অণুগল্প : শিউলি ফুল
বৃন্তচ্যুত একটি শিউলি শরতের সকালে কুয়াশা মাখা ঘাসে লুটিয়ে পড়েছে। জগত সংসার থেকে আজ তার একরকম মুক্তি মিলেছে। সামাজিকতার দায় চুকেছে চিরতরে।
যদিও প্রস্ফুটিত এই সতেজ শিউলি ভালোবেসে আঁকড়ে থাকতে চেয়েছিলো আরো কিছুদিন; আদরে- নির্ভয়ে ডালের সবুজ পাতার সাথে গা মিলিয়ে।
প্রকৃতির নিয়ম কিংবা দুর্ঘটনার ফল: শিউলিকে ঝরে পড়তে হলো তার বৃন্তের মায়া ছেড়ে। বিচ্ছেদের কষ্ট নিয়ে শিউলির ডাঁটিটির রং হলো রক্তের কাছাকাছি গাঢ় কমলা।
আর স্বামী সোহাগের স্পর্শবিহীন শিউলিবালিকা অন্যপাশে হয়ে উঠলো রক্তশূন্য- বিবর্ণা। লোকের চোখে যাকে মনে হয় শ্বেত শুভ্রতা, সে আসলে শিউলিফুলের প্রাণের স্পন্দনহীনতা।
শিউলির কষ্টে চোখের জল ফেললো মাঠের তৃণ-লতা, ঘাসবন, নির্জনের কুজ্ঝটিকা। কিন্তু শিউলি! কারো হাতের চাপে থেঁতো হবার আগেই অমলিন হাসিতে বুকের ক্ষতে সুতো গড়িয়ে শোভা বাড়ায় সধবার রূপে।
শিউলির শুভ্রতায় গৃহিণীর স্বামীটি অধিক ভালোবাসে তাকে। বিধবার জ্বালা সধবা নারী বুঝতে পেরেছিলো কোনদিন, কবে!