সন্তোষ কুমার শীল
হেমন্ত প্রভাত
আমার নিকানো উঠোনে শিউলী ফুল
শিশির- সিক্ত স্নিগ্ধ নয়নে চেয়ে
এল যে লগ্ন ,বেজেছে বিদায় সুর
হেমন্ত এল কুহেলীর পথ বেয়ে।
শারদোৎসবে যে ছিল রূপের রাণী
রিক্ততা সেথা, শূন্য কাশের বন
অরণ্যে আজ লেগেছে হিমেল ছোঁয়া
বিষণœ তাই শ্যাম বনানীর মন।
প্রকৃতির সব ঐশ্বর্যের ডালি
নিঃশেষ করে দিয়েছে ধানের ক্ষেতে
সমারোহে তার প্রান্তরে জাগে হাসি
সোনালি প্রভাত উৎসবে ওঠে মেতে।
নীলিমার বুকে সোনালি ডানার চিল
চকিতে কখন দূরের বারতা আনে
ধ্যান-নিমগ্ন নিসর্গের এই মায়া
শুদ্ধ প্রভাতে শান্তি জাগায় প্রাণে।
এইতো আমার বাংলা কুটির খানি
স্বর্গশোভাও হার মানে যার কাছে
এইখানে এসে ভরেছে হৃদয় মোর
‘সুপ্রভাত’ আজ এই শুধু বলার আছে।
অঘ্রাণের গান
এসো আজ এই অঘ্রাণ-প্রান্তরে
যেখানে পড়েছে ভোরের নরম রোদ
শিশির বিন্দু ঢেলেছে হীরের কণা
ফসলের ঘ্রাণে নিঃশ্বাস নেবে ভরে।
চারিপাশে জাগে পাকা ফসলের গান
বিষণœতার ভাবনা এখানে বৃথা
নিসর্গের এই অপরূপ হাতছানি
সুখৈশ্বর্যে ভরাবে তোমার প্রাণ।
এসো এসো এই ফসলের সম্ভারে
তরুণ আমার ব্যাকুল হিয়া কাঁদে
সৃষ্টি-সুখের লগ্ন বিদায় নিলে
মূল্য দিয়ে ফেরানো কি যায় তারে!
ভ্রান্তির পুঁতি কুড়ানো হল তো ঢের
মালাগাঁথা শুধু স্বপ্নেই হল সারা
আজ অঘ্রাণে ফসল ক্ষেতের ধারে
এসো চাষ করি মানব জমিন ফের।
সোনার ফসল ফলাব দু’জন মিলে
নবান্ন হবে নিরন্ন এই দেশে
আগামী কালের নব নব সভ্যতা
আমাদের শ্রমে গড়ে তুলি তিলে তিলে।