুপুর

| গোলাম রববানী    এই যে বাতাস নরম বাতাস  আরো নরম গরম বাতাস একলা নহে বইছে সবার মাঝে কেউ যে পুড়ছে তাপদাহে আবার কেউ পুড়ছে ...