রফিকুল নাজিম
স্বীকৃতি
তোমাকে ছাড়া আমাকে অস্বীকার করে তোমার শহর
আমাকে অস্বীকার করে কাঁটাবনের ছোট্ট ক্যাফে ঘর
পিচঢালা রাস্তা, বাদুড় ঝুলা বাস, যাদুঘর- পার্ক উদ্যান
কবিতার আড্ডা, নেশাতুর ছবিরহাট, মগ্ন কবির ধ্যান।
তোমাকে ছাড়া আমাকে অস্বীকার করে মুখরিত ক্যাম্পাস
সড়কদ্বীপ, পাথুরে ভাস্কর্য, শিল্পীর মগজ ও তাঁর ক্যানভাস
তোমাকে ছাড়া আমাকে ধূর ধূর করে তাড়িয়ে দেয় সবাই
তোমাকে ছাড়া আমিও কেবল পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই।
তোমাকে ছাড়া আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পদ্মপুকুর
অপাংক্তেয় মনে করে তোমার শহরের ভাসমান সব কুকুর
অধিকার আদায়ের মিছিল মিটিং প্লেকার্ড- ঝাঁঝালো শ্লোগান
ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা শিশুর মত আমিও যেন উচ্ছিষ্ট প্রাণ!
তোমাকে ছাড়া আমাকে অস্বীকার করে প্রিয় কাঠগোলাপ
তোমাকে ছাড়া কবিতার পঙক্তিগুলো হয় উন্মাদের প্রলাপ
আমাকে অস্বীকার করে সেই সংসদ ভবন, আদালত পাড়া
বিউটি বোর্ডিং, কবি ও কবিতা, প্রিয় বন্ধুবান্ধব ছিল যারা।
আমাকে অস্বীকার করে দুইকোটি মানুষের চারকোটি চোখ
মানুষের এই জনসমুদ্রে থেকেও যেন আমি এক আগন্তুক
তুমি ছাড়া আমি যেন উদ্বাস্তু এক; সময়ের শুদ্ধতম এক ভুল
তুমি আসলেই নাকি আমাকে মেনে নিবে এই শহরের সব ফুল!
ভাঙন
কীর্তিনাশার উজান জল
পাক খায় ঐ তীরে,
কলসি ঘাটে রাইখ্যা বধূ
কাহারে খুঁজে ফিরে?
ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙে কূল
ভাঙে মায়ার পাড়,
শ্যাম বিরহে উজান ব্যথা
মনে ভাঙন কার?
ঘোমটা টানা বধূর চোখে
খাঁ খাঁ করছে রোদ,
সেই পাষাণকে বুকে পেলে
নিবে যে প্রতিশোধ।
মাঝনদীতে চোখটা খুঁজে
সেই মানুষের চোখ,
যে মানুষটা রোজনিশিতে
ডাকতো পেতে বুক!
জল আনিতে জলের ঘাটে
আড়াল মনে ভাবে,
সেই মানুষটা আসলে ফিরে
আপন করে পাবে?
কলসি ভাসে কালো স্রোতে
কলঙ্ক রটিছে গাঁয়,
জল আনিতে গিয়া কইন্যা
জল ফেলিয়া যায়!
পলাশ, নরসিংদী।