আশিক মাহমুদ রিয়াদ
রাসেল তুমি
শেখ রাসেল তুমি ছিলে বৃষ্টি ফুল কাশফুল..
তোমার চোখের সরলতায় খেলা করত মিষ্টি ফুল
একদল হায়না তোমার চোখের সরলতা দেখলো না..
তাদের পাষাণ হৃদয় তোমার বুকে একঝাক গুলি করতে বাঁধা দিলো না।
স্বর্গে যেন তুমি হও মিষ্টি ফুল !
শেখ রাসেল তুমি বেঁচে আছো আমাদের মাঝে!
তোমার সারল্যে বাংলাদেশ হাসে,
তোমার স্মৃতিতে বাংলাদেশ কাঁদে।
সারল্য, চাতুরতা তোমার চোখেমুখে
তোমার শৈশব কেটেছে ৩২ নম্বরে!
আহ! শৈশবে তোমার কি অবিচল যুক্তি
হতে চেয়েছিলে বাবার মত উদ্বীপ্ত প্রদীপ
আগস্টের ১৫ রাতে এক ঝাক বারুদ
তোমায় দেয়নি মুক্তি!
রাসেলের ছোট্ট বিড়াল
রাসেলের ছিলো ছোট্ট বিড়াল,
ডাকত সারাদিন মিউ মিউ করে
পথের ধারে জীর্ণ বিড়ালকে
হাত বাড়িয়ে আনলো ঘরে তুলে
যত্ন আদ্যি করতো দিব্যি !
ডাকত সারাদিন মিউমিউ,
রাসেলের স্নেহে ঘুমিয়ে যেত।
ঘুরে বেড়াতো এঘর ও ঘর।
একদিন এক কালো বিড়াল হানা দিলো তাদের বাড়ি
তারা যে বিড়াল নয়, মানুষ বলাও ভুল হয়।
পশুর চেয়েও অধম তারা!
হত্যা করে সবাইকে!
রাসেল তখন এগিয়ে গেলে !
তারাও তাকে ছাড়ে না!
রাসেল যখন মেঝেতে লুটিয়ে
বিড়াল তখন কাঁদে।
হিংস্র ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে বিড়াল তাকায় হায়নার দিকে!
হায়নাগুলোর বিস্তর বুলেট, ঝাকে ছুটে আসে বিড়ালটির দিকে।
প্রিয় রাসেল
সবুজ প্রান্তরে ছুঁটে বেড়ায়,
উড়ে রাসেলের ফিনফিনে চুল,
সারাদিন ঝাপাঝাপি, দৌড়-ঝাপ,
একটু আধটু দুষ্টমিতে,কাটছে তার শৈশব!
একদিন এক ঝোপের পাশে
জীর্ণ এক বেড়াল ছানা,
মিউ-মিউ ডাকে, বেচারা ক্লান্ত এ বেলা।
রাসেল ছুটছে সাইকেল নিয়ে,
বিড়াল এলো রাস্তায়।
কষে ব্রেক চেপে!
হেঁটে গেলো পাশটায়।
কোলে নিয়ে স্নেহের স্বরে
“আহ! বেচারা এক বেড়াল ছানা।
সুস্থ হতে হবে তোমার।”
সেই থেকে সঙ্গী রাসেলের বিড়ালটি,
থাকতো তার সঙ্গে, সকাল হোক বিকেল হোক
কিংবা রাত সন্ধ্যে,
আদুরে রাসেল আদর পেতো সবার।
বিড়াল পেতো রাসেলের স্পর্শ।
বেচারা বিড়াল যেনো, রাসেলের শিষ্য।
ঘর জুড়ে ছিলো তোমার জড়াজড়ি,
আহ্লাদে আটখানা, কিংবা কখনো অভিমানি।
ডানপিটে হয়ে দিতে এক ছুট,
ঘুম ঢুলু ঢুলু চোখে ঘুমিয়ে তোমার নিষ্পাপ মুখ।
স্নেহজড়ানো কি মিষ্টি মুখ খানা তোমার।
হঠাৎ একঝাক পাপিষ্ঠ হায়নার ডাক!
ঘুম ঢুলু ঢুলু চোখে তুমি সঙ্গে তোমার নিরীহ বিড়াল!
দরজায় আঘাত হানে হিংস্র কড়াল,
ভয়াবহ রাত শেষে তোমার দিকে ছুটে আসে একঝাক বুলেট।
ওরা তোমার বিড়ালটাকেও নিস্তার দেয়নি!
কতটা বর্বর হলে, ওরা তোমার মত নিষ্পাপকে মেরে ফেলে!
ধানমন্ডির লেকের জল ছুঁয়ে বাতাসের কলধ্বনী আজও তোমার কথা বলে।
রাসেলের ছবি
শেখ রাসেল সেদিনের সেই ভয়াবহ রাতের কথা আমাদের মনে আছে,
সেই রাতে যখন আকুতি করেছিলে তুমি মায়ের কাছে যাবে,
হায়নার দলের ভয়ংকর মুখ দেখেও তুমি মিনতি জানিয়েছিলে,
মায়ের বুলেট বিদ্ধ নিথর দেহ তখন মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছে,
তুমি ওদেরকে নিষ্পাপ গলায় বলেছিলে, ভাইয়া আমাকে মারবে না তো?
তাদের পাষাণ পন্ডুর দল শোনেনি সেদিন তোমার কথা,
তোমাকেও দিতে হয়েছিলো প্রাণ বিসর্জন।
যদি তুমি দেখে থাকো শেখ রাসেল,
এই বাংলাদেশ আজও তোমার কথা বলে….
আজও তোমার হাসি ধানমন্ডির বাতাসে ভাসে।
তোমার মত ছোট ছোট ফুল যারা তোমার ছবি আঁকে!
নাম তার শেখ রাসেল
একটি ছেলের নাম বলি, তার নাম শেখ রাসেল।
ভীষণ ডানপিটে আর দুরন্ত দুষ্টুমিতে ভরপুর।
সারাদিন হেসেখেলে বেড়ায়, নিশ্চুপ নিঝুম হৃদফুল!
হঠাৎই নামে কালো একরাত, সকাল হতে ক্ষাণিক বাকি!
বুটের শব্দে কেঁপে ওঠে সেই কলরবে মুখর বাড়ি।
রাতের আঁধারে নেমে আসে বুলেটের কর্কষ শব্দ।
রাসেলের ঘুম ভাঙে, ভয় ভয় এগোয় সামনে।
ততক্ষণে বাবা নেই, মাও নিথর হয়ে পড়ে আছেন
বড় ভাইয়া? আর বাকি সবাই?
শেখ রাসেল এগিয়ে যায় হিংস্রদের কাছে।
‘ক্রদনকন্ঠে বলে, আমাকে মারবে না তো?
তারা তাকেও ছাড়া না, চালায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ।
শেখ রাসেল আজও বেঁচে আছে হাজার শিশুর মাঝে।
শেখ রাসেল তুমি কি জানো? আজও বাংলাদেশ তোমার জন্য কাঁদে?