স্বপ্নের দালান অনন্তবীথি আলো
বোর্ড বাইন্ডিং জ্যাকেট কভার বুক
সম্পাদক : পার্থ দে ও জয়দীপ লাহিড়ী
সম্পাদনায় – চীনে পটকা-কবিতাকে কল্পনায়
প্রকাশনা – এবারত
প্রচ্ছদ – আম্রপালি রায় ও টিম কল্পক
অক্ষর সজ্জা – টিম কল্পক
কবিতার বই || পৃষ্ঠা – ২০৮
বিনিময় – ২৫০ টাকা
বই পর্যালোচনায়- দিব্যেন্দু হালদার
বইটির নামকরণ এর যথার্থতাই বইটির উপযুক্ত ব্যাখ্যা বলে আমি মনে করছি। যদিও এই অমূল্য সম্পদের কাঁটাছেড়া করবার যোগ্য আমি নই, কিন্তু কবিতাপ্রিয় মানুষ হিসেবে নিজের মতামত প্রদানের একটা চেষ্টা করে দেখা যেতেই পারে। ‘দালান’ অর্থেই বৃহৎ কিছু এমন ধারণা আমাদের ছোট বড় সকলেরই জানা। এখন ‘স্বপ্নের দালান’ কেন! আমরা যারা কবি অথবা অকবি অথবা পাঠক কিংবা পাঠিকা সকলেই কারোর মতো হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলি। যদিও আপনি ভাবতে পারেন আপনি কারোর মতো নন, তবুও তো আপনি নিজের মতো; একটা স্বপ্ন বয়ে নিয়ে বেড়ান বুকে। আর সেই সব স্বপ্ন যদি একসাথে আপনার দালানে বা ধরুন বুকের মধ্যে ( আহা বুক মানে আপনি বাংলা ইংরেজি দুটোই ভেবে নিন, ক্ষতি তেমন কিছুই নেই ) ধরা দেয় কেমন ব্যাপার বলুন দেখি! এক্ষেত্রে আমরা সকলেই যারা কবিতার জন্য বাঁচি বা যাদের দিনের মধ্যে ভাত রুটি ছাড়াও চিকেন মাটন এর মতোই কবিতা সুস্বাদু মনে হয় তাদের জন্য এই বই একপ্রকার পুষ্টি বলতে পারেন। আপনি দীর্ঘদিন ঘরে খান নষ্ট হবে না। আবার এমনও ধরে নিতে পারেন প্রফেসর শঙ্কুর আবিষ্কৃত পিল যা একবার খেলে অনেকদিন অবধি পেটে সয়। ভাবছেন হয়তো কি সব বলছে…
তাহলে বলি শুনুন মশাই … কি পাবেন এক দালানে ― রাজা ভট্টাচার্য, ঋজুরেখ চক্রবর্তী, অরুণাচল দত্ত চৌধুরী, সৈকত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তরুণদের মধ্যে অন্যতম জগন্নাথদেব মণ্ডল এর কবিতা, পাবেন অভীক রায় এর কবিতা। ভাবতে পারছেন! লিখেছেন বিনোদ ঘোষাল মহাশয়, কমলেশ কুমার, অনুষ্ঠুপ শেঠ আরও প্রমুখ। আরে ধুর বলে শেষ করা যায় নাকি! আমি সূচি দিয়ে দেবো বরং। বিশিষ্ট কবি সকলের প্রায় দেড়শোরও বেশি কবিতা দিয়ে সাজানো এই স্বপ্নের দালানটি। এখনো অবধি স্বপ্নের দালান বলে চলেছিলাম। এইবার বলবো ‘অনন্তবীথি আলো’ কেন!
ইতিমধ্যেই হয়তো সূচির দিকে চোখ পড়েছে। আপনি যদি বাংলা কবিতার সুপাঠক বা পাঠিকা হোন একবার হলেও আপনি ভাবতে বাধ্য এ কথা হলফ করে বলতে পারি। বইটিতে শুধুমাত্র যে কবিতা আছে তাই নয়, এমন কিছু কবিতা আছে যা আপনাকে “কবিতা কি?” তার উত্তর খুঁজে দিতে পারে।
কবি অরুণাচল দত্ত চৌধুরী ‘পরবর্তী নিবেদন’ কবিতায় লিখেছেন –
………..
ছবিরা সাজে বলেই, গাছের ডাল খুলে নেওয়া ঝড়
আশ্চর্য নরম হয়ে নামে আত্মরতির আঙ্গুলে
……..
কবি জগন্নাথদেব মণ্ডল এর কবিতায় ধরা পড়েছে পৌষ মাসের অপরূপ বিরল দৃশ্য।
কবি অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন ― ” এই মাটিতেই শুয়ে পড়বো এবার, ঘন নিমগাছের ছায়ায়―
স্রোতহারা সরস্বতীর তীরে!
আমার আর কোথাও যাবার নেই, কিচ্ছু করার নেই! “
আমাকে অবাক করেছে কবি জয়দীপ লাহিড়ীর ‘ইচ্ছের উপন্যাস’।
কবি পার্থ দে’র “আসলে সব ব্যথাতুর তিল, জন্মদাগ … ” লাইনটি অনেক ভাবিয়েছে।
কবি ঋজুরেখ চক্রবর্তী লিখেছেন ― ” সরে যায় পূতপদছাপসহ চিরায়ত অকর্ষিত ভূমি,/ … ” ;
” বিষাদ ছুঁয়েছে যাকে,/ তাকে আর সর্বনাশ ভাঙে না কখনও”
কবি নির্মাল্য সেনগুপ্ত লিখেছেন ― ” ধরে নিন ফিরে যাব, ফিরতে হবেই বলে, / কথা দিয়েছিল অভিসারী “
কবি তন্ময় দে লিখেছেন ― ” আমার প্রগলভতা তোমাকে বিব্রত করে!
কবি শুভ্রজিৎ বিশ্বাস লিখেছেন ― ” দাপটে চালিয়েছি রাজ্যপাট
যে কবিতা অনন্তকাল আলোর হদিস দেয় সেইসব কবিতার সমন্বয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে বইটি। তাই যথার্থই তার নাম ” স্বপ্নের দালান অনন্তবীথি আলো”
তাইতো কবি রাজা ভট্টাচার্য বলেছেন ― ” মায়া… ভালো থেকো, হে আমার স্বপ্নের দালান।”
[ বইটি সংগ্রহ করা যাবে অনলাইন মার্কেট প্লেস- Amazon , Boichoi থেকে ]