এন এইচ সংগ্রাম
*
যখন তুমি গ্রীষ্মের প্রখর গরমেও
কোর্ট, স্যুট, টাই পরে,
দুধ ডিম আর বাহারী ফলের ব্রেকফাস্ট করে
ঘোড়ার খুরের মত বুটে শব্দ করে,
গাড়ি হাকিয়ে স্কুলে যাও…..
তখন, তোমার সমবয়সী একটি ছেলে
কাঠপেন্সিলের মত জীর্ণ দেহ নিয়ে
তোমার গাড়ির গ্লাসে ঠকঠক আওয়াজ করে
ফুলের গন্ধের বিনিময়
খাবারের গন্ধ খুজে বেড়ায়,
তখন তুমি তাকে তাড়িয়ে দিলে!!
যখন তুমি পেটপুড়ে খেয়ে
তারকাওয়ালা হোটেল থেকে ফিরছিলে,
তখন তোমার সমবয়সী একটি ছেলে
পেটের খুধা জ্বালায়
ডাস্টবিনে তল্লাশি চালায়,
উদ্ভট গন্ধের জন্য তুমি তাকে তাড়িয়ে দিলে!!
যখন ক্লাসে শিক্ষক তোমাকে
ভূগোল, ইংরেজী, মানবতার কবিতা,
নিউটনের থিওরি কিংবা
মোঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস পড়াচ্ছে,
তখন তোমার সমবয়সী কোনো ছেলেকে
জারজ কিংবা অকথ্য গালি দিচ্ছে!!
যখন তুমি খেলার মাঠে
খুব উচ্ছাসে ছক্কা হাকাচ্ছো..,
তখন তোমার সমবয়সী কোনো ছেলে
লেগুনার পিছনে দৌড়াচ্ছে
আর….
মহাখালী- গুলিস্তান বলে চিৎকার করছে
যখন তুমি ফেলে দাও খাবার
ভালো হয়নি’র বায়না করে
তখন তোমার সমবয়সী কোনো ছেলে
সারাদিন খেতে পায়নি বলে
দোকানীর রুটি চুরি করে
পাটকেলে পেট ভরে!!
যখন তুমি ব্রিগেডিয়ারের মত ড্রাইভারকে
কমান্ড করো “লেফট-রাইট, লেফট-রাইট” বলে,
তখন তোমার সমবয়সী কোনো ছেলে,
টিরিং টিরিং আওয়াজ করে
গতি বাড়ায় প্যাডেলে!!
যখন তুমি শপিংমল থেকে নামছিলে
রঙিন ভাবনা ভাবতে ভাবতে
আনমনে পা পিছলে পোষাকভর্তি ব্যাগগুলে
বিধ্বস্ত বিমানের মত ভুপাতিত হলো,
তখন ছেঁড়া পোশাকের,
তোমারই সমবয়সী কেনো ছেলে
ব্যাগগুলে গুছিয়ে তোমার হাতে দিলে..
তুমি তাকে ছোট্ট করে “থ্যাংকস ” বললে,
সে কিছুই না বুঝে বোকার মত নির্বাক তাকিয়ে থাকলো!
তুমি তার ছেঁড়া পোশাক দেখে,
নাক ছিটকে চলে গেলে!!