আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

আশিক মাহমুদ রিয়াদ

 

একটি নগ্ন গল্প

 

দেউরীতে দাঁড়িয়ে চুলের খোপা মেলে, নতুন করে বাঁধলো নিপা। ওপাশের ঘর থেকে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতেই মরিচা ধরা দরজার প্যাঁচ বিশ্রি শব্দ করে খুলতেই নিপার নজর গেলো সেদিকে। একটি স্যান্ডো গেঞ্জি আর সাদা লুঙ্গি, গলায় ঝুলানো সিলভারের চেইন ঝুলিয়ে, বেশ আয়েশ করেই নিজের সকালটা শুরু করলো সাদেক। এসব দৃশ্য সামনা সামনি দরজা থেকে প্রত্যক্ষ করলো নিপা। হাই তুলে সামনের দরজার দিকে তাকাতেই, নিপার সদ্য চুলে বেণী করে চেহারা যেন সকালের প্রস্ফুটিত ফুলের মতো লাগলো সাদেকের শ্যামলা রঙের লম্বাটে মুখ, ঠোটের নিচে তিল। নিপা একগাল হেসে সাদেকের সকালের ঘুম উড়িয়ে দিলো, সকালে পুরুষমানুষের শরীরের সাথে সাথে যেন যৌবন পুনঃরজ্জীবীত হয়। সাদেকের যৌবনে ফুল ফুটেছে মাত্র, সবে মাত্র এক’বার দু’বার নারী সঙ্গীর সাথে বিনিময় করা হয়েছে ভালোবাসার হিসাব নিকাশ।

সাদেক একগাল হেসে দরজার ভেতরে পা দিয়ে আবার চলে গেলো ঘরের ভেতরে। দরজার কপাট আটকিয়ে সকাল সকাল নিজের শরীরের উত্তপ্ত লাভা বের করবে ঠিক এমন সময় আবারও চোখে চোখ পড়ে গেলো নিপার। নিপা একগাল হাসি হেসে জানিয়ে দিলো, সাদেক এখন কি করতে চায় তা নিপা জানে। এর আগে বার কয়েক সকালের চা-নাশতা দিতে এসে নিপা নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করেছে সাদেক এর সে ভগ্ন দশাকে। নিজের চোখে স্বাক্ষী হয়েছে সাদেক সর্বসুখের শেষভাগে। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছে সেসব। কখনো টু-শব্দটি করে নি। সাদেকের চরম উত্তেজনায় শরীর যখন প্রচন্ড জ্বরের মতো কেপে উঠেছে, তার পর বার দুয়েক কাশ দিয়ে ঘরে ঢুকেছে নিপা। আড়চোখে খেয়াল করেছে সাদেকের লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া শ্যামলা রাঙামুখ। নিপা দরজার বাইরে এসে শাড়ি চেপে মিটিমিটি হেসেছে।



আজও হলো সেরকম ঘটনা, সকাল সকাল হাসের ডিম মামলেট আর একগ্লাস দুধ এনে ছোট্ট টি-টেবিলটার উপরে রাখে। নিপা ঘরে ঢুকতেই অর্ধনগ্ন সাদেক ধড়মড়িয়ে নিজের কোমড়ের লুঙ্গি উপরে তুলে নিলো, সাদেকের এমন অবস্থা দেখে নিপা এবার সাদেকের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কাঁচিতে শান দেওয়া ভালো, অতি শানে কাঁচি ক্ষয়’ সেই সাথে ক্যাঁচাত করে একটি শব্দ করে হাতের দুই আঙুলে কাঁচির ন্যায়ে করে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলো ঘর থেকে। ধড়মড় করা বুকের সাথে যেন নতুন এক অনুভূতির সঞ্চার হলো সাদেকের।



*
রেলস্টেশনের পাশের বাজার। ধারে কাছে নদীও আছে একটা। সকাল সকাল দোকেন গিয়ে শাটার তুলে কম্পিউটার টেবিলে ঝাড়ঝাপ্টা দিয়ে চেয়ারে বসে। ছোটখাট একটা কম্পিউটারের দোকান তার, কেউ আসে ছবি প্রিন্ট করাতে। কেউ আবার মোবাইলে গান-ভিডিও এবং নীলছবির টানে। সাদেকের দোকানে নীলছবির খদ্দেরই বেশি। রেলস্টেশনের হকার থেকে শুরু করে মাঝেমধ্যে মাস্টাররাও তার কাছে আসে গোপনে এসব ভিডিও ফোনে ডাউনলোড করাতে। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে, পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো তাকে। তাই বাধ্য হয়ে সেসব ভিডিও ডিলিট করে দিয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে নিপা তার ফোনটা সাদেকের হাতে দিয়ে বলেছিলো, শাহরুখ-সালমানের কিছু হিন্দি গান যেন সে ভরে নিয়ে আসে। নিপার কথার প্রত্যেকটি অঙ্গভঙ্গি সাদেক, নিভৃতে খেয়াল করে। দোকানে এসে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি খুলে, কার্ড রিডারে সংযুক্ত করলো। মেমরির ভেতরে ক্লিক করে সব জায়গায় নিজের অজান্তেই চষে বেড়ালো, শেষের একটি ফোল্ডারের ভেতরে অনেকগুলো ফোল্ডার করা। সেখানে পাওয়া গেলো নিপা আর তার স্বামী জয়নালের অন্তরঙ্গ মুহুর্ত। ঠিক কেমন যেন ভেতরটায় হুহু করে উঠলো সাদেকের। নিপা সাদেকের ভাইয়ের বউ। জয়নাল নিপাকে বিয়ে করে, এলাকায় একটি মামলার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকায় পলাতক আছে। বাড়িতে আসে না প্রায়, বছর তিনেক হলো।

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প



জয়নালকে নিপা নিজের শরীর উজাড় করে আড়ালে সুখ দিতো, এই পদ্ধতি অবশ্য কিছুটা শিখিয়েও দিয়েছিলো সাদেক। কেমন করে ইমোতে কল করতে হয়, কিভাবে পাঠাতে হয় ভিডিও। সেসব দৃষ্টি এড়ালো না সাদেকের, বেশ কিছুক্ষণ মগ্নছিলো নিপার অনাবৃত শরীড়ের প্রত্যেকটি অক্ষর পড়তে। দোকানের কাস্টমার এলে সে নিভৃতেই তাদের পাঠিয়ে দিতো। এবার নিপার সেই ছবি আর ভিডিও গুলো সাদেক কপি করে নিয়ে নিলো নিজের ফোনে। ততক্ষণে সাদেকের পৌরষসত্ত্বায় তাল মাতাল এক হাওয়া বয়ে গিয়েছে, বিক্ষুদ্ধ হয়েছে ঘৃণ্যের পাশবিক শোক।

নিপার সাথে জয়নালের বিয়ে হয়েছে প্রায় বছর চারেক হলো। বছরখানেকের মতো নিপা তার স্বামীর কাছ থেকে স্বর্গের সুখ পেয়েছিলো। এরপর আর পৌরষের ছোঁয়া পায়নি। সদ্য যুবতী নারী যখন কোন পুরুষের কাছ থেকে তার সুখ আদায় করে নেয়, তখন সেই পৌরষটি সেই নারীর কাছে ভীষণ ঋণী হয়ে পড়ে। প্রতিটি রাতের আঁধিয়ারে, উত্তপ্ত নিশ্বাসের ঋণ। নিপার উত্তপ্ত যৌবন ভীষণ ভাবে ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করেছে। সে বার বার চেয়েছে সাদেকের আশপাশ দিয়ে হেটে সাদেকের কাছ থেকে একটু পরম সুখ আদায় করে নিতে, কিন্তু সাদেক নিপাকে সেই সুযোগ দেয়নি। বরাবর নিপাকে দেখেছে বড় ভাইয়ের স্ত্রী হিসেবে। কিন্তু হতভাগা জয়নাল যে খপ্পরে পড়েছে তাতে বছর দুয়েক এর মধ্যে সে বাড়িতে ফিরতে পারে কি না কে জানে।


২.
ভাদ্রের ভ্যাপসা গরম! উত্তপ্ত রোদে পথঘাট ভেঁজা মুক্তোর মতো সাদা হয়ে আছে। সাদেক সেদিন দুপুরে বাড়িতে ফিরে গোসল সেরে এসে দেখলো নিপা দাঁড়িয়েছে তার দরজার চৌকাঠে। এক গাল কিশোরী মেয়ের মতো হেসে নিপা বললো,”দেওরারে তো আইজক্যা শাহরুখের মতো লাগতেছে।” সাদেকের নাকের নিচে গোফ শুধু। সারা গাল সে ক্লিন শেইভ করে, চুল মোটামুটি ধাচের বড়। সাদেক নিপার দিকে তাকিয়ে এক গাল সৌজন্যমূলক হাসি হেসে নিজের গামছা দড়ির সাথে মেলে আবারও ঘরে ঢুকলো। নিপা সাদেকের কাছে এসে ফিসফিসে গলায় বললো,”আমার মোবাইল দাও, যা করতে বলেছিলাম করেছো?’ সাদেক সকাল থেকে যে ভ্রমে তার সময় অতিবাহিত করেছে তাতে সেসবের কিঞ্চিত মনে পরে নি। মোবাইলটিও রেখে এসেছে দোকানে। জিহ্ববে ভূলসূচক একটি কামড় দিয়ে সাদেক বললো,”ভাবী মোবাইল তো দোকানে রাইখা আইছি। রাত্তিরে বাড়িত ফিরলে তহন নিও। মা’য়রে কও খাওন দিতে” নিপা ছুট লাগালো, খাবার ঘরে গিয়ে শাশুড়ির আগেই সেই দেবরের জন্য খাবার বাড়লো। সাদেকের পাশে দাঁড়িয়ে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করলো। সাদেকের ক্ষাণিকের জন্য মনে হলো, এ যেন তার স্ত্রী বাতাস করছে।

সেদিন দুপুরেই খাবার খেয়ে শান্ত এক ঘুম দিয়েছে সাদেক, ঘুম থেকে উথে দেখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে নিপা। ততক্ষণে নিপাকে নিয়েই কি এক স্বপ্নে নিজের শরীর অপবিত্র করেছে সাদেক। ঘুম থেকে উঠেই নিপাকে চোখের সামনে দেখতেই নিজের কাছে কেমন অপরাধী লাগলো সাদেকের।



৩.
রাতে সাদেক বাড়িতে ফিরতেই খুব ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে। মাঝেমধ্যে একটু নেশাপানি করার অভ্যাস আছে তার, উত্তরডাঙ্গায় আজ একটু যাত্রার আয়োজন ছিলো, সেখান থেকে বাংলা মদ খেয়ে সঙ্গে একটু গাঁজা টেনে নিজেকে সে ক্লান্তির চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। ভাদ্রের উত্তপ্ত গরম, কিছুক্ষণ পর নিপা এলো। সাদেক নিপার হাতে মোবাইল দিয়ে জানিয়ে দিলো, আজ রাতে সে খাবে না। ভীষণ ক্লান্ত, নিপা যাওয়ার আগে দরজা ভিজিয়ে দিয়ে গেলো।




নেশাতুর ঘুম দিয়ে মধ্য রাতে যখন প্রচন্ড প্রসবের তোড়ে সাদেকের ঘুম ভেঙেছে, তখন সে তার পাশে আরেকটি শরীরের উপস্থিতি টের পেয়ে খানিক ঘাবড়ে গিয়েছিলো প্রথমে। এরপর অবশ্য বুঝতে পেরেছে এই শরীর তার ভাবী-নিপার। বাইরে মুশল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে, বজ্রপাতে চারপাশ দিনের আলোর মতও ফর্সা হয়ে যাচ্ছে। ঘরের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে প্রসাব শেষে দরজার কপাট আটকে ঘরের ভেতরে আসতেই বজ্রপাতের আলোয় সে দেখলো নিপার বুকের কাপড় সরে গিয়েছে। কালো ব্লাউজের তলায় নিপার সর্বোগোপন শরীরের অঙ্গ সে দেখেছে আজ দুপুরে। নেশার তোড় কাটেনি, মুত্র বিসর্জনের পরে যেন তার পৌরষসত্ত্বা ক্ষেপে আছে প্রবল ক্রোধে তবে শরীরতা বেশ ক্লান্ত বিধায় সে নিপার পাশ দিয়ে ঘুমিয়ে গেলো। একটি বারের জন্যেও তার মনে হলো না সে কেন তার ঘরে শুতে এসেছে।



বৃষ্টিস্নাত রাতে সদ্য মাসিক পেরোনো নিপার কামনা ক্রোধ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সে পরম সুখে কাতর হতে চায়, ঘুমের ঘোরে সাদেক বার কয়েক তার শরীরে হাত দিয়েছে। পাশ ফিরে শুয়েছে, নিপাও সাদেকের উলটো দিকে শুয়ে গাঁয়ে কথা দিয়েছে। সাদেকের পৌরষদন্ডের স্পর্শের সাথে শিহরিত স্পর্শে নিপার শরীর থেকে পরম পারদের গাড় মিশ্রণ লেপ্টে দিয়েছে সব। সে চায় সাদেকের ভীষণ কাম ক্ষুধায়, তাই দুপুরেই টোপ দিয়েছিলো সাদেককে। সাদেক সেই টোপ গিললেও নেশাতুর ঘুমে বিভোর। নিপা এই সুযোগ কাজে লাগালো, মৃতদেহের মতো সাদেকের শরীর সমান করে সাদেকের উপরে বসে চাপলো। আজ রাতে সে মহারানী, ঘোড়ার উপর চেপে শান্তির চরম উদ্ভ্রান্ত সুখের ক্ষুধায় সে নিজেকে ভিজিয়ে দিচ্ছে প্রতিটি মুহুর্তে। সাদেক কিছুই টের পাচ্ছে নাম, সাদেকের শরীরের জুড়ো বুনো শুয়রের মতো চষে বেড়ালো। বজ্রপাতের প্রতিটি শব্দের মতো নিজের শরীরকে বার কয়েক দোলালো চরম ক্ষুধায়। এরপর বিকট শব্দে হলো বজ্রপাত, জলাশয়ের পানির ঢেউয়ে ভেসে গেলো উলুবণ। সেই বণের চরম ক্ষুধার্থ প্রাণির মতো নিজেজেকে সাদেকের উপরেই ঢেলে দিলো নিপা। নিজের শরীরের স্পর্শ রক্তের গরম স্রোত অনুভব করলো। শেষ রাতে যখন সাদেকের ঘুম আবারও ভাঙলো তখন সাদেক দেখলো সে অর্ধনগ্ন তাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে নিপা। এমন বিশ্রি কান্ড দেখে মেজাজ চটে গেলো, সেই সাথে লুঙ্গি মাখামাখি হয়েছে চরম কামনার রসে। সে উঠে লুঙ্গি বদল করে ঘরের ভেতরেই আরেকটি স্টিক ধরিয়ে আবারও বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।



৪.
পরদিন দুপুরে দোকান থেকে আসতেই সাদেক জানলো, তাকে ঢাকায় যেতে হবে। শুধু তাই নয়, সঙ্গে নিপাকেও নিতে হবে। বিকেলের ট্রেন ধরে রাতে গিয়ে ঢাকায় পৌছাবে তারা। ঢাকায় থাকে নিপার স্বামী জয়নাল, নিপাকে সাথে নিয়ে কয়েকদিন জয়নালের কাছ থেকে ঘুরে আসবে। নিপা ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে রেডি হলো, সূর্য যখন ঢলে পড়ে পড়ে ভাব তখন ঘর থেকে বেরিয়ে স্টেশনের দিকে রওনা করলো তারা।



সারা পথ নিপা সাদেকের কাঁধে মাথা দিয়ে ঘুমিয়েছে। এতে সাদেকের প্রথম দিকে অসহ্য লাগলেও পরে মানিয়ে নিয়েছে। রাত এগারোটার দিকে তারা পৌছায় ঢাকায়। সেখানে তাদের জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলো জয়নাল। সিএনজি চেপে জয়নালের সাথে তারা চলে গেলো জয়নালের ঘরে। মোড়ের মাথা থেকে, ডাস্টবিনের পঁচা গন্ধ পেড়িয়ে সরু একটি রাস্তা ধরে তারা জয়নালের ঘর পেলো, এখানে আলোবাতাস নেই। জানলা খুললেও পাশের বিল্ডিন উচু হওয়ায় তা দিয়ে বাতাস ঢোকার কোন বালাই নেই। হাত মুখ ধুয়ে, মোড়ের দোকান থেকে আনা বিরিয়ানী খেয়ে, জয়নাল পরে গেলো দ্বিধায়। এ ঘরে খাট মাত্র একটা। মেঝেতেও জায়গা নেই, একটি মাত্র মশারী। বউ আসবে সেটা ভেবে তার আরেকটা মশারি কেনার দরকার ছিলো। কিন্তু মশারি কিনে যে টাঙাবে সেই দুটো মশারি টানানোরই কোন জায়গা নেই তার ঘরে।



দীর্ঘদিন পরে স্বামী স্ত্রী এক হয়েছে যখন তখন এ রাতটি নিঃসন্দেহ বাসররাতের তুলনায় কম নয়। সাদেক এই ভেবে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে, ঢাকায় রাত হয় না। রাস্তা থেকে সারারাত সিএনজি কিংবা রিক্সার আওয়াজ ভেসে আসে। এতে ঘুম হয় না সাদেকের, এর চেয়ে ভালো ছিলো দুইটা স্টিক নিয়ে আসা, টেনে এসে নিরিবিলি শুয়ে থাকতো। কিন্তু স্টিক আনলেই বা কি! ধরানোর জায়গা নেই, ট্রেনে জার্নি করেছে দেখে মাথা ব্যথা করছে। এদিকে ঘুমও আসছে না। রাত গভীর হয়, একটু তন্দ্রাচ্ছ্বন্ন হয়েছে সাদেক এর মধ্যেই খাটের দুলুনিতে ধুম ভেঙে যায়। সে বুঝতে পারে, তার পাশে কি চলছে। দীর্ঘক্ষণ একজায়গায় কুজো হয়ে শুয়ে থাকার কারণে, তার সে পাশ ব্যাথা হয়ে উঠেছে। ওপাশ ফিরতে পারছে না, তাও কিছুক্ষণ পর ওপাশ ফিরলো। শ্যাওলা শহরের আঁধিয়ারে দুই নর-নারী মেতেছে কামনার চরম উত্তেজনায়। মেয়েটি ইচ্ছে করেই তার নিশ্বাস চেপে রাখছে, কিছুক্ষণ পর আবার চুমুর শব্দে উত্তেজনার শীৎকার হাসিতে মেতে উঠেছে পুরনো ঘরের দেয়াল। ভ্যাপসা গরমের সাথে খাট দুলুনিতে এই আঁধিয়ারে নিজেকে বড্ড পাষান মনে হচ্ছে সাদেকের। নরনারীর নগ্নখেলা শেষ হলে চোখ খোলে সাদেক, নিপার শরীর পুরোটা উলঙ্গ। জয়নাল ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে, কোনরকম লুঙ্গিতে গিট দিয়ে। নিপা কোন মতে পা জামা পড়ে! চোখ পিট পিট করে সেসবের প্রত্যেকটি দৃশ্য এতক্ষণ গিলেছে সাদেক। গভীর রাত, ভ্যাপসা গরমের নাজেহাল অবস্থা। জয়নাল ওপাশ ফিরলে। সাদেকের শরীরে হাত রাখে নিপা। ক্ষাণিকের জন্য সে ভুলে যায়, তার পাশে শোয়া আছে তার স্বামী জয়নাল। এভাবেই কাটে একটি রাত! সে রাতে একটুও ঘুম হয় না কারো। সকালে প্রচন্ড মুত্রবেগে চোখ খুলতেই সাদেক দেখে এই ঘরের ভেতরে শুধু সাদেক আর নিপা। নিপা ওপাশ ফিরে বক্ষবন্ধনীর হুক লাগাচ্ছে, সাদেক উঠে বসে। সাদেকের দিকে নিপা ফিরতেই আচমকা ভয় পেয়ে হুক ছেড়ে দেয়। অনাবৃত বক্ষবন্ধনীহীন নিপার শ্যামলা গায়ের সবথেকে আকর্ষণীয় জিনিসের দিকে সাদেক চোখ দেয়। এ জিনিস অবশ্য সে ক’দিন আগেই আবিস্কার করেছে নিপার মোবাইলে। সে সকালে নিপাকে এমন দেখে সাদেক ক্ষাণিক লজ্জা পেয়ে বসে! উঠে বাথরুমে বেদম জোড়ে মূত্র বিসর্জন শেষে ঘরে এসে একটা সিগারেট ধরায়। নিপা কাছে এগিয়ে আসে সাদেকের। সাদেক নিপাকে পাত্তা দেয় না, প্রচন্ড কাম ক্ষুধায় সাদেককে ঘিরে ধরলেও সাদেক বরাবরই নিপাকে অগ্রাহ্য করে।



এরপর এরকম বিভিষিকাময় রাত আরও কাটিয়েছে সাদেক। তিন রাতে না ঘুমিয়ে চেহারা খারাপ হয়ে গিয়েছে, পরম সুখে জয়নুলের উত্তপ্ত রক্তের স্রোতের প্রতিটি কণা নিজের শরীরে বিন্দু বিন্দু উপভোগ করেছে নিপা। প্রত্যেকরাতেই জয়নুলের কাম রসে নিজেকে শিক্ত করেছে সে।

বাড়িতে ফেরার বেশ কিছুদিন পরে নিপা জানতে পারলো সে গর্ভধারণ করেছে। এই কথা সে অবশ্য ঢাকায় যাওয়ার রাতেই টের পেয়েছিলো। সে রাতে হন্তদন্ত হয়ে নিজেকে জয়নুলের সাথে কামনায় জড়িয়েছে সে। দীর্ঘদিন পরে স্বামীর কাছ থেকে নিজের শরীরে বাচ্চা জন্মদানের জন্য তার অংশটুকু নিয়েছে।

বছরখানেক কেটে যাওয়ার পরে নিপার সন্তান জন্মদানের পরে, সাদেক এক শীতের সকালে নিপার সন্তানকে কোলে নিয়ে রোদে বসে আছে। সন্তানটি দেখতে সাদেকের মতোই হয়েছে। এ সন্তানের বাবা অবশ্য সাদেকই!

 

জন্মান্তরের বুকে


টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে সারাদিন, ফসলি জমি থেকে উঠে, শুপারি গাছের খোল দিয়ে অন্তত বিশটা জোঁক ছাড়িয়ে বাড়ির দিকে হাটা দিলো রসু, বাড়িতে ঢোকার আগে, মতিনের দোকান থেকে একটা সাবান আর দুই টাকা দিয়ে শ্যাম্পু কিনে মাদরাসার পুকুর থেকে গোশল দিয়ে, শিনল চাপরাশিদের বাড়ির উঠনের ওপর দিয়ে হেটে বাড়িতে ঢোকার পরিকল্পনা রসুর, মতিনের দোকানের সামনে আসতেই, পাওনাদারের সাথে মুখোমুখি হবে বিধায়, সে আর ও পথে গেলো না! দোকানের পিছন ঘুরে বাগান দিয়ে সোজা হেটে যাওয়ার পথে চোখে পড়লো, দুটো সাপ মিলনে ব্যাস্ত। গা ছম ছম করে উঠলো, এই ঘনঘোর বৃষ্টির দুপুর মানেই অভিশপ্ত কিছু। তাছাড়া এ বাগানেই, বছর তিনেক আগে সোবহান মাস্টারদের বাড়ির কাজের মেয়ে আত্মহত্যা করেছিলো। জামরুল গাছটার ডালে, শিনল চাপরাসীদের বাড়ি উঠন, নিরিবিলি। ভরদুপুর। শিনল বাড়িতে থাকে না অবশ্য…শহরে তার সুদের ব্যবসা আছে।





ঘরের পাশ দিয়ে পিছনের দিকে যেতেই, আচমকা চিৎকারের ডাকে থমকে গেলো রসু। হোগলপাতার বেড়া টপকিয়ে, উকি দিতেই দেখলো তার জীবনের অপ্রাপ্তির এক দৃশ্য, এক নগ্ন নারী একটা সাপের ভয়ে চিৎকার করছে, শিনলদের বাড়ি থেকে পরের বাড়ি বহুদূরে। বর্ষার দুপুর! নারীটি এবার চোখ রাখলো রসুর দিকে। রসু লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললো। নগ্ন নারীটি দৌড়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে কোন মতে শাড়ির প্যাচ দিয়ে, ঘরের ভেতর থেকেই বললো। আপনে না আইলে আইজক্যা আরও ডরাইতাম রসু ভাই। রসু ক্ষানিকটা স্বস্তি পেলো নিজের মধ্যে, এলো পৌরষত্যের অদ্ভুত ক্রোধের বাণ। সে বললো, যাই ভাবি। ডরাইয়েন না, এইটা জলঢোউরা সাপ। এতে কামড়ায় না।





ভরদুপুরে নগ্ন-নারীকে দেখে রসুর গাঁকাপিয়ে জ্বর এলো, সেই সাথে নিজের পৌরষদন্ডের চাপ বাড়তেই থাকলো। বার বার কল্পনায় আসতে থাকলো সেই নারী। সেই নারীকে রসু ভাবী বলে ডাকে, তার নাম সোনালি।

শ্রাবণের রাত! টিপ টিপ সারাদিন বৃষ্টি হলেও আঁধারে ঘনঘোরে আমাবস্যার দিনে আজ বৃষ্টি নেই। আকাশে কালো মেঘ করে আছে ঠিকই, রসু ফিরছে ঘরে, এত রাতে বাগান পেড়িয়ে নয়, চাপরাশী বাড়িদের উঠোন পেড়িয়েই মৃদ্যু গলায় শুনলো..রসু ভাই যায় নাকি? নারী কন্ঠ…
-হ ভাবী কিছু কইবার চান?
-আফনার ভাইয়ের কি কোন খোঁজ আছে রসু ভাই?
-কেন ভাই আসে না বাড়িতে?
-সেই কবে বের হইছে বাড়িত্থেইকা! এখনো আসার নাম গন্ধ নাই।
-এয়া কিরকম কথা? ( এই বলে রসু ক্ষাণিক দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়)। কিছুক্ষণ ধরে ভাবছে , সে কি বাড়ির দিকে যাবে নাকি থেকে যাবে। শ্রাবণের রাত। গ্রাম। গাছপাতায় টপটপ করে জমে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা ঝড়ে যাওয়ার শব্দ। )
-যাই ভা্বী কোন দরকার হইলে ডাইকেন।



রসু দু-তিন পা হাটা দিতেই, ডেকে ওঠে সোনালি। যাইবেন? আরেকটু রইয়া যান। গপ-সপ করি। হারাদিন একা একা বইয়া থাকোন যায়, আফনে বন। মুড়ি আর মোয়া দেই। রসু বারান্দায় বসে, একটা কুপি নিয়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে হেঁটে আসে সোনালি। তার নাকফুলটা বেশ বড়, হাতে কাচেঁর চুড়ি, ব্লাউজহীন…খায়েরী শাড়ির নীচের দোলুনি চোখ এড়ায় না রসুর। সে কোষ পেতে মুড়ি উঠায়, শুকনো মুড়িতে…গলা আঁটকে যায়, কেঁশে ওঠে সেই কাঁশিতে কুপি নিভে গিয়ে অন্ধকার হয়ে যায়…রসু ঢকঢগিয়ে পানি খেতে খেতে কুপির আলো জ্বলে ওঠে আবার, হাটু গেড়ে নুয়ে দিয়াশলাই কাঠি দিয়ে কুপি জ্বালায় সোনালি।



-ভাবীর দ্যাশ কি ভাটি অঞ্চলে?, নিস্তব্ধতা কাটাতে প্রশ্ন করে রসু।
রসুর প্রশ্নে কথা বলার জোড় পেয়ে আত্মবিশ্বাসের সুরে সোনালি মৃদু কন্ঠে বলে,
হয় ভাই~আফনে গেছেন কখনো ঐ দ্যাশে?
-রসু মুড়ি চাবাতে চাবাতে বলে, ‘ না, ঐদিকে যাওয়া হয় নাই। তয় মাইনশ্যের কাছে শুনছি ঐ দ্যাশের মাইয়া-মানুষ নাকি পরীর লাহান সুন্দর।’ (আড়চোখে সোনালির দিকে চেয়ে কথা শেষ করে রসু! লজ্জা পেয়ে মাথায় ঘোমটা তোলে সোনালী)
হাসতে হাসতে বলে, ‘আচ্ছা ভাই! আফনার লইগা আমগো দ্যাশের মাইয়া খুঁজমু।
রসু এবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় নিজের মধ্যে, বণের মধ্যে বাঘ যেভাবে শিকার ধরার জন্য ওত পেতে থাকে। রসু এবার বলে ওঠে, ‘আফনাগো দ্যাশের মাইয়া মানুষের গতর খানা যে কী সুন্দর ভাবী।’ সোনালি এবারও লজ্জা পায়, শরীর টা নাঁচিয়ে বুকের ওপরের কাপড় নাড়াচাড়া করে হাত দিয়ে, রসুর চোখ যায় সেদিকে। লম্বা মুখের সাথে, ঠোটটাও ভীষণ উত্তপ্ত, নাকটা লম্বা, কানের পাশে চুল পড়ে আছে। আচমকা দপ করে বাতাস এসে কুপি নিভিয়ে দেয়, ‘রসু এক লাফে জড়িয়ে ধরে সোনালিকে, যেমন বাঘ তার শিকার কে ধরে, ঠোটের সাথে নিজের ঠোট লাগিয়ে দেয়, সোনালি যেন দীর্ঘদিন ধরে কোন পুরুষের স্পর্শ না-পেয়ে লজ্জাবতী পাতার মত নেতিয়ে পড়ে মাটির মেঝেতে! সেই নিস্তব্ধ রাতে চলে ধস্তাধস্তি, অন্ধকারের মধ্যে দুটি নর-নারীর সাপের মতো ফোস ফোস শব্দে নিস্তব্ধ নিগুড় রাতও ভারী হয়ে ওঠে, তৃপ্তির সুখে।



রসুর জিহ্ববের প্রতি স্পর্শ উপভোগ করে সোনালি, সোনালিও যেন পরম আদরে পরপুরুষকে নিজের করে নেয়, উত্তপ্ত রাতে ভিঁজে ওঠে চাষহীণ উর্বর জমি। রসু বাগিয়ে নেয় সবটুকু! ঝির ঝিরে বৃষ্টি নামে। এভাবেই হয় রসুর প্রথম নারী স্পর্শের ভোগ।

সে রাতের পরে রসু সোনালির সামনে আসতে ভীষণ লজ্জা পেয়েছে, এরপরের দিন শিনল চাপরাশী ফিরেছে বাড়িতে। রসুরও আসার দরকার পরেনি, শিনলের সাথে দেখা হয়েছে রসুর, একসাথে বসে চাও খেয়েছে। বাজারের ডাক্তারের কাছে থেকে, কনডমের প্যাকেট নিয়ে বাড়িতে গিয়েছে এমনটাও উঠে এসেছে মতিনের চায়ের দোকানের সান্ধ্যকালীন আড্ডায়। রসু অবশ্য সে রাতেই, ওত পেতেছিলো শিনল চাপরাশীর ঘরে, বেড়ার পাশে থেকে নিশুতি রাতে…চেয়ে দেখেছে কুপির আলোয় দুটি নগ্ন দেহের মিলন। হাত বুলিয়েছে নিজের পৌরষসত্ত্বায়, উন্মাদনা চেপেছে রসুর ঘাড়ে।
শিনল অবশ্য সে উর্বর জমিতে চাষাবাদ করতে পারেনা ভালোভাবে, সোনালির রাতভর শরীরের ক্ষুধা থেকে যায়। উলঙ্গ হয়ে শুয়ে থাকে স্বামীর গায়ে হাত রাখে, স্বামী অবশ্য সে হাত বার বার সরিয়ে দেয়, এরপর নিজেই নিজের শরীরকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। বেড়ার ফাঁক থেকে এসব দৃষ্টি বিচলিত হয় না, রসুর। সে যেন মনোবল ফিরে পায়! সোনালীকে আরেকবার অবৈধভাবে ছোয়ার।



-‘আমি ঢাকায় যামু! আমার আসতে কয়েকদিন দেরী হইবো। তুমি সাবধানে থাইকো। মতিনের দোকানে বলা আছে, যা লাগবে নিয়া আইসো। ‘
-মুখ ভার করে ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে সোনালী। তার চোখে জল! স্বামী এতদিন পরে বাড়িতে ফিরেছে। তার মরুভূমিতে জল এসেছে। স্বামীর সাথে শুয়ে সে বুনেছে কত রঙিন স্বপ্নের।

শিনল চাপরাশী বেশ সৌখিন মানুষ। মাথার চুল বড় নাকের নিচে ঠোট জুড়ে বড় একটা গোফ আর সারা মুখ ক্লিন শেভ করে আফটার শেভ মাখা। মাথার চুলের সাথে বুকের পশমও পাতলা! বয়স ৪৫ হলেও চুল পাকেনি, গায়ের চামড়ায় এখনো নেই কোন পরিবর্তন। সোনালির বয়স সবে মাত্র চব্বিশ! কিছু বুড়ো হলেও তার দেহের আগুন জ্বলে! শিনল চাপরাশী বিছানায় বউকে আদর করতে কম রাখে না, তাও সোনালী যৌবনের যৌনতার ক্ষুধায় মরে, কারণ শিনল বাড়িতে এসে তার বউকে সেরকম ছোঁয় না৷ গ্রামের মানুষ বলে সে নাকি শহরের বেশ্যা পাড়ায় ঘোরে। কয়েকজন দেখেছেও, সুদের ব্যবসার সাথে তার নাকি অস্ত্রেরও ব্যবসা আছে। নতুন পিস্তল ও কোমড়ে দেখেছে কেউ কেউ!

শিনল ঘর থেকে বেরোবার আগে বউয়ের কপালে চুম্বন করলো! সোনালি তাও মুখ ভার করে আছে। এবার সে সোনালির ঠোটে ঠোট রেখে লম্বা একটা চুম্বন করলো, সোনালীও চুম্বনে বেশ পটু। তবে শিনলের সাথে মেয়েদের শোয়াবসায় শিনল এসবে ভীষণ পটু! সোনালি শিনলের কাপড়ের প্যান্টের চেইনে হাত দিতেই দেখলো শিনলের পৌরষত্ব্য জাগ্রত হয়েছে, সোনালির নিশ্বাস ভারী হলো এবার। সে শিনলের সবটুকু নিজের করে নিতে চায় এই মুহুর্তে। কিন্তু শিনলের হাতে তাড়া! সে সোনালির হাত সরিয়ে সোনালির কপালে শেষ চুম্বন দিয়ে ঘর থেকে বেরোলো। বেরোবার আগে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে, ফুর ফুর করে টানতে বৃষ্টি মাখা সন্ধ্যায় বেরিয়ে গেলো লঞ্চ ঘাটের দিকে।

ভর সন্ধ্যায় সোনালীর সারা শরীর জুড়ে চাপলো যৌণতার কড়াল ভূত। দুঁয়ার এটে, রান্না ঘর থেকে বেগুন নিয়ে এসে কাঁথামুড়ি দিয়ে সে চালালো নিজের শরীর জুড়ে অনৈত্য নির্যাতন। বিভৎস সন্ধ্যাবেলায় ঝিরিঝির বৃষ্টির সাথে নারী নিশ্বাসের শব্দে ভারী হয়ে উঠলো কাল-সন্ধ্যাবেলা।

ঘরের বেড়ার ফুটো দিয়ে এসব দৃশ্যের অবতারণ হলো রসুর চোখে৷ সে মনে সাহস পেলো! শরীর জুড়ে এলো তার অদ্ভুত জোড়! সে রাতেই রসু আবার আঘাত হানলো সোনালির কপাটে। রাত যখন মোটামুটি গভীর, ঠিক তখনই টোকা পড়ে সোনালীর দরজায়। সোনালি ঘুমে কাতর, কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে উঠে দরজা খুলতেই রসুর ঠোট এসে লাগে সোনালির ঠোটে। সোনালি হতবিহ্ববল হওয়ার আগেই, আঁধার রাতে রসুর হানায় সে নিজেকে খুঁজে নেয় অন্য দুনিয়ায়। রসুর জিহ্বের কড়াল গ্রাসে নেশাতুর হয় সোনালী। দরজাটা ভিজিয়ে দিয়েছে। শ্রাবণের পূর্ণিমা সহজে দেখা না গেলেও আজ দিনের আলোর মতো ফকফকে। সুপাড়ি বাগানে ঝড়ো বাতাস, বৃষ্টি নেই। আষাড়ে জোয়ার আর ঢালের পানিতে টইটম্বুর সব। পূর্ণিমার জোয়াড়ে জোয়াড় এসেছে সোনালীর শরীরের, সে রসুর সবটুকু সুখ আস্বাদন করে নিচ্ছে নিজের মতো করে।



ঘন নিশ্বাস বাড়ে, সেই সাথে ভেসে আসে দুটি ঠোটের চুম্বনের শব্দ। তারা একে অপরের চোখের দিকে তাকায়, পুরুষটি ভীষণ যত্নে আদর করে মেয়েটিকে। মেয়েটির কপালে চুমু দেয়, তাদের শরীর নাচে ফসলি জমির শস্যক্ষেতের মতো।

টিনের চাল দিয়ে চাঁদের আলো এসে সৃষ্টি হয়েছে আল্পনার, সেই কাব্যিক প্রেক্ষাপটে দুটি নগ্ন শরীর নিজেদের মতো করে নিজেদের সুখ বিলাচ্ছে। সুখের শেষ সীমানায় যখন রসু, বৈঠা চালাচ্ছে সমুদ্রের বুকে। ঠিক তখনই রক্তাক্ত হলো সোনালির নগ্ন বুক।
মাঝরাত্তিরে পিস্তলের বিকট শব্দ! মদ্যপ গলায় বলে ওঠে, খানকি মাগী? পরপুরুষ নিয়া এইখান চাটাচাটি লাগাইসোস?” রসুর মাথা থেকে রক্ত গড়ায় সোনালির বুকে, রসুর পৌরসত্ত্ব এখনো সোনালীর অভ্যন্তরে! সোনালি হতবিহ্বল হয়।
-আর তুই খানকির পোলা? তুই ভ্যাটকাইয়াও আমার বউয়ের শরীরের উপর শুইয়া আছস? খানকির পোলা? মইরাও আমার বউরে ভোগ করার সুখ যায় নাই তোর?
শিনল হাত দিয়ে মৃতদেহটিকে তোলে! সে আরো একটি বিভৎস দৃশ্যের সম্মুক্ষিণ হয়। রসুর পৌরসসত্ত্বা এখনো সোনালির অভ্যন্তরে। সে ভীষণ রাগী হয়ে মৃতদেহটিকে তুলে আবারও কয়েকটি গুলি করে। গুলি করার সাথে সাথে শরীর থেকে তাজা রক্ত ছিটকে পড়ে সোনালির মুখে। মইরাও তুই আমার বউরে *****? বাইঞ্চোদ?



এমন বিভৎস দৃশ্যেও অজ্ঞান হয়ে পড়ে না সোনালি। সে ভীষণ হক চকিত হয়। তার স্বামী তার প্রেমিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। যে প্রেমিকের সাথে সে একটু আগে সঙ্গমে লিপ্ত ছিলো। সোনালীর উলঙ্গ শরীরের দিকে এবার পিস্তল তাক করে শিনল।
সোনালি লাফ দিয়ে উঠে পিস্তলটি ধরতে যাবে এমন সময় ট্রিগার চালালে গুলি লক্ষভ্রষ্ট হয়ে শিনলের গলা ভেদ করে মাথা থেকে বেড়িয়ে যায়। লুটিয়ে পড়ে শিনল। রক্তসুখের পিশাচের মতো নগ্ননৃত্যে মাতে সোনালি, সে হতভম্ব হয়ে যায়। দুটি পৌরষ দেহ তার পায়ের তলায়। সে কি করবে দিশা না পেয়ে নগ্ন অবস্থাতেই ঘর থেকে বেড়িয়ে ছুটে যায় নদীর দিকে। সেই নিশুতি রাতে বাইরে বেড়িয়ে এলাকার নিরাপত্তা প্রহরী নকিব। এত রাতে সে নগ্ন নারীর ছুটে যাওয়া দেখে অলৌকিক কিছুর গন্ধ পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের মনো রক্ষাবন্ধন পাঠ করে। সোনালী ছুটে যায় নদীর দিকে, ঝাপদেয় বর্ষার উত্তপ্ত নদীতে।




চাঁদের আলোয় মাছ ধরছে করিম এবং তার ছেলে। আজ ভালো মাছ উঠছে। ইলিশ মাছ! বড় বড় সাইজের। কাছেপিঠে দু একটা নৌকা আছে,তাও দূরত্ব কম না। হঠাৎ ছেলেটার চোখ যায় নদীর জলের দিকে। ছেলেটি বলে আব্বা টর্চের আলো মারেন তো এইদিকে,দেহেন দেহি ঐডা কি যেন ভাইস্যা যায়৷ করিম টর্চের আলো জ্বালায়।
এ কি! এইডা দেহি মাইনষ্যের লাশ তাও আবার নেঙটা। ছেলেটি আতকে ওঠে, করিম আশেপাশের মানুষজন ডাকে৷ নৌকাগুলো তখন জাল টানায় ব্যস্ত। করিম হাঁক দিয়ে ডাকে। দু একটা নৌকা কাছে আসে।
করিম তাদের উদ্দ্যেশ্যে বলে,দেখো ভাই একটা মাইয়া মাইনষ্যের লাশ ভাইস্যা যাইতাছে।



সবাই চোখ কপালে তোলে।ষাটোর্ধ একজন বৃদ্ধ বলে,হ এ দেহি মাইয়া মাইনষ্যের লাশ তাও আবার নেঙটা। কার লাশ এই লাশ কোথা থেইকা আইছে?
করিম বলে,এখন কি করুম ভাই? নৌকায় তুইলা নিমু?
পাশে নৌকা থেকে একজন বলে,তুমি বোকা নাকি মিয়া? কার না কার লাশ। নৌকায় তুইল্যা কি জেল খাটতে চাও? পুলিশি ঝামেলা আছে।
তার থেইকা তুমি এই লাশরে ভাসাইয়া দাও। এই লাশ যেমন ভাইস্যা আইছে তেমন ভাইস্যা যাউক!
পাশের নৌকা থেকে একজন বলে,দেহি মুখের দিকে আলো মারো তো। লাশটাকে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে নেয় একজন। এই মাইয়া মাইষ্যের চেহারা তো ফাইন।
করিম হতভম্ব হয়ে দাঁডিয়ে থাকে। ষাটোর্ধ বৃদ্ধের এমন কথা শুনে পাশের নৌকার লোকজন হলে,’আরে বুইড়া ব্যাডা। বুড়া হইছো এহনো শইল্যে তেজ কমে নায়। একজন দাঁত মুখ খিচিয়ে বলে, ‘হালারে ঠেইল্যা পানিতে হ্যালা। গাঙের জোয়ারে এই মাইয়া মাইষ্যের লাশের লগে ভাইস্যা যাউক।’



লাশটি আবার ভাঁসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে ভরা জোয়ারে আর আকাশে ভরা পূর্নিমা। পূর্নিমার চাঁদ উঠেছে। সব যেন দিনের আলোর মতো পরিস্কার। চাঁদের আলো নদীর পানিতে মিলেমিশে প্রতিবিম্বের। এই প্রতিবিম্বের স্থান দিয়ে ভেঁসে যাচ্ছে একটি পরিচয় বিহীন লাশ। এই লাশ যখন জীবিত ছিলো, তখন তার পরিচয় ছিলো। তারো চাঁদের আলো গায়ে মাখতে ভালো লাগতো। জোৎস্না দেখতে ভালো লাগতো। মানুষ মরে গেলে কি থাকে? অনূভুতি বুঝতে পারে? হয়ত পারে না। যদি মৃত হয়েও মানুষ অনুভূতি বুঝতে পারতো, তাহলে কেমন হতো? তাহলে হয়ত সে মৃত হতো না। মৃত্যূ মানে অনুভূতিহীন এক দেহ। বেঁচে থাকলে এই দেহ নিয়ে যত কৌতূহল।



সকাল বেলা বেশ্যাপাড়ার লোকজন জড়ো হয়েছে! একটি মেয়ের লাশ ভেসে এসেছে তীরে। বেশ্যাপাড়ার সর্দারনী, লাশটির কাছে এগিয়ে যায়। হাতের রগ টিপে দেখে মেয়েটির জান আছে এখনো।
-ওরে খানকি মাগির দল, এইডা লাশ না রে লাশ না?
সবাই হক চকিত হয়ে এক পা পিছনে আগায়। এইডা জীবত মানুষ। সবাই তোল তোল!
মেয়ে মানুষটিকে সবাই ধরে! কি ফর্সা দেহ মাইয়াডার। শরীরের খাঁজটা এই বেশ্যাপাড়ার সবথেকে সুন্দর নারী রঙ্গিলার থেকেও সুন্দর। যেটাকে পুরুষ মাইনষ্যে বলে ফিগার। মেয়েটির পেটে চাপ দিতেই পানি বেড়োতে থাকে মুখ থেকে। মেয়েটিকে পড়ানো হয় জামাকাপড়, স্থানীয় হাতুড়ি চিকিৎসককে আনা হয়। তিনি আসতে আসতেই অবশ্য মেয়েটির জ্ঞান ফেরে। ভীষণ জ্বরে সে কাতর। সারারাত ভেসেছে খরস্রোতা নদীতে, কোথা থেকে এই মেয়ে এসেছে তা জানে না। সারারাত জীবিত থেকেও এই মে কিভাবে ভেসে থাকলো সেটাই অলৌকিক বিষয়। বেশ্যাদের ধর্মে বিশ্বাস কম, কিন্তু অলৌকিকতা এমন এক জিনিস যেটা নাস্তিককেও আস্তিক বানায়।



বেশ্যাপাড়ার সর্দারনী সবাইকে কঠোর উপদেশ দিলো, এই মেয়ে যে ভেসে এসেছে তা যেন পাড়ার বাইরের একটা কাউয়া-কোকিলও টের না পায়। সর্দারনীর যে কথা সেই কাজ। টের পেলো না কোন কাকপক্ষীও। মেয়েটিকে দেওয়া হলো নতুন নাম, সাথে কঠোরভাবে বলে দেওয়া হলো এখান থেকে তোমাকে কোন পরপুরুষ যদি কিনে নেয় তবে তুমি বের হতে পারবে। স্বেচ্ছায় পালানোর চেষ্টা করো না, দুদিন বাদে ক্ষুধার জ্বালায় মেয়েটি নিজেই তার শরীর বিকিয়ে উপার্জন শুরু করলো। এ ক্ষুধা পেটের নয়, জৈবিক শারীরিক ক্ষুধা।

মাঘের জলসায় হাজির হয়েছিলেন চেয়ারম্যান আজগর। মেয়েটিকে তার ভালো লেগেছিলো। মেয়েটিকে সে উদ্ধ্বার করে। মেয়েটির নাম রাখা হয়েছিলো নদী।

রাত শেষে বিষন্নতা নামে চোখের পাতায়। নদী বানুর দু চোখ জুড়ে ঘুম আসে না৷ পান চিবোতে চিবোতে ভাবে যাপিত জীবনের যত কথা। তার এই জীবনের পরিনতির জন্য দায়ী কি সে নিজেই? তার দু চোখ বেয়ে জলের ফোঁটা গড়ায়। চোখের জল গাল বেয়ে নেমে ভিজিয়ে দেয় বালিশ। তার সর্বাঙ্গ পাপের কথা বলে, মনে হয় শেষ জীবনের কথা। মৃত্যুর পরের জীবন নামে একটা জীবন আছে৷ সেই জীবনের সাথে এই জীবন বেঁধে আছে। এই জীবনটা একটা পরিক্ষার খাতা। এই জীবনে যা লেখা হবে, সেই জীবনে হবে তার হিসেব। হিসেবের ফলাফলে অকৃতকার্য হলে, পুড়তে হবে নরকের আগুনে।



নদী বানু চোখের জল মুছে নেয়। পানের পিক ফেলে। আজ খদ্দের নেই। হঠাৎ করে তার খদ্দেরের কথা কেনো মনে পড়লো? একটু আগেই তো সে ভাবলো নরকের কথা। জীবন থমকে যায় দ্বিধাদ্বন্দের হিসেব নিকেশে। পাপ-পূন্যের ভাবনা চিন্তা থেকে নদী বানুর বেড়িয়ে আসতে শুধু মাত্র একটি অযুহাত অবচেতন মনে সাড়া দেয়, নটিদের পূণ্যের কথা ভাবতে নেই। নটিদের পূণ্য বয়ে আনে শরীর। এই শরীর যুগ যুগ ধরে ভোগ করছে পুরুষ। বৈধতা ছাড়া! কত নারী মরে গেলো অকালে। তাদের কি হয়েছে সাড়ে তিন হাত যায়গা? দহনে দাহন! পৃথিবীর কোথায় কি পুরুষদের বেশ্যালয় আছে? খুব জানতে ইচ্ছে করে নদীর।

গাঁজা খেয়ে নিদারুণ নেশায় সে লুটিয়ে পড়ে! ইচ্ছে করছে আজ কারও সাথে সঙ্গমে জড়াতে। জীবনের যে জড়তা সে কাটিয়ে এসেছে, পুরুষের সঙ্গছাড়া তার ভালোই লাগে না। শুধু মাসিকের সময় ছাড়া। নদীরও ইচ্ছে করে মা হতে! বেশ্যারা কি মা হতে পারেন না?

সাহারা

আকাশে দূর্ণিবার ঝড় উঠেছে, ঝড় শুরু হওয়ার আগেই একটি গাড়ি এসে দাঁড়ালো অ্যাপার্টমেন্টের নিচতলায়। কার্ড প্রেস করে সে ঢুকলো ঘরের ভিতরে, কাউচে হেলান দিয়ে বসতেই কেউ এসে সন্তপর্ণে দাড়ালো তার পিছনে। ঘাড় ঘু্রাতেই সে অবাক হলো খানিকটা, আকাশে জড় হওয়া মেঘেরা তুফান শুরু করেছে, অ্যাপার্টমেন্টের কাঁচ ঘেরা জানলায় ধরা দিলো বৃষ্টির ফোঁটা। গোটা শহরে শুরু হয়েছে তোড়জোর, বাতাস বৃষ্টির চুম্বনে প্রতিটি ফোঁটার শিহরণ অনুভব করতে লাগলো নিপীড়িত। গিটারের তারে বাজলো অদ্ভুত এক গাণ, চুম্বনের শব্দে ঘোর ফিসফিস।চাবুকের কড়াল চাপটে, শিৎকারে ধরা গললো সুপ্ত মেঘ। বাইরে আকাশ মেঘে বজ্রগর্জন। গলা বেয়ে নামে পিপাসার ঠোট, বুঁক অব্দি পৌছানোর সাথে সাথেই শুরু হয়েছে বৃষ্টির মাদল দোল। সবুজের শস্যক্ষেত দোলে বৃষ্টির স্পর্শের কম্পনে, আকাশে মেঘ কাঁটার আগেই ঝুম বর্ষায় ভিজে যায় পথঘাট। অ্যাপার্টমেন্টের জানলায় বেয়ে পড়ে সবটুকু ভালোবাসা। কল্পনার ক্যানভাসে, দু-কাপ কফি আর সম্মোহনীয় শরীর জুড়ে ছিটে পড়ে ভালোবাসার অদ্ভুত এক তেজ! পৌরষ্যের তেজ সবটুকু গ্রাস করে ফুলের নগ্নতা! সাহারার বুকে উত্তপ্ত বালির মতো।

 

মরণ-কামী

অফিস থেকে ফিরেই দেখলাম আমার গার্লফ্রেন্ড উর্বী আরেকটি পুরুষের নিচে শুয়ে আছে। আমি দরজা ভিজিয়ে তাদের চরম উত্তেজনার মুহুর্তে দাঁড়াতেই আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে বললো, বেব আর ইউ কামিং? আমি কোমড় থেকে রিভালবারটা বের করে সোজা গুলি চালালাম আমার গার্লফ্রেন্ডের বেড পার্টনারের সাথে। সেই রক্তে রক্তাক্ত হলো সাদা বিছানা এবং মেয়েটির সারা শরীর। আমি তার দিকে, রিভালবার উঁচিয়ে বললাম ইয়েস ইট’স টাইম ট্যু ইওর ফাইনাল গুডবায়। ঠিক এরই মধ্যে সেই রক্তমাখা পিশাচিনী আমার দিকে এগিয়ে এলো, আমার ঠোটে চুমু দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতেই তার নরম তুলতুলে পেটে ঠেকিয়ে দিলাম আমার হাতে থাকা রিভালবার।



এত সুন্দর কামুক নারীকে অবজ্ঞা করার জন্য প্রবল পৌরষহীনতা নিয়ে জন্মাতে হয়! আমি পারলাম না। সে এগিয়ে এলো, ঠোট টেনে নিলো তার ঠোটে। তার শরীরের অদ্ভুত ঘ্রাণে আমি বিমোহিত হলাম। ঠিক চরম উত্তেজনায় যখন ফেঁটে যাচ্ছি ঠিক তখনই রিভালবারের কথা মনে পড়লো আমার। সঙ্গে সঙ্গে নিজের শরীরের ভেতরে গরম কিছু একটা অনুভব করলাম।
ফিসফিসে মিষ্টিকন্ঠোস্বরে শুনতে পেলাম, ইটস ইওর ফাইনাল গুডবায় বেবি। তোমরা দুজন শান্তি থাকো। আমি তোমাদের মতো আরেকজন পুরুষকে ধ্বংস করতে যাই, তোমাদের গরম উত্তেজনার ঠেক সামলাতে। ভালো থেকো সুইট হার্ট।

 রসু এবার বলে ওঠে, ‘আফনাগো দ্যাশের মাইয়া মানুষের গতর খানা যে কী সুন্দর ভাবী।’ সোনালি এবারও লজ্জা পায়, শরীর টা নাঁচিয়ে বুকের ওপরের কাপড় নাড়াচাড়া করে হাত দিয়ে, রসুর চোখ যায় সেদিকে। লম্বা মুখের সাথে, ঠোটটাও ভীষণ উত্তপ্ত, নাকটা লম্বা, কানের পাশে চুল পড়ে আছে। আচমকা দপ করে বাতাস এসে কুপি নিভিয়ে দেয়, ‘রসু এক লাফে জড়িয়ে ধরে সোনালিকে, যেমন বাঘ তার শিকার কে ধরে, ঠোটের সাথে নিজের ঠোট লাগিয়ে দেয়, সোনালি যেন দীর্ঘদিন ধরে কোন পুরুষের স্পর্শ না-পেয়ে লজ্জাবতী পাতার মত নেতিয়ে পড়ে মাটির মেঝেতে! সেই নিস্তব্ধ রাতে চলে ধস্তাধস্তি, অন্ধকারের মধ্যে দুটি নর-নারীর সাপের মতো ফোস ফোস শব্দে নিস্তব্ধ নিগুড় রাতও ভারী হয়ে ওঠে, তৃপ্তির সুখে।

রক্তরস (পঞ্চম পর্ব)👇

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প



কলমে কলম দাঁগাদাগি

ড্রেনের পাশে পড়ে আছে এক পুরুষের ক্ষত-বিক্ষতে মরদেহ। লোকটির পরিচয় জানে না কেউ। প্রকট উটকো গন্ধ্যে মানুষের নারীভুড়ি পঁচে বমি আসার উপক্রম। মানুষ তাও নাক চেপে সেই লাশটিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। উৎসুক জনতার সঙ্গে হাজির হয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক। লোকটির সারা শরীর উলঙ্গ, শরীরে কোথায় দাঁগ নেই! আঘাতের চিহ্ন নেই



দুইদিন আগের কথা, যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি বিচে সমকামীতাকে বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য এক হয়েছে একদল মানুষ। তাদেরদাবী প্রত্যেকটি রাষ্ট্রে সমকামীতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হোক। মানুষের রাস্তায় রাস্তায় চুমু দেওয়া হোক। এসব খবর দেখতে দেখতে পাওরুটি দুধচায়ের ভিজিয়ে খাচ্ছিলো মতিন মিয়া। মতিন মিয়া ক্যানভাসার, রাস্তাঘাটে জোঁকের তেল বিক্রি করে। তার পাঞ্চ লাইন ‘মালিশেই খাড়া, না ঢুকানো পর্যন্ত নামবে না’ সেই পাঞ্চলাইন দিয়ে সেই প্রায় পাঁচ বছর ধরে জোঁকের তেল বিক্রি করে আসছে। ভীড় ভাট্টার মধ্যে, সদ্য পৌরষ্যত্ব লাভ করা এক হোটেলের মেসিয়ার হাজির। সে ইদানীং খেয়াল করছে তার, পৌরষত্বে ভাঁটা পড়েছে। এই বয়সে পৌরষত্ব ভাঁটা পড়লে কিভাবে কি হবে সেটি নিয়েই মনের গহীনে প্রায় সারাক্ষণ চিন্তা মগ্ন থাকে। বেশ্যাপাড়ায় তার যাতায়াত হয়েছে, কলমে দাঁগ পড়ে না দেখে বেশ্যারাও তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সে এখন এক উদ্ভ্রান্ত পুরুষ।



ক্যানভ্যাসারের ভিড় ভাঙার পরে সে ক্যানভ্যাসারকে বললো তার দূর্বলতার কথা। ক্যানভ্যাসার বললো, এক ফাইলেই যথেষ্ট। দাম মাত্র একশো টাকা, আপনে আঁশি টাকা দেন। সঙ্গে সঙ্গে পকেট থেকে আশি টাকা বের করে সেই ক্যানভ্যাসারের হাতে দেয় ছেলেটি, এই লন! কাম হইবো তো? মতিন বলে কাম হইবো মানে? ছেলেটিকে ইশারায় তার দিকে এগোতে বলে, কানে কানে ফিস ফিস করে বলে…”আপনে হাতি পোন্দাইয়া সমান বানাইয়া ফ্যালাইতে পারবেন”

সেই হোটেলের ম্যাসিয়ার কোনভাবেই, তার পৌরষত্ত্বাকে ফিরিয়ে আনতে পারছে না। দিন দিন মনে হচ্ছে সে যেন নারী হয়ে যাচ্ছে, শারীরিক গড়নে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নিতম্বের দিকে আড় দৃষ্টিতে তাকায়। যে পৌরষের স্বত্ত্বাটাই হারিয়ে যায়, সে পৌরষের পৌরষ থেকে লাভ কি?” ভেসে আসে সেই ক্যানভ্যাসারের কন্ঠ। আসুন ভাই, আসুন আমাদের গাড়ির নিকট, মাত্র এক ফাইলেই যথেষ্ট। লাগাইলেই খাড়া। হোটেলের সেই ম্যাসিয়ারের নামটাই তো জানানো হয়নি, তার নাম সোহেল। সোহেলের সাথে ক্যানভাসারের পরিচয় হতে থাকে, জোঁকের তেল বিনিময়ের সুত্র ধরে। সেই ক্যানভ্যাসার সোহেলকে নিয়ে যায় তার বাড়ি, সেও আরেক ব্যার্থ পুরুষ। সে সোহেলকে এনে, একরাত তার বাড়িতে বেড়াতে বলে। ক্যানভ্যাসারের স্ত্রী ভীষণ সুন্দরী, বয়স ২৭ এর কাছাকাছি। তার শরীরের গড়নে সে যেকোন পুরুষকে বাগে আনতে পারে। সে রাতে অদ্ভুত এক কান্ডঘটে যায় সোহেলের সাথে। ক্যানভ্যাসার তার স্ত্রীর রুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে যায়। সোহেলকে বলে, সিদ্দিক ভাই? ও ্সিদ্দিক ভাই? এইডা কি করেন এইডা কি করেন?



পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ্সিদ্দিক ক্যানভ্যাসারের বউ, সায়রা বানু। সে সোহেলের সারা শরীরে নিজের হাত বোলায়। সোহেলকে টেনে নিয়ে ফেলে দেয় খাটে, সে রাতে অবশ্য সোহেলের ভীষণ কামনা হলেও, সে তার পৌরষসত্ত্বাকে জাগ্রত করতে পারেনি একটুও। ভীষণ হতাশ হয় সায়রা, সে সঙ্গে সঙ্গে ডেকে নিয়ে আসে সিদ্দিককে। সিদ্দিকও ভীষণ হতাশ, সে সোহেলকে টেনে নিয়ে সোহেলের লুঙ্গি উন্মুক্ত করে সঙ্গমে লিপ্ত হয়, উলঙ্গ অবস্থায় সোহেলকে নিজের শরীরের নিচে চেপে ধরে সায়রা। সে রাতে সোহেলকে চরম তপ্ততায় ভোঁগ করে ক্যানভাসার সিদ্দিক। সিদ্দিকের তপ্ততা শেষ হলে, পশ্চাত পটে মোটা জোঁক ঢুকিয়ে আনন্দে মাতা সায়রা। শেষরাতের দিকে নিজের পশ্চাতপটে চরম ব্যাথার কারণে মারা যায়, সোহেল। কিলবিল করে তার পশ্চাৎপটের রক্তচুষতে চুষতে মোটা হয়ে ওঠে, বুনো পাহাড়ি জোঁক।

 

ছিঃ কুত কুত

 

-তুমি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাও তাহলে তোমার ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়ে যাবে।
রাকিনের এই কথায় মুষড়ে গিয়েছে শ্রেষ্ঠা। হঠাৎ করেই মনে হয়েছে রাকিনের এমন আচারণ সে যদি আগে জানতো, তাহলে কখনোই রাকিনের সাথে সম্পর্কে জড়াতো না। পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, ভোঁগবিলাশের তাড়নায় মত্ত সবাই। শ্রেষ্ঠারও যে কোন দোষ নেই, এমন না।




রমনা পার্কে ওরা প্রথমবার দেখা করেছিলো। রাকিনের সাথে তারপর ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। তারা দু’জন ঘুরেছে শহরের কানায় কানায়। একবার দু’জন গিয়েছিলো কক্সবাজার, সেখান থেকেই কাহিনীর সূত্রপাত। একইরুমে একসাথে দুটি ছেলে মেয়ে রাত্রিযাপন করবে সেখানে কোন উনিশবিশ হবে না সেটা তো বলাই বাহুল্য। কক্সবাজার থেকে এসে রাকিন ব্লাকমেইল করছে শ্রেষ্ঠাকে। রাকিন চাচ্ছে শ্রেষ্ঠার সাথে আবারও এক বিছানায় শু’তে। কিন্তু শ্রেষ্ঠ কক্সবাজার থেকে এসে, বিমর্শ হয়ে পড়েছে। রাকিনের সাথে শ্রেষ্ঠার সম্পর্কের ইতি টানতেই রাকিন উদ্ভ্রান্ত হয়ে পড়ে শ্রেষ্ঠার উলঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিতে। ঠিক তখনই বাঁধে বিপত্তি।



পরের সাত দিনে রাকিনের আর খোঁঁজ পাওয়া যায় না। রাকিনের খোঁজে শ্রেষ্ঠার বাসায় আসে পুলিশ। কিন্তু রাকিন গেলো টা কোথায়? শ্রেষ্ঠা প্রেশারে পড়ে যায়।

গল্পের মোচড়েও থাকে গল্প। শ্রেষ্ঠাকে ভালোবাসতো অনিক নামের একটি ছেলে। শ্রেষ্ঠার সাথে একই সংঘে নাচ শেখে তারা। অনিক যে শ্রেষ্ঠাকে পছন্দ করে, সেটা শ্রেষ্ঠাও জানে। কিন্তু শ্রেষ্ঠার অনিককে ভালো লাগে না। বন্ধু হিসেবে অনিক পারফেক্ট। কিন্তু বয়ফ্রেন্ড হিসেবে অনিক মোটেও মানানসই না। রাকিনের নিখোঁজ করে অনিকই। অমানবিক নির্যাতন চালায় রাকিনের ওপর। রাকিনের ফোঁনটা ভেঙে গুড়ো গুড়ো করে ফেলে। পাগলের মতো উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় বলে,



আমার শ্রেষ্ঠা! আমার শ্রেষ্ঠা। এই বলতে বলতে রাকিনের মাথায় আঘাত করে হাতুড়ি দিয়ে। রাকিন রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। এরপরের দিন শ্রেষ্ঠাকেও অপহরণ করে অনিক। শ্রেষ্ঠা আর রাকিনকে পাশাপাশি বসিয়ে তাদের সামনেই আত্মহত্যা করে! তারা সেই বিভৎস দৃশ্য দেখে বমি করে ফেলে। সলিল সমাধি হয় অনিকের। এরপর যখন তারা পালাতে যাবে, ঠিক তখনই পুলিশ এসে হাজির। গ্রেপ্তার করা হয় দু’জনকে। এরপর অবশ্য বিভিন্ন কায়দা করে শ্রেষ্ঠা মুক্তি পেলেও অনিককে আত্মহত্যার প্ররোচণায় ১০ বছরের কারাদণ্ড পায় রাকিন। রাকিনের মাথায় আঘাত এবং জেলের কারণে, রাকিনও উন্মাদ হয়ে পড়ে।

এই গল্প পড়ার পরে রসনাবিলাসী রিসোর্টের কেয়ারটেকার চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে,”জীবন নাকি ছিঃ কুত কুত?”

👉পড়ুন দারুণ রোমান্তিকতায় কাতর গল্প। চরম রোমান্টিক উত্তেজনায় 👇

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

চামড়-কামড়

রিসোর্টে চাকরী করাটা অনেক ঝামেলার। রাত্তির হলেই মশা মারতে হয়, অপরদিকে গভীর রাতে হাতে তালির শব্দে পৌরষসত্ত্বা জেগে ওঠে কারও কারও। সন্ধ্যার দিকে বড়লোকের এক ধনীর দুলাল একটি মেয়েকে নিয়ে ঢুকেছে ওপরের তিনশো বাইশ নম্বর রুমে। মেয়েটির দেহের গড়ন দেখে জিহ্বব থেকে জল গড়িয়ে পড়ার মতো অবস্থা। রসনাবিলাসী রিসোর্টের কেয়ারটেকার জুনায়েদ। বয়স বড়জোড় ত্রিশের কাছাকাছি! বিয়ে করতে চাইলেও আর্থিক অভাবের কারণে বিয়ে করা হয়নি। বয়স সবে মাত্র মাথার উপর, রাত-দিন ডিউটি করার পরে রাতে ঘুমানোর সময় তার মাথায় ভাসে এলোপাতাড়ি ভাবনা। বন্ধুবান্ধবদের ফোন দিয়ে বেশ্যাপাড়ায় যাওয়ার কথা শোনা যায়। রিসোর্টে আসে ধনীর দুলালের ছেলে-মেয়েরা। সকালে গিয়ে রুম থেকে তাদের আঁষটে পরিস্কার করতে হয়। কনডম, লুব্রিকেন্ট সহ আরও কত কি। একদিন তো এক মেয়ের ব্রাও পেয়েছিলো পৌরষরসে ভেজা। সেসব পরিস্কার করতে হয়! মাঝেমধ্যে ইচ্ছা করে আগে রুমের ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে। কিন্তু সিসি টিভির কারণে তা আর হয় না। ম্যানেজার সারাক্ষণ মনিটরিং করেন। রসনাবিলাস যেন পাপের স্বর্গে পরিণত হয়েছে।



এক রাতের কথা! একদল তরুণ-তরুণী এসেছে আনন্দ ফুর্তি করতে। এই ফাঁকে জুনায়েদ গিয়ে একটি রুমের ভেতরে লুকিয়ে পড়ে। সে কায়দা করে পর্দার এক কোণে লুকিয়ে পড়ে। সে রাতে সেই রুমে ঘুমাতে আসে দুইটি মেয়ে। বন্ধুদের বিদায় দিয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে! একটি মেয়ে আরেকটি মেয়েকে বলে,”এখনই শুরু করবি?’ আরেকটি মেয়ে বলে রাত আরেকটু গভীর হোক তার আগে চল দুই ঢোক ওয়াইন খাওয়া যাক। এসব দেখে যেন প্রত্যেকরাতের মতো নীল ছবির বাস্তব দুনিয়ায় হারিয়ে যায় জুনায়েদ।




গভীর রাত হওয়ার পরে ছোট ছোট জামাকাপড় জেগুলোকে লিংগের বলে, সে দুটি সমকামী নারী মত্ত হলো একে অপরের সৃজন সুখে। এসব দেখে যেন তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে। প্রচন্ড মূত্র চাপে বিশ্রি অবস্থা। সে বের হয়ে গুটি গুটি পায়ে বাথরুমে ঢুকলো, মূত্রবিসর্জনের পরেই, দেখলো সেই মেয়ে দুটি একে অপরের সুখ প্রদানে মত্ত।



ঠিক সে সময়েই দমফেঁটে কাশি আসে জুনায়েদ এর। মেয়ে দুটি একে অপরের দিকে তাকিয়ে আবার নিজেদের সুখ প্রদানে মত্ত হয়। ঠিক সেসময়ে একটু অপেক্ষা করে নিজেকে উলঙ্গ করে মেয়ে দুটির মাঝখানে এসে ধীরে ধীরে শুয়ে পড়ে জুনায়েদ। মেয়ে দুটি নিজেদের কাজে এতটাই ব্যস্ত ছিলো যে মাঝখান থেকে একটা পুরুষ এসে তাদের মধ্যে শুয়েছে তা ভ্রুণাক্ষরে টের পায় না।

রিসোর্টের কামরায় সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আনমনে কি যেন ভাবছে আসিফ। তিথি তখন বাথরুমে গোসল করছে। বাথরুমের বাইরে থেকে ভেসে আসছে গোসলের পানি পড়ার শব্দ, নিজের প্রতি অদ্ভুত এক ক্ষোভ কাজ করছে। আজ যেন নিজেকে সত্যিকারের পুরুষ মনে হচ্ছে। যে পুরুষত্বহীনতার কামণায় আসিফ পুড়েছে এ কয়েক বছর। তিথি আসিফকে ব্যবহার করেছে নিজের স্বার্থে, আসিফের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভালোবাসা ছুড়ে ফেলে দিনের পর দিন শুয়েছে অন্য পুরুষদের সাথে। অন্য পুরুষদের গরম নিশ্বাসের সাথে নিজের শরীর দুলিয়ে, সম্মোহিত শব্দের শীৎকারে নিজের জড়ায়ুতে বার বার নষ্ট করেছে মানবভ্রুণ। তিথি কি চেয়েছে? শুধু কামুকতা? কামুকতার নগ্ন নৃত্যে তিথি যেন নরকের সর্বনিম্ন স্তরের স্বাদ পেয়েছে। যেখানে দুটো নর-নারী আগুনে পুড়ে মরে মিলিত থাকা অবস্থায়। বিধাতা যাদের নিঃশ্বেস করে দেয়, জন্ম থেকে জন্মান্তরে যারা কামুকতার জন্যই মরে যায়।

তাল তমালের বনে👇

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

জুনায়েদের পৌরষসত্ত্বা প্রবলভাবে জেগে ওঠে! সে ধীরে ধীরে হাত বোলায় একটি মেয়ের সাড়া সরিরে। মেয়েদের শরীর থেকে এত সুঘ্রাণ সে আগে কখনো পায়নি। যখন সে চোখ বুজে নিজের অবলীলায় মেয়ে দুটির নাড়ি-নক্ষত্রে হাত বোলাচ্ছে ঠিক তখনই বাধে বিপত্তি। একটি মেয়ে তাকে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠে সেস্নলেস হয়ে যায়, আরেকটি মেয়ে কিছু বোঝার আগে, জুনায়েদ মুখ চেপে ধরে তার।




এরপর মেয়েটির সাথে তার অমানবিক পৌরষত্ব চালায়। নিজের পৌরসরস যখন মেয়েটির শরীরে ঢালে ঠিক তখনই বাঁধে বিপত্তি। পিছন থেকে অজ্ঞান হওয়া মেয়েটি মদের বোতল দিয়ে সপাটে বাড়ি দেয় ছেলেটির মাথায়। জুনায়েদ অজ্ঞান হয়ে পড়ে, মেঝে জুড়ে তার রক্তের স্রোত গড়ায়। মেয়ে দুটি এতটাই কামনায় লিপ্ত ছিলো যে, জুনায়েদ এর সলীল সমাধী হওয়ার পরেও তারা ভ্রুণাক্ষরে টের পায় না। কামড়-চামড়ে শেষ নিশ্বাস ছাড়ে জুনায়েদ!

শুনুন রোমান্টিক (১৮+) কিশোর প্রেমের গল্প।

আঙুলে আঙুল

ব্যস্ত শহরে আকাশের দিকে তাকালে তারা দেখতে পাওয়া যায় এমন ব্যপার বড়ই দূর্লভ কিনা আন্দাজ করা যায় না। গোটা শহরে একযোগে লোডশেডিং হয়েছে। গোটা শহর অন্ধকার, কোথাও কোথাও আলো দেখা যায়।আলিশান ফ্লাট থেকে আলো এসে পড়ে রাস্তায়। গ্রিডে কারিগরি সমস্যার কারনে এই দুর্ভোগ৷ গায়ের শার্ট খুলে, স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি পড়ে ছাদের এপাশ থেকে ওপাশে একবার চক্কর দেয় তূর্জ। ঝলসে যাওয়া গরমের ভেতরেও সিগারেটে টান দেয়। দুটো টান দিতেই মাথার মধ্যে ঝিম ঝিম ভাব চলে আসে। শরীরটা ছেড়ে দেয়। এই অসহ্য জিনিস পান করার কি যে আনন্দ সেটা বুঝেও বুঝতে পারে না তূর্জ। নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে।



দক্ষিণ দিক থেকে ঠান্ডা বাতাস এসে, শরীর ছুঁয়ে যায় তূর্জর। আকাশের দিকে তাকায় সে। কালো মেঘের আবির্ভাব, বৃষ্টির আয়োজন চলছে৷ ঝুপ করে একপশলা বৃষ্টি নামবে, গরমের নগরীতে এই তো সবার প্রত্যাশা। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস ক্রমে বাড়ছে।

গোটা শহরের প্রতীক্ষিত মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো না। “হাড় পাকারা আকাশের মেঘ আর বাতাসের বেগ দেখে আন্দাজ করতে পারে বৃষ্টি হবে কিনা। যত গর্জে তত বর্ষে না। ” বুড়ো-বুড়িদের কথা সত্যি হলো। অভিশাপের শহরে এক পশলা বৃষ্টি নামলো না। ঝড় হলো, বাদল হলো। ঝড়ে উড়ে গেলো রাস্তার পাশের টংয়ের দোকান। তবুও বৃষ্টি হলো না।




আলিশান বাড়ি থেকে যে অভিশাপের আলো এসে রাস্তায় পড়েছে সে আলোয় শুয়ে আছে কয়েকটা কুকুর। এই আলোকে অভিশাপের আলো কেন বলা হলো? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে কিছুক্ষণ আনমনা হয়ে পড়ে সে। মাঝেমধ্যে বিল্ডিংগুলোর বাইরে এসির ইনভার্টার দেখলে মন খারাপ হয় তূর্জর। আর-২২ গ্যাস দিন দিন গিলে ফেলছে সুবিধাবঞ্চিতদেরকে। তাপমাত্রা কি আর সাধে সাধে বাড়ছে? রাতের সাথে সাথে বয়স বেড়ে যায়, দিনের পরে দিন পার হয়ে যায়। রাতের গভীরতা যত বাড়ে তূর্জ্যের মাথায় অজানা অচেনা প্রশ্নেরা সব উকিঝুকি দেয়। এই বয়সটাই বোধয় রাত জাগার।



২.
সকাল বেলা সিড়ি থেকে নামতে গিয়ে হুড় মুড়িয়ে পরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো প্রায়। রাতে ঘুম হয়নি, হবে কিভাবে? নিশাচর মানুষ হয়ে গিয়েছে সে। সারারাত জেগে বিড়ি ফোকা ছাড়া আর কোন কাজ নেই।

রাস্তার পাশে টংয়ের দোকানে চা’তে চুমক আর সিগারেটে লম্বা টান দিতেই চায়ের দোকানদার বলে,’কি মামা? রাতে ঘুম টুম হয় না? ‘
তূর্জ স্মিত হেসে জবাব দেয়, ‘হয় তবে গাঢ় হয় না।’ “কি যে বলেন না মামা! চাকরী করেন।পকেটে মাসে টাকা ঢোকে। এই বয়সে শুধু ঘুমাবেন। মামায় কি বিবাহ করছেন?”, প্রশ্ন ছুড়ে দেয় চায়ের দোকানদার।
তূর্জ সিগারেটে লম্বা টান দেয়। সকালের কুসুম উষ্ণ রোদ এসে পড়ে তূর্জের গায়ে। মাথা ধরেছে। তূর্জ চায়ের কাপ মুখ থেকে সরিয়ে জবাব দেয়, ” বিয়ে? না মামা। বিয়ে তো করা হয়নি। ”
চায়ের দোকানদার পান খাওয়া লাল ঠোটে ফিক করে হেসে দেয়। গাবের আটির মতো লালচে দাতগুলো বেড়িয়ে আসে। “এই খানেই তো সমস্যা। রাতে ঘুম হইবো ক্যামনে? আপনার যে বয়স এই বয়সে একখানা সুন্দত বিবি দরকার। বিয়া কইরা ফ্যলান। শীঘ্রই বিয়া কইরা ফ্যালান। ‘

তূর্জ বিষম খায়। সিগারেটের ধোয়া আর চা একসাথে গলায় মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে৷ কাশতে থাকে কিছুক্ষণ। চায়ের দোকানদার আফসোসের সুরে বলে অনেক কথা৷ সে অনুশোচনায় ভোগে। খদ্দেরের সাথে এত গাজুইরা কথা তার বলা উচিত হয়নি। তূর্জ চায়ের বিল চুকিয়ে হাটতে থাকে তার গন্তব্যস্থলে।



প্রেসে ঢুকতেই মেশিনের খচর খচর শব্দে তূর্জ খানিকটা স্বস্তি ফিরে পায়। ‘শশী প্রেস এন্ড পাবলিকেশন ‘ প্রেসের ক্যাশিয়ার সে। সারাদিন হিসেব নিকেশ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই প্রেসে থাকার সব থেকে বড় সুবিধা হলো নতুন নতুন বই ছাপা হলে সেখান থেকে একখানা বই নিয়ে টেবিলে রেখে পড়া যায়। এর আগে এই প্রেসে সে প্রুফ রাইডিং এর কাজ করতো। তবে ক্যাশিয়ারের মৃত্যুর পরে পদ শূন্য থাকায় প্রেসের মালিক আজহার উদ্দিন খন্দকার ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব তূর্জর ওপর অর্পণ করেন। তূর্জ ছেলেটা কাজের। বলা যায় সব কাজের কাজী। মাঝেমধ্যে আজাহার সাহেব তূর্জর উপর ভরসা করে বলেন, কি খবর তূর্জ? কাজটাজ তো ভালোই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছো। তোমার কাজের মুন্সিয়ানা দেখে তো দিন দিন অবাক হচ্ছি। চালিয়ে যাও। প্রেস থেকে চাকরী থেকে প্রতিমাসে তূর্জর পকেটে ঢোকে, সতেরো হাজার পাঁচশত টাকা। সতেরো হাজার মূল বেতন আর বাকি পাঁচশত টাকা যাতায়াত খরচ। সব মিলিয়ে একা তূর্জর দিব্বি চলে যায়।

৩.
তূর্জর আজকাল থিয়েটারে যাওয়ার ভীষণ শখ হয়েছে। আজকাল না, থিয়েটারে গিয়ে অভিনয় করার শখ তার অনেক দিনের। তবে থিয়েটারে সে অভিনয় করতে যায় না। অভিনয় দেখতে যায়।

শুক্রবারে ফ্রি থাকলে টুপ করে একটা ভালো ইস্ত্রি করা শার্ট গায়ে চাপিয়ে কড়া পারফিউম গায়ে মেখে চুল গুলো হাল্কা ভেজা ভেজা রেখে থিয়েটারের দিকে পা বাড়ায়৷ থিয়েটারের মাঝামাঝি দিকের সিটে বসে। এই যুগে এসে থিয়েটার দেখার মানুষ খুব কম। বেশিরভাগ সিটই ফাকা থাকে।




ইদানীং এই থিয়েটারে আসার আরেকটা বড় কিংবা ভালো কারন হচ্ছে, এই থিয়েটারে একজনার অভিনয় খুব ভালো লাগে। ভালো লাগারই কথা!
তবে এই অভিনয়ের আগে ভালো লাগে, অভিনয় করা মানুষটিকে। তূর্জ সেই মানুষটির নাম জেনেছে। তার নাম সুনন্দা। নাটক শেষে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট মুখে দিয়ে ফুড় ফুড় করে টান দিতেই তার চোখে চোখ পরে তূর্জর। বুকের মধ্যে অচেনা অজানা এই অনুভূতির আবেশ এর আগেও বেশ কিছু বার পেয়েছে সে।




এই আবেগের দুর্নিবার সহজাত প্রবৃদ্ধি হতে লাগল দিন দিন। ভালো লাগা বাড়তে লাগলো। ছুটির দিনের এক সন্ধ্যায় গিয়ে..থিয়েটারের ভেতরে ঢুকে তাকিয়ে রইলো। নাটক চলছে। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সংলাপ আওড়াচ্ছেন। অভিনয় করে যাচ্ছেন। তবুও ভালো লাগছে না তূর্জর। সেই ভালো লাগার মানুষটিকে দেখতে পাচ্ছে না সে। এই ভালো না লাগার কি কোন দোষ আছে? মন এদিক সেদিক হয়ে গিয়েছে। কেন যেন কু গান গাইছে৷ হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বাড়ছে। মৃদু ঘামছ হচ্ছে৷ নাটক শেষে কৌতুহল মন জানতে চাইছে। মানুষটাকে অনেকদিন দেখে না তূর্জ। ভালো লাগছে না। মনটাও কেমন হয়ে পড়েছে। চট করে মাথায় ঘোরে, এখানে সংশ্লিষ্ট কাউকে জিজ্ঞেস করলে কেমন হয়? ভেতরর ভেতরে মুষড়ে যাওয়ার থেকে জিজ্ঞেস করাই বরং ভালো।



মাথায় ঝাকড়া চুল, কাধে চটের ব্যাগ ঝুলানো এক ভদ্রলোককে দেখা যাচ্ছে। তাকে জিজ্ঞেস করা যায়। তূর্জ কয়েক পা হেটে ঝাকড়া চুলওয়ালাকে ভদ্রতার খাতির শেষে জিজ্ঞেস করলো, ‘ত্রি-দংশন’ নাটকে মৃণময়ী চরিত্রর যে অভিনেত্রী। ওনাকে দেখা যাচ্ছে না৷ উনি কোথায়?
ঝাকড়া চুলওয়ালা জবাব দিলো,’কার কথা বলছেন বুঝতে পারছি না। ‘
তূর্জ ঘুরিয়ে পেচিয়ে বর্ণনা করা বললো। অধিকাংশ নাটকে তাকে, কোন না কোন মূল চরিত্রে দেখা যায়।
লোকটি বুঝতে পারলো তূর্জর কথা৷ সিগারেটে টান দিয়ে ধোয়া ছেড়ে বললো, সুমনদার কথা বলছেন?
তূর্জ বললো, সুমন না সুনন্দা।
সুনন্দা নামে তো এখানে কেউ নেই। আমি চিনি না। আপনি যার কথা বলছেন সে তো সুমন। আমাদের এখানে অভিনেত্রীর সংকট৷ তাই উনিই বেশির ভাগ নাটকে অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। কেন ওনাকে কেন প্রয়োজন?’

তূর্জ কিছুটা মুষড়ে গেলো,তার কাছে খোঁজার কোন উপযুক্ত কারন নেই। তবুও কথার খেল খাটিয়ে জবাহ দিলো,’না মানে অনেক দিন দেখি না তো।’




লোকটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, সুমনদা এ শহরে এসেছেন অনেক আগেই৷ চেহারা ভালো। অভিনয়ে পটু৷ তবে পেটের তাগিদে শুধু নারী চরিত্রেই বেশি অভিনয় করতে হতো৷ কয়েকদিন আগে ওনার ভয়াবহ রোগ ধরা পড়েছে। জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
লোকটির টাকা পয়সা নেই। আমরা নাট্যকর্মী টাকা পয়সা ম্যানেজ করছি টুকটাক। তাই দিয়ে মোটামুটি চিকিৎসা চলছে।
তূর্জ মুষড়ে পড়েছে। একটু আগে যাকে তার নারী মনে হয়েছে সে একজন পুরুষ। এতদিন মনের ভ্রান্তিতে কত কি কল্পনা করেছে৷ তূর্জ গা শিউরে উঠলো। ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
লোকটি বললো, আমি জেলা হাসপাতালে যাচ্ছি৷ আপনি যাবেন নাকি আমার সাথে? তূর্জ মাথা নাড়িয়ে এগিয়ে গেলো লোকটির সাথে।



৪.
জানলার বাইরে থেকে উকি মেরে লোকটিকে দেখে তূর্জ। লোকটা রোগা হয়ে গিয়ছে এ কদিনে। লোকটির চেহার মধ্যে অদ্ভুত এক সৌন্দর্য। মাথায় চুল নেই। তাতে একটুও খারাপ লাগছে না৷ কল্পনার উঁকিঝুঁকিতে সেই মঞ্চের অভিনয় করা মানুষটির কথা মনে পড়ে যায়। তূর্জ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। বাইরে থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস তূর্জের গায়ে লাগে। বাতাস বাড়ছে৷ বাতাসের সাথে ভেসে আসছে শহরের ড্রেনের বিশ্রি গন্ধ। আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সবকিছু দিনের মত ফর্সা হয়ে যাচ্ছে। আজ কি শহরে বৃষ্টি নামবে?

 

রুমের সাথে এটাচ বাথরুম। প্রীতি জামা-কাপড় নিয়ে ঢুকলো বাথরুমে। তমাল এক ধ্যানে তাকিয়ে রইলো বাথরুমের দরজার দিকে। বাথরুমের শাওয়ারের জল পড়ার শব্দ হচ্ছে। তমাল নিজের অভন্ত্যরে এক অদ্ভুত ক্ষুধার উন্মোচন উপলব্ধী করতে পারছে। বুকে যেন কেউ একজন জোরে জোরে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করছে। জানলা দিয়ে আসা বাতাসের ঝটকায় তমালের চুল গুলো নড়ে উঠলো। এ বাতাস যেন~ফিসফিস করে বলে গেলো, পৃথিবী এখানে শান্ত এবং শান্তিপূর্ণ।

ধীরে ধীরে কমে এলো বাথরুমের পানি পড়ার শব্দ। খট করে বাথরুমের দরজা খুলে প্রীতি শুধু গলাটা বের করে, তমালকে বললো- আমার ল্যাগেজের মধ্যে আমার তোয়ালেটা আছে। ওটা একটু দিবি? তমাল শরীরে যেন অন্যরকম এক শক্তি অনূভব করলো। প্রীতির তোয়ালেটা প্রীতির দিকে এগোতে এগোতে মনে মনে চাইলো প্রীতি যেন তাকে সেদিনের মতো হ্যাঁচকা টান দিয়ে বাথরুমের ভেতরে নিয়ে নেয়। আর প্রীতির সর্বাঙ্গে যে মাদকতা আছে সেটি গ্রাস করে ফেলে তমাল। এক-পা দু-পা করে তমাল এগিয়ে যায় বাথরুমের দরজার দিকে। প্রীতির হাত ভেজা। সে হাত বাড়ি টয়েল নিয়েই খট করে আবারও দরজা বন্ধ করে দেয়…

-প্রীতির গায়ের গন্ধ সিজন-১

আঠারো (প্লাস) রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

জলসা ঘরে কুয়াশা

সকাল বেলা ছোটছোট ছেলেমেয়েদের ঘুম ভাঙে কান্নার শব্দ শুনে৷ কেউ কেউ টিনের বেড়ায় আঘাত করছে। কেউ কেউ কষ্টে.. গড়াগড়ি খাচ্ছে। ছ’বছরের ছোট একটা বাচ্চা বের হয় চোখ ডলতে ডলতে। সে কৌতুহলী হয়ে পড়ে। তার মাকে খুঁজে। সামনে বিলকিস খালা…তাকে জিজ্ঞেস করা যায়।

চোখ ডলতে ডলতে সে বিলকিস খালাকে জিজ্ঞেস করে,’ও খালা? খালা..মায়..কই গেছে? ‘ বিলকিস খালা..। বিলকিস খালা মাকে খুঁজে দেওয়ার আগে মা এসে পড়েন। মা এসে বাচ্চাটিকে কোলে নেয়। বাচ্চাটি পরম মমতায় মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে।
মা এগিয়ে যান..জনসমাগমের দিকে। বাচ্চাটির আবার ঘুম ভাঙে… তার মায়ের কাঁন্নায়..সে কৌতুহলী হয়ে পড়ে। একটি কক্ষে কেউ একজন ঝুলে আছে.. বাচ্চাটি বুঝতে পারে না।পুলিশ আসে ধরাধরি করে করে নামায় মৃতদেহটিকে। বাচ্চাটির সামনে দিয়ে..মৃতদেহটিকে নিয়ে যায়। বাচ্চাটি মায়ের কান্না দেখে মা’কে জিজ্ঞেস করে,’ওমা? জিলাপি খালার কি হইছে?’ মা জবাব দেয় না..অবুঝ শিশুটি আবার প্রশ্ন করে..ওমা..জিলাপি খালারে কোথায় নিয়া যায়? মা’ ডুকরে ডুকরে কাঁদে। হাত দিয়ে শিশুটিকে কাঁধে মাথা রাখিয়ে দিয়ে.. ক্রদণ কন্ঠে বলে,তুমি ঘুমাও ময়না। জেলাপি খালা আর আইবো না! শিশুটি মায়ের উত্তর শুনে ঘুমিয়ে পড়ে..



২.
পা দুটো ব্যথায় বিষ হয়ে আছে। হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় না,ব্যথা। কাটা যায়গা দিয়ে পানি বের হয়।
অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছে সে। জ্বর এসেছে কি না কে জানে।
মাথার উপর ঘট ঘট করে পাখা ঘুরছে।জ্বর উঠেছে গায়ে, ভর দুপুর বেলা। টিনের চালে অসহ্য গরম।পাখাও বাতাস দিচ্ছে গরম । ভ্যাপসা গরম। জৈষ্ঠ্য মাসের গরম হচ্ছে আম কাঠাল পাঁকার গরম।



জাফর মিয়া শোয়া থেকে উঠে বসে। খাট থেকে নেমে কোমড়ে লুঙ্গি ভালোভাবে বেধে নেয়৷ বাইরে বের হয়ে, শৌচাঘরের দিকে পা বাড়ায়।
আকাশে মেঘের ছিটে ফোটা নেই। আকাশ কাঁপিয়ে উড়ে গেলো একটি প্লেন। প্লেনের ছায়া পড়লো জাফরের গায়ে। পাশেই এয়ারপোর্ট। আকাশ দিয়ে প্লেন উড়ে গেলেই জাফর মিয়া তাকিয়ে থাকেসেদিকে। কত বিশাল যান্ত্রিক বাঁজ পাখি।বিকট শব্দ করে আকাশ কাঁপিয়ে উড়ে যায়। এয়ারপোর্টে নামার আগে কেমন ঈগলের মতো করে ঠ্যাঙ বের করে।জাফর মিয়ার খুব শখ এই যান্ত্রিক বাজ পাখিতে একদিন সে উঁড়ে বসবে৷ ঘুড়ে বেড়াবে আকাশে। কিন্তু এই যান্ত্রিক বাঁজ পাখিতে উড়ে কোথায় সে যাবে? এই পাখি কোথায় যায়? কোকাপ শহর? পরীদের দেশে?

জাফর মিয়া নাক চেপে সর্দি ঝেড়ে নেয়।শরীরটা কেন যেন ভালো লাগছে। রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে। রৌদ্রের উজ্জ্বলতা খুব বেশি৷ তাকানো যায় না। জ্বল জ্বল করছে চারপাশ।






জাফর মিয়া কাজ করে এখানকার একটা বিল্ডিংয়ে। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সে। ইটের উপর ইট তুলে দাঁড় করায় প্রাচীর। এই দশতলা বিল্ডিংয়ের নির্মানের শুরু থেকেই কাজ করছে সে।ছোট থেকে বেড়ে উঠতে দেখেছে এই বিল্ডিংকে। বিল্ডিংটি বিমানবন্দরের পাশে। জাফর মিয়া যেখানে কাজ করে সেখান থেকে বিমানবন্দরের ভেতরটা ভালো করে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর পর চারপাশ কাঁপিয়ে উড়ে যায় বিশাল বিশাল আকৃতির বিমান। জাফর মিয়া কাজ ফেলে তাকিয়ে থাকে। হেডমিস্ত্রি জাফর মিয়াকে ধমক দেয়,’জীবনে পেলেন চোক্ষে দেখো নাই নাকি?’ জাফর মিয়া মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। সে মুখ গোমড়া করে ইট গাঁথে।

জাফর মিয়ার ভেতরে কেমন অনুশোচনা হচ্ছে।
এখানের পরিবেশটা সবসময় হৈইহুল্লোড়ে মুখোরিত থাকে৷ রাত বাড়ার সাথে সাথে হৈহুল্লোড় বাড়ে। জাফর মিয়া প্রথম যখন এখানে এসেছিলো তখন তার বড্ড খারাপ লেগেছিলো কোন এক কারনে৷ জাফরের কাছের এক বন্ধু জাফরকে বলল,’এইখানে আইছোস দেহের চাহিদা মিটাইতে ব্যাটা,এইসব ভাবলে হইবো?’ এই বলে সে জাফরকে ঠেলা মেরে ঘরে ঢুকিয়ে দিলো। জাফর গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়লো খাটের ওপর। তার মাথার কাছে এক নারীর পা। এই নারীকে কেউ কেউ অপ্সরা বলে, কেউ বলে ফুলবানু কিংবা অন্য কিছু।



প্রথম কয়েকদিন জাফর মিয়া শুধু সময় কাটিয়ে বেড়িয়ে এসেছে। পরনারীকে ছুঁতে সে দারুণ অনুশোচনায় ভোগে৷ এই অপ্সরার বয়স বেশি না ত্রিশের কাছাকাছি। দেখলে মনে হয় ষোল সতের বয়সের কিশোরী ৷সে খিল খিল করে হাসে। জাফর মিয়া ফ্যালফ্যাল করে তাঁকিয়ে থাকে।

৩.
সময় গড়িয়ে যায়,পরিস্থিতি মানিয়ে নেয় জীবনকে। জীবন কখনো হার মেনে যায়।।মাথায় ভাবনার কিড়মিড়ে কোন্দল নিজেকে শুষে খায়। ভাবনার ঘুণপোকারা দল বেঁধে দুশ্চিন্তা পাকায়। সেই সাথে ক্ষাণিক দুঃখ মিশলে মনে হয় জীবনটা সত্যি খুব দীর্ঘ সময়ের। জাফর মিয়া দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। শলা দিয়ে দাঁত খোঁচায়। কালো কুঁচকুঁচে দাঁতের গোঁড়া থেকে রক্ত বের হয়। জিহ্ববার মাথা দিয়ে দাঁতের গোড়ায় লাগিয়ে সে অনুভব করে রক্তের স্বাদ নোনতা।

রোদ থেকে উঠে ছায়ায় গিয়ে বসেছিলো জাফর মিয়া। সময় গড়িয়ে গেছে। সূর্যের আলো ছাঁয়াকে সরিয়ে তার মাথায় এসে পড়েছে। অসহ্য জ্বালা।

ফুলবানুর সাথে তার বেশ সখ্যতা হয়েছে। রাত সাড়ে ন’টায় আসলে ফুলবানুকে পাওয়া যায়৷ জাফর এসে দরজা এটে দেয়। ফুলবানুর কোলে মাথা রাখে। ফুলবানু মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়। মেয়েটির চেহারার সাথে বকুলের বেশ মিল আছে৷ হাসলে তাকে বকুলের মতোই লাগে।বকুল জাফরের স্ত্রী। সাত বছর আগে বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় বকুল। ফুলবানুর কোলে মাথা দিয়ে বকুলের কথা ভাবতে ভাবতে তার চোখ ভিজে ওঠে। ফুলবানু তাকে টালা দিয়ে স্বরণ করিয়ে দেয়। ফুলবানুর কক্ষে তার নির্দিষ্ট সময়ের কথা। জাফর উঠে ধড়মড়িয়ে খাট থেকে নেমে, চটি জোড়া পায়ে ঠুকিয়ে দরজা খুলে হন হন করে হাটা দেয়। ফুলবানু হাঁক দিয়ে বলে…. ট্যাকা দিয়া যান। জাফর দরজা খুলে হন হন করে হাটা দেওয়ার আগে বলে.. “রাত্তিরে আইয়া দিমুনে”

*
জাফর মিয়ার মাথায় আজকাল দুশ্চিন্তা বাসা বাঁধে। দুশ্চিন্তা তাকে গলা টিপে ধরে, শ্বাস করতে কষ্ট হয়। দুশ্চিন্তা কমাতে সে সিগারেট ধরায়। সিগারেটের ধোয়া তাকে খানিক দুশ্চিন্তা মুক্ত করলেও, কিছুক্ষণ পর পর তাকে দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরে।



জাফরের একটা ছোট মেয়ে আছে। জাফরের স্ত্রী বকুল সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। বেঁচে যায় মেয়েটি। মেয়েটিকে মানুষ করে জাফরের বোন। মেয়েটির বয়স সাত বছর। পাকা পাকা কথা বলে সে। জাফর মিয়া অনেকদিন তার মেয়ের সাথে কথা বলেনি। মেয়ের সাথে কথা বলতে গেলে তার চোখ ভিজে ওঠে। বুকটা ধড়ফড় করে। জাফর মিয়ার খানিকটা অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। সে মেয়ের কথা ভাবছে,একই সাথে তার চিন্তায় বাসা বেঁধে আছে তার স্ত্রী। এই চিন্তার মধ্যে উঁকি দিচ্ছে আরেকজন। সে ফুলবানু। জাফর মিয়ার ভীষণ অস্বস্তি লাগছে।





মা মেয়েকে নিয়ে চিন্তার মধ্যে একটা নটি এসে কেন উঁকি দেবে? জাফর মিয়ার চিন্তা গাঢ় হতে থাকে। দাঁত খোচাতে গিয়ে চিন্তায় মগ্ন হয়ে দাঁতের ফাকে শলা ঢুকে পরে। রক্ত বের হয়। সে মুখ থেকে একদলা থুথু ফেলে, থুথুর সাথে রক্ত মিলে লাল হয়ে যায়। রক্তের রং লাল, রক্তের স্বাদ নোনতা।

৪.
কুপি নিভে গেছে! দুটো শরীর এলিয়ে গেছে। ক্লান্ত হয়ে পড়েছে হাত পা। নিশুতি রাতে দুটো মানুষের ঘন নিশ্বাসের শব্দে, রাতের জোনাকিরা লজ্জা পায়।
জাফর মিয়া ফুল বানুর গালে হাত রাখে। ফুলবানু হাত দিয়ে সরিয়ে দেয় সে হাত।
জাফর মিয়া আবার হাত দেয়। ফিসফিস করে বলে,তোরে আমি বিয়া করুম। বিশ্বাস কর! এত সুখী আমি আর কাউর লগে হই নাই। ফুলবানু স্মিত কন্ঠে বলে, আপনে বাড়ির যান। যাওয়ার আগে ট্যাকা দিয়া যান। জাফর মিয়া বলে, আমি তোরে ভালোবাসি “জ্যোৎস্না ফুল” ফুলবানুর বুকটাতে শীতল পরশ বয়ে যায়। এই লোকটার মধ্যে কিছু একটা আছে। ফুলবানু মাথা দেয় জাফরের বুকে। টিনের চাল থেকে জ্যোৎস্না এসে পড়ে ফুলবানুর গালে।

নিশুতি রাতে নিশ্বাস ঘন হয় আবারো! পুরুষ জোনাকিটি মেয়ে জোনাকিকে খুঁজে পেয়েছে। আজ জ্যোৎস্নার আনন্দের দিন….



৫.
জাফর মিয়া গত রাতে ফুলবানুকে বলেছিলো, শোন আমি কাইলক্যা ঘাটে থাকুম। একেবারে ভোর বেলায় তুই ঘাটে চইলা আবি। ফুলবানু মাথা নাড়ায়,জ্বে আচ্ছা.. আমুনে। জাফর মিয়া ফুলবানুর কাধে হাত দিয়ে বলে,তুই একা আইতে পারবি? নাকি আমার আইয়া নেওন লাগবো?
ফুলবানু কাঁধ থেকে হাত নামিয়ে বলে, আমি একাই যাইতে পারুমনে। অনেক রাত্তির হইছে। আফনে কি এহন শুইবেন? জাফর মিয়া কুপি নিভিয়ে দেয়.. ফুলবানুর টাইট ব্লাউজের একেকটা বোতাম খুলে নেয়। ফুলবানু জাফরকে থামিয়ে দেয়, হাতরে হাতরে টেবিলের ড্রয়ার খুলে কিছু একটা বের করে নেয়। ফছছ করে শব্দ, সুগন্ধে ছড়িয়ে পড়ে পুরো ঘরে।



জাফর মিয়া রাস্তার দিকে তাকিয়ে থেকে আনমনা উদাসীন হয়ে এই কথা ভাবতে থাকে। তার শরীরের কোন অঙ্গের বিশেষ পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পারে। বুকের মধ্যে অন্যধরনের অনুভূতি হয়। জাফর মিয়া আরো চিন্তিত হয়, পকেট থেকে সিগারেট বের করে পর পর লম্বা দুটো টান দেয়৷ চিন্তা আর অন্য অনুভূতিতে পেটে চাপ পরে..গলা কাঁকিয়ে কফ পরিস্কার করে। রাস্তার দিকে তাকায়..দু একটা কুকুর দেখতে পাওয়া যায়!

ফুলবানু এখনো আসছে না কেন? সে কোথায়? সে কি জাফরকে কথা দিয়েছিল..সেই কথা কি রাখতে পারবে না? ফুলবানু কি হারিয়ে গেল.. কোন জলসা ঘরের, কুয়াশায়?

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা: একটি পর্যালোচনা-  বারিদ বরন গুপ্ত

প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা: একটি পর্যালোচনা-  বারিদ বরন গুপ্ত

  বারিদ বরন গুপ্ত বর্তমান সমাজ পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়েছে ।আমরা আজ যেদিকেই তাকাই না কেন সেই একই ছবি প্রযুক্তি ,কৃষি ক্ষেত্রে ,শিল্পে ,ব্যবসা-বাণিজ্যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, অফিস ...
 যান্ত্রিক শহর - কবিতা / রাইয়ানুল ইসলাম 

 যান্ত্রিক শহর – কবিতা / রাইয়ানুল ইসলাম 

I রাইয়ানুল ইসলাম    পৃথিবীর অক্ষরেখা ক্ষয়ে যায়, প্রাচীন মরিচীকায় ধোয়াশা হয় গন্তব্য একূল ওকূল সক্রিয় প্রাণীর পদচিহ্ন বাড়তে বাড়তে পূর্ণ হয় ভূমি আমি কি ...
সাঁঝদুয়ারি (১৮+)

সাঁঝদুয়ারি (১৮+)

 আশিক মাহমুদ রিয়াদ  সন্ধ্যে নামার আগেই গাঢ় অন্ধকারে ডুবে গেছে চারপাশ। বুনো মশার বুন বুন শব্দ। বারান্দায় নামাজ পড়ছেন আব্বা। সুর করে সূরা পড়ছেন। দাদীর ঘরে ...
The Ultimate Guide to Stock Market

The Ultimate Guide to Stock Market

Cursus iaculis etiam in In nullam donec sem sed consequat scelerisque nibh amet, massa egestas risus, gravida vel amet, imperdiet volutpat rutrum sociis quis velit, ...
ভেসে যায় ভিতর-বাহির

ভেসে যায় ভিতর-বাহির

অনঞ্জন সে ঠিক করল বৃষ্টি দেখবে, ভিজবেনা কিছুতেই, বৃষ্টি এল, অরণ্যের মতো, দুকুল ছাপিয়ে- আজই ধুয়ে নিয়ে যাবে সমস্ত পুরনো বিশ্বাস, আকাশে তখন অনন্তের সব ...
দেশকে ভালোবাসি

দেশকে ভালোবাসি

 হামিদা আনজুমান ব্রিটিশ রাজের অত্যাচারের জন্য ভীন দেশিদের তাড়িয়ে হই ধন্য। কিন্তু কপাল হায় কত যে মন্দ সাপের ফণা দম করে দেয় বন্ধ। পাক হায়েনা ...