তানভীর আহমেদ সৃজন
ভ্রু কুচকে ডেস্কের ওপরে রাখা সেলফোনটার দিকে তাকালো সে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ক্রমাগত বেজেই যাচ্ছে ফোনটা! অগত্যা ডেস্কের কাছে এগিয়ে গিয়ে সেলফোনটা হাতে তুলে নিয়ে রিসিভ করে কানে ঠেকালো সে। সঙ্গে সঙ্গে ওপাশ থেকে ভেসে এলো একটা উদ্বিগ্ন কণ্ঠস্বর।
-হ্যালো! মিস্টার আসলাম জোয়ার্দার বলছেন?!
-জ্বি বলছি। আপনি কে বলছিলেন?
-আমি ধানমন্ডি থানা থেকে ওসি হারুন বলছিলাম। আপনি এখন কোথায় আছেন?
-এত রাতে নিজের বাড়িতে ছাড়া আর কোথায় থাকবো?!
-আমি এক্ষুণি ফোর্স নিয়ে আপনার বাড়িতে আসছি! দশ মিনিট লাগবে আমাদের আসতে, ততক্ষণ আপনি একটু সাবধানে থাকুন!
-কেন? কী হয়েছে?!
-হাসমত মেন্টাল এসাইলেম থেকে পালিয়েছে জোয়ার্দার সাহেব!
-কোন হাসমত?
-সেঞ্চুরি হাসমত!
-মানে সেই সিরিয়াল কিলার, যে একশো খুনের টার্গেট নিয়ে টানা চার বছর ধরে একটার পর একটা খুন করে গেছে?!
-জ্বি! সেই হাসমত, দু’বছর আগে যার একশোতম ভিক্টিম আপনি হতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার আগেই আমরা তাকে এরেস্ট করে ফেলেছিলাম!
-ওহ মাই গড! সেই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার এসাইলেম থেকে পালিয়ে গেছে?!
-জ্বি। এবং আমাদের ধারণা, সে আপনার কাছেই যাবে তার ইনকমপ্লিট টাস্ক কমপ্লিট করতে। আপনি আপনার বাড়ির দরজা, জানালা সব বন্ধ করে রাখুন। আমরা না আসা পর্যন্ত ভুলেও দরজা, জানালা কিছুই খুলবেন না!
-ঠিক আছে! আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন!
-আমরা অলরেডি রওনা দিয়ে দিয়েছি। আমাদের আর মিনিট সাতেকের মত লাগবে আপনার ওখানে পৌঁছাতে!
-ঠিক আছে!
লাইন কেটে দিয়ে ফোনটা আবার ডেস্কের ওপর রেখে দিলো সে। তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে সে প্রথমে তাকালো তার থেকে খানিকটা দূরে মেঝের ওপর পড়ে থাকা মুণ্ডুহীন ধড়টার দিকে, এরপর তাকালো সেই ধড় থেকে তিন হাত দূরে গড়াগড়ি খেতে থাকা মুণ্ডুটার দিকে।
আসলাম জোয়ার্দারের কাটা মুণ্ডুটার দিকে কয়েক মুহুর্ত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর এক পর্যায়ে মুচকি হাসলো সেঞ্চুরি হাসমত।
তার নামের আগে “সেঞ্চুরি” বসানোটা আজ অবশেষে সার্থক হলো!
ঢাকা, বাংলাদেশ ।