Uncategorizedকবিতাপ্রথম পাতাসর্বশেষসাপ্তাহিক সংখ্যা

নৈশভোজ | দীর্ঘ কবিতা | সাপ্তাহিক স্রোত

I প্রিয় রহমান আতাউর 

 

অঘ্রানের শীতে-

রাতের আহারশেষে আরাম কেদারায় বসে – ঘামতে থাকেন কবি।

সামান্যই খেয়েছিলেন কাকরোল ভাজি ও বাঁশমতি চালের ভাত – সাথে তালের ক্ষীর ও দইবড়া।

বোধহয় হজম হয়নি ওসব-

এম্নিতেই ক’দিন থেকে প্রচণ্ড দাঁতের ব্যথা!

তথাপি একটু তামাকু সেবন না করলে কি হয়?

 

গেলো সপ্তায় খেয়েছিলেন বালিহাঁসের ভুনা মাংস

তন্দুর রুটি দিয়ে – এখনো মুখে লেগে আছে।

আকাশের নীহারিকাপুঞ্জ কী দীপ্তিময়!

আঁধার ঘিরে জ্বলজ্বল করে জ্যোতির্ময় সপ্তর্ষিমণ্ডল।

গভীর অমাবস্যার রাতে – কখনো বা যান

শ্মশানে। দেখেন, কী হিংস্র ভাগাড়ের শকুনগুলো!

যেতে হয়- তাড়া খেতে হয় নিশাচর শেয়ালের!

একটি ঘাসফড়িংয়ের মৃত্যু দেখেও কেঁদে উঠেন তিনি! পাতিহাঁসের পাখার চেয়েও কত হাল্কা,

কত ঠুনকো এ জীবন!

তাঁর নিকষিত রচনাবলি -পাঠকপ্রিয়তা পায়-

সে কি এম্নি এম্নি?

 

কখনোবা স্টেশনের প্লাটফর্মে ভিখেরির মতো রাত

জেগে জেগে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হন।

একবার বমি করেছিলেন গঞ্জিকা সেবন করে ;

পঁচা গোবরের মতো গন্ধে ভেতরটা কেমোন গুলিয়ে

আসে তাঁর!

 

জীবনানন্দ দাশ শেষ জীবনে দালালি করেছেন

কাছারি অফিসে । ধুঁকে ধুঁকে মরেছেন

স্বভাব কবি গোবিন্দ দাস!

পার্সি বিশে শেলি’র হয়েছে সমুদ্র সমাধি;

সে হিসেবে অনেক ভালো আছেন তিনি

বেশ তো চলে যাচ্ছে দুমুঠো খেয়ে, পরে।

 

কবি হতে গেলে কখনো কখনো নাবিক হতে হয়

জাহাজের, খালাসী হতে হয় নৌবন্দরে। কখনোবা ভবঘুরে হয়ে- ভিক্ষে করতে হয় ফুটপাতে;

পৃথিবীর সবাই কি আর কবি!

পকেট মারের অভিজ্ঞতাটা না নেয়াই ভাল;

এতে জীবনের ঝুঁকি আছে!

কথায় আছে- ‘যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ!’

পছন্দ নয়- নোংরা গণিকালয়। জীবনেও ওপথ মাড়াননি তিনি!

 

হিমশীতল রাতে নামে বাবুইয়ের ঝাঁক আখক্ষেতে,

কী নরম তুলতুলে মাংস বাবুইয়ের!

বহুকাল খাওয়া হয়নি তাঁর – বড় আফসোস!

আর ঐ হলিবিলের বেগুনরঙা পানকৌড়িগুলো!

নৈশভোজে যদি পাখির মাংসই না থাকে –

সেটাকে কী আর আহার বলা চলে?

 

আচমকা, হঠাৎ শিরদাঁড়ায় ব্যথা উঠে তাঁর-

অসহ্য বেদনায় ঢলে পড়েন চেয়ার থেকে মাটিতে-

টেবিলে পাণ্ডুলিপি ঠাসা-

বেরোবে নতুন বই, কতই না ছিলো আশা!

 

 

গোপালপুর, জামালপুর।

এই লেখাটি শেয়ার করুন
ছাইলিপির ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

ছাইলিপির কথা

লেখালিখি ও সৃজনশীল সাহিত্য রচনার চেষ্টা খুবই সহজাত এবং আবেগের দুর্নিবার আকর্ষণ নিজের গভীরে কাজ করে। পাশাপাশি সম্পাদনা ও প্রকাশনার জন্য বিশেষ তাগিদে অনুভব করি। সেই প্রেরণায় ছাইলিপির সম্পাদনার কাজে মনোনিবেশ এবং ছাইলিপির পথচলা। ছাইলিপিতে লিখেছেন, লিখছেন অনেকেই। তাদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই ওয়েবসাইটের প্রতিটি লেখা মূল্যবান। সেই মূল্যবান লেখাকে সংরক্ষণ করতে লেখকদের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। কোন লেখার মধ্যে বানান বিভ্রাট থাকলে সেটির জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। ছাইলিপি সম্পর্কিত যে কোন ধরনের মতামত, সমালোচনা জানাতে পারেন আমাদেরকে । ছাইলিপির সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ছাইলিপির নতুন সংযোজন ছাইলিপির ইউটিউব চ্যানেল Chailipi Magazine। সাবস্ক্রাইব করার আহ্বান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করা থেকে বিরত থাকুন ! বিশেষ প্রয়োজনে ইমেইল করুন [email protected]