সিনেমার নাম- কাঠবিড়ালি
পরিচালক- নিয়ামুল মুক্তা
শ্রেষ্ঠাংশে–অর্চিতা স্পর্শিয়া,আসাদুজ্জামান আবীর ,সাইদ জামান শাওন ,শিল্পী সরকার অপু ,
একে আজাদ সেতু ,শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব,হিন্দোল রায়,তানজিনা রহমান তাসনিম
সিনেমা পর্যালোচনা লিখেছেন- আবির জয়
নিয়ামুল মুক্তা’র গল্প ও পরিচালনায় এবং চিলেকোঠা ফিল্মস প্রযোজিত ২০১৯ সালের ২৭ডিসেম্বর প্রথম একটি থিয়েটারে মুক্তি পায় ‘কাঠবিড়ালী’ চলচ্চিত্রটি।এরপর পরবর্তীতে ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে দেশের আরো ১৮টি সিনেমাহলে মুক্তি পায়।তখন থেকেই বেশ সাড়া পায় চলচ্চিত্রটি।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন আসাদুজ্জামান আবীর(হাসু),অর্চিতা স্পর্শিয়া(কাজল),সাঈদ জামান শাওন(আনিস),শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব(আজগর) ছাড়াও আরো অনেকে।
গল্পের প্রধান চরিত্র হাসু।হাসু গ্রামের সহজ সরল সাধারণ একজন যুবক।বাবা-মা আত্মীয় স্বজন কেউ নেই।শুধু বাবা-মার রেখে যাওয়া যৎসামান্য জমিজমা ভিটেমাটিই তার সম্পত্তি।
তার একান্ত বলতে অতীব সুন্দরী প্রেমিকা কাজল আর বন্ধু আনিস।
আনিস তার বাল্যবন্ধু।সে বিবাহিত হলেও দাম্পত্য জীবনে অসুখী।
হাসু তার প্রেমিকাকে প্রচন্ডরকম ভালোবাসে কিন্তু এদিকে তার প্রেমিকার উপর চোখ পড়ে লম্পট আজগরের।আজগর গ্রামের চেয়ারম্যানের ছেলে।কিছুদিন আগেই সে একটা মেয়ের সাথে প্রেমের প্রণয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে এবং বিয়ের চাপ দিলে সে মেয়টিকে হত্যা করে ফেলে।যদিও চেয়ারম্যান কৌশলে তার ছেলেকে পুলিশি মামলা থেকে রক্ষা করেন তবুও পুনরায় তার নজর পড়ে কাজলের উপর।তবে সে কাজলকে বিয়ে করবে বলে ঠিক করে একথা তার বাবাকে জানালে সে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান কারণ মেয়ের পরিবার নিম্নবিত্ত।পরবর্তীতে সে ছেলের জেদ রক্ষার্থে দেশের বাইরে পাঠান নির্বাচনের ছুঁতোয় এবং বলেন ফিরে আসলে কাজলের সাথে বিয়ে দিবে কিন্তু এখন না।আজগর বিদেশ চলে গেল।
এদিকে হাসু আর কাজলের প্রেম ইতি হয়ে বিয়ে অব্দি গড়াল।তাদের বিয়ে হয়ে গেল।
হাসু তার এত সুন্দর বৌকে পেয়ে মহা খুশি হলেও বৌ কিন্তু খুশি নয়।হাসু তার স্ত্রী’র চাহিদা মেটাতে অক্ষম।
এদিকে তার বন্ধু আনিস এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে।কাজলের উদ্ধত যৌবন আনিসের পুরুষত্বকে প্রলোভিত করে।
সে ছলেবলে কাজলের চাহিদার সুযোগের হিসেব বুঝে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
এদিকে হাসু আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য শহরে একটি ইট ভাটায় কাজ নেয়।এদিকে কাজল বাড়িতে একা এবং তার নিত্য রাতের চাহিদার সঙ্গী আনিস।
একসময় আনিসের দুশ্চরিত্রতা ও ধূর্ততা কাজলের সামনে প্রকাশ পেয়ে যায় যে সে যৌবনের তাড়নায় আরো মেয়ের সাথে শারীরিকভাবে জড়িত।ভেঙে যায় আনিস আর কাজলের পরকীয়ার সম্পর্ক।কাজল আনিসকে হুমকিও দেয় যে গ্রামে শালিসি ডাকবে এবং আনিসের বিরুদ্ধে দুশ্চরিত্রের অভিযোগ টানবে।
এদিকে আজগর বিদেশ থেকে ফিরে এসে শোনে কাজলের বিয়ে হয়ে গেছে হাসুর সঙ্গে।আজগরের পাগলামি শুরু।সে বাড়ি এসে কাজলকে এটা-ওটা বলে হুমকিও দিয়ে যায়।
পরদিন সকালে কাজলের মৃত্যু।চুলোয় অর্ধেক রান্না ভাত আর ঘরে ফাঁসিতে ঝুলানো তার লাশ।
কে মেরেছে কাজলকে আনিস নাকি আজগর?নাকি কাজল আত্মহত্যা করল?
জানতে মুভিটি অবশ্যই দেখার আহ্বান রইলো।তরুণ প্রজন্ম আমরা বলিউড-হলিউডের প্রতি ঝুঁকে যাচ্ছি আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের ব্যর্থতার জন্য।সেই ব্যর্থতার প্লাটফর্মে আমি মনে করি এসব চলচ্চিত্র আমাদের বাংলা সিনেমা ও সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করবে।আশা করি মুভিটি দেখবেন।
লেখাঃ আবীর জয়।
মুভি ও লেখার প্রতি অনুপ্রেরণা জ্ঞাতার্থেঃ হুমায়রা বিনতে শাহরিয়ার।