প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার
প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

“পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর,

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর” 

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

১. ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ (১৮২৮-১৮৫৮):

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

১৮২৮ সালে বারাণসীতে জন্মগ্রহণ করেন। ঝাঁসির রাজা গঙ্গাধর রাওয়ের সাথে বিবাহ হয়। গঙ্গাধরের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকার স্বত্ব অস্বীকার করে লর্ড ডালহৌসি ঝাঁসি দখল করতে উদ্যত হন এবং অধিকার করেন। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সময় লক্ষীবাঈ সিপাহী সৈন্যদের সাথে ঝাঁসি উদ্ধারের শপথ নিয়ে অস্ত্র ধারণ করেন। বীরাঙ্গনা লক্ষীবাঈ যুদ্ধসজ্জায় সজ্জিত হয়ে তরবারি হাতে ঘোড়ার পিঠে আসীন হন, এবং রণচন্ডী রূপ ধারণ করে হুঙ্কার ছাড়েন, ‘মেরি ঝাঁসি দেঙ্গে নেহি!’

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

২. অ্যানি বেসান্ত (১৮৪৭-১৯৩৩):

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই ইংরেজ নারীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভারতবর্ষে এসে তিনি কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং ১৯১৭-র শেষের দিকে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। হোমরুল আন্দোলনে তাঁর উল্লেখযোগ্য যোগদান ছিল। ১৯৩৩ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি ভারতের স্বাধীনতা এবং থিওজফির প্রচার চালিয়ে যান।

৩. দুকড়িবালা দেবী:

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নারী বিপ্লবী। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম দিকের নারী বিপ্লবীদের মধ্যে অন্যতম। ব্রিটিশ শাসক দ্বারা তিনিই প্রথম সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত নারী ছিলেন। । বীরভূমে নিজের বাড়িতে রডা কোম্পানীর ৭টি পিস্তল আর একবাক্স কার্তুজ লুকিয়ে রাখার অভিযোগে দুই বছরের জন্য কারাবরণ করেছিলেন।

৪. হাওড়ার ননীবালা দেবী:

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

এই মহিলা ছিলেন ব্রিটিশ উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনের এক সক্রিয় বিপ্লবী। ইনি যুগান্তর দলের হয়ে কাজ করতেন। সাহসী, ধৈর্যশীল, বুদ্ধিমতী ননীবালা ছিলেন প্রথম রাজবন্দি। দীর্ঘ জেলজীবনে অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করেছেন। এগারো বছর বয়সে বিবাহ হয়, ষোলো বছর বয়সে বিধবা হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপরই স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন। 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিপদসঙ্কুল সময়ে তিনি ভ্রাতুষ্পুত্র অমরেন্দ্র চ্যাটার্জীর কাছে বিপ্লবে দীক্ষা নেন। একসময় পলাতক অমর চ্যাটার্জী এবং তার কয়েকজন সহকর্মীকে রিষড়ার বাড়িতে আশ্রয় দেন।  পুলিশী তল্লাশীতে অমর চ্যাটার্জী পালাতে পারলেও রামচন্দ্র মজুমদার ধরা পড়েন। গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ায় লুকিয়ে রাখা এক ‘মাউজার’ পিস্তলের কথা কাউকে জানিয়ে যেতে পারেননি। সেইসময় বিধবা ননীবালা রামচন্দ্রের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে দেখা করে পিস্তলের হদিশ জেনে আসেন। তৎকালীন কট্টরবাদী সমাজব্যবস্থায় একজন বিধবার সিঁথেয় সিঁদুর লাগিয়ে এই কাজ নির্ভীক এবং সবল মানসিকতার পরিচয় বহন করে।

৫. মাদাম ভিকাজী রোস্তম কামা (১৮৬১-১৯৩৬):

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

ইনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা বিপ্লবী আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এই বিদেশিনীকে ভারতের বিপ্লববাদের জননী বলা হয়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সামিল হওয়ার পাশে পাশে তিনি ইংল্যান্ডে ‘বন্দেমাতরম’ পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। দাদাভাই নওরোজির ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। ভারতবর্ষে থাকার সময় হোমরুল আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটিশ সরকার তাঁর এই কার্যকলাপ ভালো চোখে দেখেননি। দেশে ফিরতে চাইলে তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা চাওয়া হয়। তাঁকে বলা হয়, অনুমতি পেতে হলে তাঁকে লিখিতভাবে জানাতে হবে যে তিনি কোনোভাবেই ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এই মহিয়সী নারী মুচলেকা দিতে অস্বীকার করেন।

৬. মাতঙ্গিনী হাজরা (১৮৭০-১৯৪২):

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের এক মহিলা মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। মহাত্মাজীর ছত্রছায়ায় অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ব্যক্তিগতভাবে অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন। মাত্র আঠারো বছর বয়সে বিধবা হন। এরপর মহাত্মাজীর সংস্পর্শে এসে দেশমাতাকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করাই তাঁর জীবনের পরম ব্রত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কংগ্রেস কর্মী হিসেবে কাজ করার জন্য বেশ কয়েকবার জেল খাটতে হয়েছে। ১৯৪২ সালে ‘আগস্ট আন্দোলন’ চলাকালীন মেদিনীপুরের কাঁথিতে জাতীয় পতাকা হাতে একটা বিরাট মিছিলে নেতৃত্ব দেন। সেইসময় কাঁথি থানার কাছে পুলিশ গুলি চালাতে শুরু করে। প্রথম গুলি খেয়ে জাতীয় পতাকা ভুমিস্থ হতে দেননি। অবশেষে ব্রিটিশের পোষা পুলিশ তাঁকে লক্ষ্য করে আরেকটা গুলি ছোঁড়ে। দ্বিতীয় গুলির আঘাতে এই বীরাঙ্গনা নারী জাতীয় পতাকা হাতে ‘বন্দেমাতরম’ মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতে দেশমাতৃকার কোলে লুটিয়ে পড়েন।

৭.সরোজিনী নাইডু (১৮৭৯-১৯৪৯):

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

এই বাঙালি মহিলা বিয়ের আগে ছিলেন সরোজিনী চট্টোপাধ্যায়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে প্রথম সারির নেত্রী ছিলেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘উইমেন্স ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন’, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল আরও বেশি সংখ্যক ভারতীয় মহিলাদের বিপ্লবের কাজে সামিল করা। কংগ্রেসের প্রথম বার্ষিক সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। 

সরোজিনী নাইডু ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক সক্রিয় যোদ্ধা। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ডান্ডি অভিযানে সামিল হন। গান্ধীজি, আব্বাস তয়েব ও কস্তুরবা গান্ধী গ্রেপ্তার হলে তিনি ধারাসন সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন। তিনি একাধারে ছিলেন স্বাধীনতা কর্মী, অন্যদিকে বিশিষ্ট বাগ্মী এবং ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি। তাঁকে ‘নাইটিঙ্গেল অব ইন্ডিয়া’ বলা হত। স্বাধীন ভারতে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল পদও অলংকৃত করেছিলেন।

৮. হেমলতা মজুমদার (১৮৮৮-১৯৬২):

হেমলতা দেবীর স্বামী বসন্ত কুমার কুমিল্লা জেলার যুগান্তর পার্টি সংগঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্বামীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯২১ সালে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। পরবর্তীকালে কংগ্রেসের বিভিন্ন কর্মযজ্ঞে উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশমাতৃকার পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার চেষ্টা করেছেন।

৯. লাবণ্যপ্রভা দত্ত (১৮৮৮-১৯৭১):

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

এই অগ্নিকন্যা, জমিদার তনয়া ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী চরিত্রের ছিলেন। ব্রিটিশ গভর্মেন্টের ঔপনিবেশিকতাবাদের প্রতিবাদে ১৯০৬ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৩২ সালে লাবণ্যপ্রভা দেবী আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করেন। প্রথম জীবনে স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত ছেলেদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতেন। ১৯৩০ সালে কন্যা বিপ্লবী শোভারানী দত্তের সাথে ‘আনন্দমঠ’ নামের এক সামাজিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দেশসেবামূলক কর্মকান্ড এগিয়ে নিয়ে যান। ১৯৩৩ সালে নারী সত্যাগ্রহ কমিটি গঠন করেন। আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করে গ্রেপ্তার হন। 

১০. জ্যোতির্ময়ী গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৮৯-১৯৪৫): 

এই মহিলা ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজবাদী, শিক্ষাব্রতী, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কর্মী। পিতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন খ্যাতনামা সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক এবং ব্রাহ্মসমাজের পুরোধা। মা ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রথম মহিলা স্নাতক কাদম্বিনী দেবী। 

    জ্যোতির্ময়ী দেবী ১৯২০ সালে গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। জাতীয় কংগ্রেসে তিনিই প্রথম স্বেচ্ছাসেবিকা বাহিনী গঠন করেন এবং পরবর্তীতে বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল কংগ্রেস কমিটির সদস্যা হন। এরপর তিনি সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দেন এবং মহিলা সত্যাগ্রহ কমিটির সহসভানেত্রী নির্বাচিত হন। সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ১৯৩০ এবং ১৯৩২ সালে কারারুদ্ধ হন। এই মহিলা ১৯৩৩ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সারা জীবন বৈপ্লবিক কাজ থেকে কখনও সরে দাঁড়াননি। ১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার হন। 

“আমি নারী বলে আমাকে ভয় করো না, বিদ্যুৎশিখার হাত দিয়ে ইন্দ্র তার বজ্র পাঠিয়ে দেন।”–  রবীন্দ্রনাথ                                                                          

পৃথিবীর ইতিহাসে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন একটি বিশেষ পর্যায় বলে উল্লিখিত হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য বোমা-পিস্তল হাতে সশস্ত্র আন্দোলনের পথে দলে দলে তরুণ-তরুণী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিংশ শতকের সূচনা পর্ব থেকেই বাংলার বুকে বিপ্লববাদের পদধ্বনি শোনা যেতে লাগল। একদম শুরুতে ভগিনী নিবেদিতা এবং সরলা দেবী চৌধুরানীর মত কয়েকজন মহিলার সাথে বিপ্লবীদের গোপন যোগাযোগ থাকলেও মহিলারা সক্রিয়ভাবে বৈপ্লবিক কাজে যোগদান করেন অনেকটা পরে। তবে অন্দরমহলের মা-বোনেরা পলাতক বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন, আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখতে সাহায্য করতেন, গোপন চিঠিপত্র বা বন্দুক-পিস্তল একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করতেন। পরবর্তীতে বিপ্লবের খোলা অঙ্গনে এসে পুরুষের সঙ্গী হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বহু নারী বিপ্লবে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন লীলা নাগ, শোভারানী দত্ত, কল্পনা দত্ত, লক্ষী সায়গল, কল্যাণী দত্ত, অরুনা আসফ আলী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ।

১১. লীলা নাগ (১৯০০-১৯৭০)

বিংশ শতকে ভারতের জাতীয় আন্দোলনে নারীজাতির জাগরণ এবং অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিপ্লবী নারী সংগঠন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল, লীলা রায় ওরফে লীলা নাগ প্রতিষ্ঠিত ‘দীপালি সংঘ’ ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। এই সংঘটি ১৯২৩ সালে অধুনা বাংলাদেশের ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 

মহিলা পরিচালিত এই সংঘ যে সমস্ত কার্যকলাপের উপর বেশি নজর দিত সেগুলি হল:

ক) ভারতীয় নারীদের শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে আধুনিক ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করতে মেয়েদের জন্য স্কুল স্থাপন।

খ) বিপ্লবী আন্দোলনের জন্য নারীদের প্রশিক্ষিত করতে লাঠিখেলা শেখানো, শরীরচর্চা ও অস্ত্রচালন শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

গ) নারীদের মধ্যে বৈপ্লবিক আদর্শ সঞ্চারের জন্য মানসিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, ইত্যাদি।

   ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দীপালি সংঘের শাখা সংগঠন ‘দীপালি ছাত্রী সংঘ’ কলকাতা এবং ঢাকার ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এটিই ছিল ভারতের প্রথম ছাত্রী সংগঠন।

১২. শোভারানী দত্ত (১৯০৬-১৯৫১):

পাঞ্জাব কেশরী লালা লাজপত রায়ের সান্নিধ্যে এসে বিপ্লবের দীক্ষা পান। ১৯৩০ সালে মা লাবণ্যপ্রভা দেবীর সাথে একযোগে কলকাতায় আনন্দমঠ প্রতিষ্ঠা করেন। পলাতক বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন এবং নানাভাবে সাহায্য করতেন। ১৯৩৪ সালের ৮ই মে দার্জিলিংয়ে লেবং রেসকোর্সের মাঠে তদানীন্তন গভর্নর অ্যান্ডারসনের উপর বিপ্লবী হামলায় অন্যতম সদস্যা উজ্জ্বলা মজুমদার কলকাতায় পালিয়ে এসে শোভারানীর বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। আঠারোই মে দুজনেই ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।

১৩. কল্যাণী দাস (১৯০৭-১৯৮৩):

কল্যাণী দাস ছিলেন পরাধীন ভারতীয় উপনিবেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ সৈনিক এবং অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী। ছাত্রজীবনে রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন এবং যুগান্তর দলের সাথে যুক্ত হন। ছোটবেলায় বাবার মুখে বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের গল্প শুনতেন, এবং সেইসব মানুষের স্বার্থত্যাগ আর আদর্শ তাঁকে উদ্বুদ্ধ করত। কলকাতার স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে ‘ছাত্রী সংঘ’ গঠন করেন। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার থেকে শুরু করে বীনা দাস, কল্পনা দত্ত, সুহাসিনী গাঙ্গুলী, ইলা সেন, সুলতা কর, কমল দাশগুপ্ত প্রমুখ পরবর্তী দিনের রাজনৈতিক কর্মীগণ এই ছাত্রী সংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। 

যুগান্তর দলের বিশিষ্ট কর্মী দিনেশ মজুমদার ছাত্রী সংঘের মেয়েদের লাঠি আর ছোরা খেলা শেখাতেন। পরে দুর্ভাগ্যবশত তাঁর ফাঁসি হয়ে যাওয়ায় সেই প্রশিক্ষণ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ছাত্রী সংঘের পক্ষ থেকে পাঠচক্র চালানো, সাঁতার, সাইকেল চড়া, ফার্স্ট এইড শিক্ষণের ব্যবস্থা আগের মতোই জারি ছিল। আইন অমান্য আন্দোলনেও কল্যাণী দাস সামিল হন। দিনেশ মজুমদার এবং অন্যান্য পলাতকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা, বে-আইনি আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে ইত্যাদি আরও অনেক দায়িত্বপূর্ণ কাজে কল্যাণী দাসের সাথে আরও অনেক মহিলা অংশগ্রহণ করতেন।

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

১৪. অরুনা আসফ আলি (১৯০৯-১৯৯৬):

গান্ধীজির অন্যতম অনুরাগী অরুনা আসফ আলী লবন সত্যাগ্রহে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কংগ্রেসের প্রথম সারির নেত্রী এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের অন্যতম মুখ। ১৯৩২ সালে তিহার জেলে বন্দি থাকার সময় জেলের ভিতর বন্দীদের সঠিক চিকিৎসার দাবি জানিয়ে অনশন শুরু করেন। তাঁর জেদ এবং অধ্যবসায়ের কাছে ব্রিটিশশক্তি বাধ্য হয় দাবি মেনে নিতে। স্বাধীনতার পর এই বিদুষী মহিলা সমাজসেবায় জীবন উৎসর্গ করেন। তাঁর একনিষ্ঠ কর্ম ও সাধনার জন্য বহু সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত সরকার তাঁকে নেহরু পুরস্কারে সম্মানিত করে। ১৯৬৪ সালে তিনি লেনিন শান্তি পুরস্কার পান। একসময় দিল্লীর মেয়র পদে অভিষিক্ত হন। তিনিই ছিলেন দিল্লির প্রথম মহিলা মেয়র। ১৯৯১ সালে পুনরায় আন্তঃরাষ্ট্রীয় বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরু পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন, এবং ১৯৯৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ‘ভারতরত্নে’ ভূষিত হন।

১৫. বীনা দাস (১৯১১-১৯৮৬): 

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

বীনা দাস ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্রের শিক্ষক বেণীমাধব দাসের কন্যা। মায়ের নাম সরলা দেবী। তিনি কল্যাণী দাসের বিপ্লবী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রথম জীবনে সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামে সবচেয়ে বড় অংশগ্রহণ হল তদানীন্তন বাংলার গভর্ণর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করা। জ্যাকসনকে হত্যার জন্য গুলি ছুঁড়লেও সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিনি ধরা পড়ে যান, এবং গ্রেপ্তার হন। বিচারে নয় বছরের কারাদন্ড হয়। ১৯৩৯ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন এবং আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন ভৌমিককে বিয়ে করেন। এরপর ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয় যোগদানের অপরাধে আবার কারাদন্ড হয়। ১৯৪৫ সালে মুক্তি পেয়ে নিজেকে পুনরায় স্বাধীনতা আন্দোলনের কাজে নিয়োজিত করেন। এই বীনা দাসই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা কলকাতা ঘুরে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ওষুধ সংগ্রহ করে পৌঁছে দিতেন যশোর সীমান্তের নেতাজি ফিল্ড হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিজের হাতে সেবাও করতেন। 

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

১৬. প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (১৯১১-১৯৩২):

ইনি ছিলেন বিপ্লবী মাষ্টারদা সূর্য সেনের অন্যতম সহযোগী। ১৯৩০ সালে সূর্য সেনের সহকারী হিসাবে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন অন্যতম নারী বিপ্লবী এবং প্রথম নারী শহীদ। দীপালি সংঘের একজন একনিষ্ঠ সদস্যা ছিলেন। ১৯৩২ সালে সূর্য সেনের নির্দেশে একদল বিপ্লবী নিয়ে পাহাড়তলী ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন। এই ক্লাবের বাইরে স্পষ্টভাবে লেখা থাকতো ‘কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশাধিকার নেই।’ এই অভিযানে অসফল হলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন প্রীতিলতা। ধরা পড়ার পর ব্রিটিশ পুলিশদের হাতে অত্যাচারিত হওয়ার পরিবর্তে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করা শ্রেয় মনে করেছিলেন। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার মতে দেশের জন্য প্রীতিলতার এই আত্মোৎসর্গ পরবর্তীতে বহু তরুণ-তরুণীকে নিঃশর্তে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল। 

১৭. কল্পনা দত্ত (১৯১৩-১৯৯৫):

এই বিপ্লবী কন্যা সূর্য সেনের বিপ্লবী সংগঠন ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সদস্য ছিলেন। একটা এনকাউন্টারে অন্যান্য বিপ্লবীদের পালানোর সুযোগ করে দিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কলকাতা থেকে বিস্ফোরক নিয়ে চট্টগ্রামে আসেন এবং পরবর্তীতে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সঙ্গে ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অভিযানের এক সপ্তাহ আগে ধরা পড়ে যান এবং বন্দী হন। জেল থেকে বেরিয়ে আবার বৈপ্লবিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। সমুদ্রতীরবর্তী বৈরালা গ্রামে পুলিশের সাথে সশস্ত্র সংঘর্ষে সূর্য সেন ধরা পড়লেন, পুলিশের চোখ এড়িয়ে কল্পনা দত্ত পালিয়ে যান। তিনমাস পর তিনি ধরা পড়েন এবং বিচারে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৯৩৯ সালে জেল থেকে বেরিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান। কমিউনিস্ট নেতা পি.সি.জোশীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাঁর লেখা ‘চট্টগ্রাম অভ্যুত্থান’ গ্রন্থটি ভারতের স্বাধীনতা ইতিহাসের এক প্রামাণ্য দলিল। ১৯৯৫

সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র মনে করতেন দেশের মুক্তি সংগ্রামে পুরুষের সাথে নারীদের সার্থক যোগদান খুব জরুরি। ইতিহাস খুঁজলে দেখা যাবে তাঁর নেতৃত্ব এবং ছত্রছায়ায় বহু নারী দেশমাতার সেবায় নিজেদের সমর্পণ করেছেন। তাঁর বিখ্যাত ‘আজাদ হিন্দ বাহিনী’-তে ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে একটি নারী বিভাগ খোলেন, নাম দেন ‘ঝাঁসির রানী বাহিনী’। এই বিভাগের প্রধান করে নিয়ে এলেন মাদ্রাজের সদ্য পাশ করা ডাক্তার লক্ষী সায়গল তথা লক্ষী স্বামীনাথনকে।

১৮. ডা. লক্ষী স্বামীনাথন (১৯১৪-২০১২)

প্রবন্ধ: স্বাধীনতা ও নারী | ড. গৌতম সরকার

আজাদ হিন্দ বাহিনীর পাঁচটি ব্রিগেডের অন্যতম ছিল ঝাঁসির রানী ব্রিগেড। এটি ছিল এশিয়ার প্রথম নারী বাহিনী। সিঙ্গাপুরে কর্মরত ডক্টর লক্ষী স্বামীনাথন ওরফে লক্ষী সায়গল নেতাজীর ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ পরিত্যাগ করে ঝাঁসির বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। বাহিনীতে তিনি পরিচিত হন ক্যাপ্টেন লক্ষী নামে। নানা ধর্ম ও প্রদেশের প্রায় ১৫০০ মেয়ে এই বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৪৩ সালের অক্টোবর মাসে এই বাহিনীর সামরিক ট্রেনিং শুরু হয়। ১৯৪৪ সালে জাপানি সেনাবাহিনী ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করলে আজাদ হিন্দ ফৌজও ব্রহ্মদেশের দিকে আস্তে আস্তে এগোতে থাকে। তবে মিত্রশক্তির চাপে জাপানি সৈন্য পিছু হটতে শুরু করলে আজাদ হিন্দ ফৌজ শক্তিহীন হয়ে পড়ে। ক্যাপ্টেন লক্ষী ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ সেনার হাতে ধরা পড়ে কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন। কিন্তু ভারতীয় জনতার চাপে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯. কনকলতা বড়ুয়া (১৯২৪-১৯৪২): 

স্বাধীনতা সংগ্রামের এই নীরব কর্মীর কথা খুব বেশি আলোচিত হয়না। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন। কলকাতার বিভিন্ন অফিসে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করার অভিপ্রায়ে কনকলতা একটি ছোট দল নিয়ে অভিযান করেছিলেন। সেটিই ছিল তাঁর শেষ অভিযান। নির্দয়, অমানবিক ব্রিটিশ পুলিশের গুলির আঘাতে মহান কর্ম অসমাপ্ত রেখেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।

২০. প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম (১৯১৪-১৯৩৭):

ঢাকা জেলার কুমিল্লা বাসী এই মহিলা অতি অল্পবয়সেই পরাধীন ভারতবর্ষকে শৃঙ্খলমুক্ত করার আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন তখন দুই সহপাঠী শান্তি ঘোষ এবং সুনীতি চৌধুরীকে বিপ্লববাদের পথ দেখান। পরবর্তীকালে ম্যাজিস্ট্রেট স্টিভেন্সকে গুলি করার অপরাধে শান্তি-সুনীতির কারাদণ্ড হয়। পুলিশ পরে প্রফুলনলিনীকেও গ্রেফতার করেন। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাঁকে ডেটিনিউ হিসেবে জেলে এবং বন্দীনিবাসে রেখে দেয়। জেলে থাকতে থাকতেই তিনি আই.এ এবং বি.এ পাশ করেন। পরবর্তীতে কুমিল্লা শহরে অন্তরীণ থাকাকালে রোগাক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় অগ্নিযুগের এই নারী বিপ্লবী প্রাণত্যাগ করেন।

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা পুরুষদের সমতুল্য তো বটেই, তাঁদের ঐকান্তিক অবদানকে একটু এগিয়ে রাখলেও অত্যুক্তি হবে না। তারা একাধারে অন্দরে থেকে বিপ্লবীদের সাহস, শক্তি, অর্থ, সহায়তা যুগিয়ে গেছে, আবার প্রয়োজনে বাহিরে বেরিয়ে রণরঙ্গিনী ভূমিকায় ব্রিটিশ দুর্বৃত্তদের সাথে চোখে চোখ রেখে লড়াই চালিয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি ব্যাপ্তিতে সীমিত হলেও নারী প্রতিবাদের তীব্রতায় ব্রিটিশ সরকারও সময়ে সময়ে কেঁপে উঠেছে। এটা আমাদের চরম লজ্জা একবিংশ শতাব্দীতেও নারীর সমানাধিকার নিয়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম হয়, মহিলাদের রাস্তায় বেরিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াইয়ে সামিল হতে হয়। আমরা ভুলে গেছি আজ আমরা যে স্বাধীনতা ভোগ করছি তার পিছনে কত নারীর ত্যাগ ও আত্মবলিদানের গল্প লুকিয়ে আছে।

“সেদিন সুদূর নয়-

 যেদিন ধরণী পুরুষের সাথে গাহিবে

 নারীরও জয়!”- কাজী নজরুল ইসলাম

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
হেমন্তের দুটি কবিতা

হেমন্তের দুটি কবিতা

সন্তোষ কুমার শীল   হেমন্ত প্রভাত আমার নিকানো উঠোনে শিউলী ফুল শিশির- সিক্ত স্নিগ্ধ নয়নে চেয়ে এল যে লগ্ন ,বেজেছে বিদায় সুর হেমন্ত এল কুহেলীর ...
চ

চ ‘চুপি চুপ বলো কেউ জেনে যাবে’ এই গানটি নিঃসন্দেহে জীবনে একবার হলেও শুনেছেন? না শুনে থাকলেও ক্ষতি নেই বৈকি। তবে আসুন এবার জানাই ‘চ’ ...
এই তো জীবন | গোলাম কবির  

এই তো জীবন | গোলাম কবির  

| গোলাম কবির     যেমন কখনো নীল সাদা আবার কখনো ঘনকৃষ্ণ কিংবা ছাইরঙের মেঘে ঢেকে থাকে বাহারি আকাশ, জীবনও তেমনি কখনো আনন্দে, বেদনায়, কখনো গভীর ...

নগ্নগন্ধ [পর্ব-০৭]

আশিক মাহমুদ রিয়াদ গত পর্বের পর থেকে। গত পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন। সুদীপা আমি  আর এ কাজ করতে চাই না! বিষন্য গলায় বলে প্রীতি। ...
আইসিসি টি ২০ বিশ্বকাপের চুড়ান্ত সময়সূচী ২০২৪

আইসিসি টি ২০ বিশ্বকাপের চুড়ান্ত সময়সূচী ২০২৪

স্পোর্টস ম্যানিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪,২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,টি ২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ সময়সূচি,বিশ্বকাপ ২০২৪,টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ এর সময়সূচি,টি বিশ্বকাপ ২০২৪ সময়সূচি,টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,বিশ্বকাপের খবর,টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ 2022,টি-২০ বিশ্বকাপ,টি২০ ...
খুশির ঈদ এসেছে

খুশির ঈদ এসেছে

সাবিরুল সেখ ত্রিশ দিনের রোজার শেষে খুশির ঈদ এসেছে, ধরার বুকে ফোয়ারার মতো আনন্দে সব হেসে উঠেছে। রমজানের ঐ পরে দেখো সওয়ালের চাঁদ উঁকি দিয়েছে, ...
Scroll to Top