মায়া

মায়া

I সাদিয়া ইসলাম

 

দুরন্তপনা মেয়েটি-
ফিরছিলো বাড়ির মেঠো পথ ধরে!
আকাশ ছিলো তরুণ সন্ন্যাসীর মতন অটল।
সে কখনো চিন্তা করে নি সেদিনটাই ছিলো তার মুক্ত গোধূলিবেলাকে শেষবারের মতো দেখা?
সে কখনো ভাবেনি জোছনার আলো নিঁভে গিয়ে নেমে আসবে হঠাৎ অমাবস্যার অন্ধকার।

বোধ হলো কে যেনো তার পিছুপিছু আসছে?
ভয়ে গলা শুকিয়ে আসলো।
পিছনে তাকাতেই-
মায়ার চোখে নেমে এলো অন্ধকার।
হাত পা হলো বাঁধা?
অবচেতন মনে বুঝতে বাকি রইলো না কিছুই,
সে চোখের পলকেই হয়ে গেলো ধর্ষিতা!

ঘন্টাখানেক পরে কে যেনো তাকে কোলে তুলে বাড়ি পৌঁছে যায়!
মায়ার বাড়িতে আনাগুনা শুরু হলো হাজারো মানুষের।
মুখ লুকিয়ে ঘরের কোনে পরে থাকা,
শুরু হলো ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষা?
ফরেনসিক রিপোর্ট আরো কতো কি!
সাংবাদিকের হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় লেন্সের সামনে উড়না ডাকা মুখে।
পুলিশের ইনভেস্টিগেশন ।
কবিরাও লিখতে শুরু করলো প্রতিবাদী কবিতা।

পাশের বাড়ির আন্টির অকথ্য কথা।
পাড়ার লোকেদের যেন আগ্রহের শেষ থাকে না সেদিনের অনুভূতি সম্পর্কে জানার জন্যে!
মায়ের হাহাকার,
ভাইবোনের নিরব কান্না
আর বাবার থানায় দৌড়াদৌড়ি?
আত্মীয় স্বজনের তাচ্ছিল্য যেনো আরো যন্ত্রণাদায়ক।

কাছের বন্ধুটি লুকিয়ে দেখা করলো বাড়ির পিছনে –
বন্ধুর মুখে নেই কোন বুলি!
নিরবতা শেষে যাওয়ার সময় বললো-
মা বলেছে এটো মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক না রাখতে!
তখন মনে হলে একটা বিধবা মেয়ের চেয়ে হীনমন্যতার শিকার একটা ধর্ষিতা মেয়ে?
শেষ ভরসাটুকুও ভেঙে গেলো,
বেঁচে থাকার আশা ফুরিয়ে গেলো নিমিষেই!

হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েও মাথায় যেনো একটাই প্রশ্ন –
আমার কাজ কি শুধু তুচ্ছ স্তন, নিতম্ব আর যোনি পথ পাহারা দেওয়া?
কান্নায় ভিজে যায় পড়নের উড়নাটা।
মুহূর্তেই তার আরো একটা বিষয় মাথায় দিলো হানা –
সাংবাদিক, ডাক্তার, পুলিশ, কবি আর মহল্লাবাসী পাবে নতুন বিষয়বস্তুর সন্ধান
যদি মারা যায় এই নব ধর্ষিতা?
আবিষ্কার হবে নতুন কিছু,
সময় ফুরিয়ে গেলে মুছে যাবে মায়া নামক ধর্ষিতার কাহিনি!

সংবাদপত্রে ছাপা হবে নতুন কোনো এক ধর্ষিতার নাম?
স্মৃতির জরায়ু থেকে সে নিজেকে মুছে ফেলতে চাইলো, মুছে যাবে এই তিক্ত অভিজ্ঞতার স্মৃতি,
ভাবতে ভাবতে খেয়ে নিলো স্লিপিং পিল মুঠো ভরে।
মুছে গেলে মায়ার অধ্যায়
হয়তো আসবে নতুন কোন মায়ার ধর্ষণের কাহিনি।
এই ভাবে কি পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে ধর্ষিতা হাজারো মায়া নামক চরিত্র?

 

অলংকরণ- হুমায়রা বিনতে শাহরিয়ার। 

“বিনা অনুমতিতে এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে ফেসবুক কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশ করেন, এবং সেই লেখা নিজের বলে চালিয়ে দেন তাহলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে
ছাইলিপি ম্যাগাজিন।”

সম্পর্কিত বিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
‘হোম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’-স্মৃতিচারণে অমর্ত্য

‘হোম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’-স্মৃতিচারণে অমর্ত্য

ড. গৌতম সরকার ‘অমর্ত্য’ নামটি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া। শৈশবের কিছুটা সময় কেটেছে শান্তিনিকেতনের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অসংখ্য গুণী মানুষের সান্নিধ্যে। বাবা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ...
All Your Burning Technology Questions, Answered

All Your Burning Technology Questions, Answered

Cursus iaculis etiam in In nullam donec sem sed consequat scelerisque nibh amet, massa egestas risus, gravida vel amet, imperdiet volutpat rutrum sociis quis velit, ...
এক পুজোর বিকেল

এক পুজোর বিকেল

অনঞ্জন সেটা ছিল এক পুজোর বিকেল, ছোট্ট চারবছরের মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গালি দিচ্ছিল পথচলতি মানুষকে, ভিক্ষা না-পেয়ে ও এখনও জানেনা ভিক্ষা ওর কোন মৌলিক অধিকার ...
15 Shocking Elon Musk Tweets About Stock Market

15 Shocking Elon Musk Tweets About Stock Market

Cursus iaculis etiam in In nullam donec sem sed consequat scelerisque nibh amet, massa egestas risus, gravida vel amet, imperdiet volutpat rutrum sociis quis velit, ...
ভালোবাসার দ্বিতীয় প্রহর [পর্ব-০৪]

ভালোবাসার দ্বিতীয় প্রহর [পর্ব-০৪]

পার্থসারথি সৈকত স্নান শেষে তোয়ালেতে মাথা মুছতে মুছতে রুমে প্রবেশ করে। রুমের ভেতর কয়েক কদম ফেলতেই হঠাৎ চোখ পড়ে পারমিতা ও রুচিরার ওপর। সৈকত আর্শ্চয ...
সম্ভোগ

সম্ভোগ

আশিক মাহমুদ রিয়াদ একটি বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা, নভেম্বরের বৃষ্টি ঝড়ছে আকাশ থেকে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত শীত ঠেসে পড়া বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ লোকজন মারা গিয়েছে।মফস্বল শহরের ...