ভ্রমণভ্রমণ কাহিনি - Travel Storyসর্বশেষ

দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস

আবির ইসলাম

ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত কেন্ট কাউন্টির(বিভাগ) একটি ঐতিহ্যবাহী শহর ক্যান্টারবেরি। শহরটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত।
ইংরেজি সাহিত্যের জনক হিসেবে খ্যাত মধ্যযুগীয় লেখক ও কবি জেফ্রি চসার( Geoffrey Chaucer) এর বিখ্যাত গল্পগ্রন্থ “দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস” এই শহরকে কেন্দ্র করেই রচিত।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজারের মতো। এখানে সব থেকে বেশি বসবাস করেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে রয়েছেন মুসলিম, হিন্দু, ইহুদি ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ।

ক্যান্টারবেরি শহরে গেলে আপনার মনে হবে আপনি যেন অতিতে হাঁটছেন। শহরটি ঘিরে রয়েছে অসংখ্য পুরনো চার্চ। যার মধ্যে অন্যতম হল কয়েক শতক পুরনো ক্যান্টারবেরি ক্যাথিড্রাল। আরো রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন। যার মধ্যে ওয়েস্টগেট টাওয়ার্স , সেন্ট অগাস্টিন’স অ্যাবে, ইস্টব্রিজ হসপিটাল, ক্যান্টারবেরি হেরিটেজ মিউজিয়াম, সিটি ওয়ালস, ক্রাইস্টচার্চ গেট, ক্যান্টারবেরি ক্যাসল অন্যতম।

শহরের কেন্দ্রে রয়েছে ‘Whitefriars’ নামে একটি শপিং সেন্টার। ট্রাডিশনাল কিছু রেস্টুরেন্টসহ এখানে রয়েছে মোটামুটি সব ধরনের ছোট বড় দোকানপাট, চেইন শপ, পাব, কালচারাল সেন্টার।
সারাদিন লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে এই শপিং সেন্টারটি। এছাড়া ক্যান্টারবেরি হাই স্ট্রিটে রয়েছে আরো বেশ কিছু পুরনো দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রায়ই স্ট্রিট সিঙ্গারদের
দেখা যায় বেহালা কিংবা অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্র হাতে। তাদের সৃষ্ট সুরে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকে সম্পূর্ণ সিটি সেন্টার।

ক্যান্টারবেরি শহরে সর্বদাই দেখা যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরকে। এ যেন এক শিক্ষার্থীদের শহর। এখানে রয়েছে বেশ কিছু স্কুল, কলেজ আর ইউনিভার্সিটি। কিংস স্কুল, ক্যান্টারবেরি কলেজ, কেন্ট কলেজ, ইউনিভার্সিটি অফ কেন্ট, ক্যান্টারবেরি ক্রাইস্টচার্চ ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।

ক্যান্টারবেরি শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে ‘River Stour’ নামে ছোট্ট একটা নদী যেটা দেখতে কিছুটা আমার দেশের খালের মত । এই নদীতে নৌকায় করে ঘোরা যায়। শিল্পকলার অংশ হিসেবে এখানে রয়েছে মার্লো থিয়েটার নামে একটি থিয়েটার। এখানে বেশ কিছু নান্দনিক সৌন্দর্যে মন্ডিত পার্কও রয়েছে। যেমন : ওয়েস্টগেট গার্ডেনস, ডেন জন্স গার্ডেনস, ব্লীন উডস ন্যাশনাল নেচার রিজার্ভ ইত্যাদি অন্যতম। শহর থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে রয়েছে হলেটস অ্যানিম্যাল পার্ক নামে ১০০ একর জমির উপর করা একটি চিড়িয়াখানা। এছাড়াও রয়েছে কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব।

ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-প্রকৃতি এই তিনে মিলেমিশে যেন একাকার এই শহরটি। পরিশেষে বলব যেকোনো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অথবা যারা বিশ্ব ইতিহাসও ঐতিহ্য নিয়ে আগ্রহী তাদের জন্য নিঃসন্দেহে আদর্শ একটি জায়গা হল ক্যান্টারবেরি।

 

Thanet, Kent, United Kingdom

এই লেখাটি শেয়ার করুন
ছাইলিপির ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

ছাইলিপির কথা

লেখালিখি ও সৃজনশীল সাহিত্য রচনার চেষ্টা খুবই সহজাত এবং আবেগের দুর্নিবার আকর্ষণ নিজের গভীরে কাজ করে। পাশাপাশি সম্পাদনা ও প্রকাশনার জন্য বিশেষ তাগিদে অনুভব করি। সেই প্রেরণায় ছাইলিপির সম্পাদনার কাজে মনোনিবেশ এবং ছাইলিপির পথচলা। ছাইলিপিতে লিখেছেন, লিখছেন অনেকেই। তাদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই ওয়েবসাইটের প্রতিটি লেখা মূল্যবান। সেই মূল্যবান লেখাকে সংরক্ষণ করতে লেখকদের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। কোন লেখার মধ্যে বানান বিভ্রাট থাকলে সেটির জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। ছাইলিপি সম্পর্কিত যে কোন ধরনের মতামত, সমালোচনা জানাতে পারেন আমাদেরকে । ছাইলিপির সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ছাইলিপির নতুন সংযোজন ছাইলিপির ইউটিউব চ্যানেল Chailipi Magazine। সাবস্ক্রাইব করার আহ্বান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করা থেকে বিরত থাকুন ! বিশেষ প্রয়োজনে ইমেইল করুন [email protected]